দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ আগস্ট ২০১৫: ব্লগার অভিজিৎ রায় ও অনন্ত দাশ বিজয় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী এবং অর্থযোগানদাতাসহ গ্রেফতার তিনজনকে ৭দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এই তিন আসামি হলেন- মো. তৌহিদুর রহমান (৫৮), সাদেক আলী মিঠু (২৮) ও আমিনুল মল্লিক (৩৫)। এদের মধ্যে তৌহিদুর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক, যাকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী বলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।বুধবার দুপুরে শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এই তিন সদস্যকে ঢাকা সিএমএম আদালতে হাজির করে ১০দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান।পরে শুনানি শেষে এই দুই হত্যাকাণ্ডে অর্থের যোগানদাতা তৌহিদুর রহমান এবং পরিকল্পনাকারী সাদেক আলী ও আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এ সময় তৌহিদুর রহমানের আইনজীবী এ এল এম কামাল উদ্দিন হাফেজ রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন চান।তিনি বলেন, তার মক্কেলকে গত ২৮ মে আটক করা হলেও এতোদিন আদালতে তোলা হয়নি। তৌহিদ একজন বৃটিশ নাগরিক এবং মানসিক ভারসাম্যহীন বলে তিনি দাবি করেন।তিনি রাস্তায় লোকজনকে নামাজ পড়ার জন্য বা ধর্মীয় কাজে অংশগ্রহণের জন্য দাওয়াত দেন। তিনি কোনো হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন। তার দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার বিষয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছিল।এ সময় বিচারক বলেন, যদি দীর্ঘদিন আটক থাকার এই ঘটনার সত্যতা থাকে, তবে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আপনি সাক্ষী থাকবেন।পরে তৌহিদুরের আইনজীবী এ বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করেন এবং তার বক্তব্য থেকে সরে আসেন।বাকি দুই আসামি আদালতকে বলেন, তাদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। গণমাধ্যমের সামনে বলার জন্য তাদের কথা শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল।রিমান্ডের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আবদুল্লাহ আবু ।
র্যাবের দাবি, গত ফেব্র“য়ারিতে ঢাকায় একুশে বই মেলায় ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডে মোট পাঁচ জনের একটি দল অংশ নিয়েছিল এবং আড়াই মাস পর তারাই সিলেটে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাসকে হত্যা করে।তিন আনসারুল্লাহ সদস্যকে বুধবার হাকিম আদালতে হাজির করে অভিজিৎ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয় গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে।তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. ফজলুর রহমান রিমান্ডের আবেদনে বলেন, হত্যাকাণ্ডে আর কারা অংশ নিয়েছিল, কাদের ইন্ধনে ও অর্থায়নে এ অপরাধ ঘটেছে তা জানতে এবং হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের জন্য তিন আসমিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।সোমবার দিনগত রাতে রাজধানীর নীলক্ষেত ও ধানমণ্ডি থেকে তাদের আটক করে র্যাব।র্যাব জানায়, এই তিনজনই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য।