feny

দৈনিকবার্তা-ফেনী, ২১ আগস্ট: প্রবল বর্ষন ও ভারতীয় ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ী ঢলের পানির চাপে ফেনীর মুহুরী নদী, কহুয়া নদী ও সিলোনীয়া নদীর বেড়ি বাঁধে নতুন করে ১০টি স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বেড়ি বাঁধের আগের ৮টি স্থলসহ মোট সহ ১৮টি অংশ দিয়ে বন্যার পানি প্রবল বেগে গ্রামে ঢুকতে শুরু করেছে। এতে উপজেলা সদরের ফুলগাজী বাজারসহ অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পরশুরাম ও ফুলগাজীতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপদসীমার ২৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এনিয়ে গত এক মাসে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দেয়।

গত ২৫ জুলাই মুহুরী নদীর বেড়ি বাঁধের ফুলগাজী অংশে ৮টি স্থানে ভাঙ্গনের ফলে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, পরশুরামের সুবার বাজার এলাকায় মুহুরী নদী ও সিলোনীয়া নদীর বেড়ি বাঁধের ১০টি অংশে গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে পৌর এলাকার সলিয়া, গুথুমা. বেড়াবাড়ীয়া এছাড়া ও মির্জানগর ইউনিয়নের সিলোনিয়া নদীর বেড়ী বাধ ভাঙ্গনের কারনে ইউনিয়নের প্রায় ১০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সুবার বাজারের একাংশ, উত্তর মনিপুর. মধ্যম মনিপুর, গদানগর,কালিকৃষ্ন নগর, পুর্বসাহেব নগর এছাড়া কহুয়া নদীর শালধর নামক স্থানে বেড়ী বাধ ভাঙ্গার কারনে শালধর বাজার সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া বিলোনিয়া, বাউরপাথর বাউরখুমা গ্রামের আশ্রয়নসহ প্রায় ১০ টি মাছের ঘের বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল এর ৫ টি মাছের ঘের বন্যার পানিতে তালিয়ে যায় এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে মেয়রের সহকারী জানান। এসব এলাকার গ্রামীন সড়ক সমুহ তলীয়ে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, বীজতলা ও রোপা আমন তলীয়ে গেছে ফুলগাজী বাজার প্রায় দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলীয়ে গেছে। সব দোকানপাটে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া কিসমত ঘনিয়া মোড়া, জয়পুর,পূর্বঘনিয়া মোড়া, পশ্চিম ঘনিয়া মোড়া, সাহাপাড়া, বৈরাগপুর,বরইয়া, দক্ষিন দৌলতপুর, উত্তর দৌলতপুর, পেচিবাড়িয়া,কহুমা গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।

ফুলগাজী ও পরশুরামের বন্যা কবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন ফেনীর ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আবু দাউদ মোঃ গোলাম মোস্তফা, পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম, পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল, পরশুরাম পৌরসভার মেয়র এর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রান সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম জানান, তিনটি নদীর প্রায় ১০ টি স্থানে বেড়ী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তিনি জানান প্রাথমিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারন সম্ভব না হলেও ধারনা করা হয়েছে মৎস্য খামার সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান সলিয়া গ্রামের ৫টি বসত ঘর তলিয়ে গেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রমজান আলী প্রামানিক জানান, অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গতকাল শুক্রবার মহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপদসীমার ২৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ত্রিপুরার পানির চাপ কমলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।