mudud ahamed

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ আগস্ট ২০১৫: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে বাড়ি সংক্রান্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার বিচারিক কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ কার্যকর হবে।রোববার সকালে মওদুদ আহমদের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ।একইসঙ্গে এ সময়ের মধ্যে অভিযোগ আমলে নেয়া বৈধ বলে দেয়া হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে তাকে আপিল করতে বলা হয়েছে।আদালতে আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার মওদুদ নিজেই শুনানি করেন।

গত ২৩ জুন মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়া প্রশ্নে রুল খারিজ করে দিয়ে বিচারিক আদালতে অভিযোগ আমলে নেয়া বৈধ বলে আদেশ দেন বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন মওদুদ আহমদ।ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কামরুল ইসলাম মোল্লার আদালতে মওদুদ আহমদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাড়ি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। গত বছরের ১৪ জুন অভিযোগ আমলে নেন আদালত। এ আদেশের বিরুদ্ধে মওদুদ আহমদ রিভিশন করলে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২৩ জুন রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।আগামী ৩০ আগস্ট মামলাটির অভিযোগ (চার্জ) গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল বিচারিক আদালতে।মওদুদের ভাই মনজুর আহমদ পলাতক থাকায় আগেই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন।

এ মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে বৈধতা দিয়ে হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তার বিরুদ্ধেই আপিলে এসেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। আদালতে নিজের আবেদনের পক্ষে নিজেই শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।আদেশের পর খুরশীদ আলম খান ক বলেন, ৩০ অগাস্ট বিষয়টি আবার আপিল বিভাগে উঠবে।অবৈধভাবে বাড়ি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে দুদক এই মামলা দায়ের করে।

গতবছর ২৬ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ওই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ আদালতের বিচারক শুনানি শেষে অভিযোগপত্র আমলে নেন।অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের যে বাড়িটিতে মওদুদ আহমদ ও তার পরিবার থাকছেন, তার প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির কাছ থেকে এই বাড়ির মালিকানা এহসান ‘লাভ করেন’।১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের পাশাপাশি তার স্ত্রী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এহসান স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়।

এরপর ১৯৭৩ সালের ২ অগাস্ট মওদুদ তার ইংল্যান্ডপ্রবাসী ভাই মনজুরের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন বলে এ মামলার অভিযোগ।মওদুদ অভিযোগ আমলে নেওয়ার আদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে ফৌজদারি রিভিশন আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত ৫ মে হাই কোর্ট রুল দেয়।রুলে বিচারিক আদালতের ওই আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না- তা ১০ দিনের মধ্যে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে জানাতে বলা হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আদালত ২৩ জুন রায়ের দিন ধার্য করে।ওইদিন হাই কোর্ট আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দিলে মওদুদ আহমদ চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন নিয়ে যান। এরপর বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।