দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৩ আগস্ট: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশে চলমান গুম, খুন, মামলা, হামলা, দখলের রাজনীতি বন্ধ, জনগণের মৌলিক মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক সঙ্কট মুক্তি আজ সময়ের দাবি। ২০ দল মনে করে, জনগণের নির্বাচিত এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকারই শুধু তা নিশ্চিত করতে পারে। সে কারণেই নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চায় ২০ দল। বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে বর্তমান সরকার ষড়ৃযন্ত্র করছে ও অস্ত্র দিয়ে সরকার বিরোধী জোটের আন্দোলনকে দমন করতে চায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, অপেক্ষা করুন, জনগণ অস্ত্র ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে,অস্ত্র ও সন্ত্রাস পরাজিত হবে জনগণ বিজয়ী হবে । বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষে এসব অভিযোগ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সংবাদ সম্মেলনে দেশবাসীকে সরকারের সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকারও আহ্বান জানানো হয়। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ২০ দলীয় জোট জাতীয় নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
একই সঙ্গে সরকারের নানা চেষ্টা সত্ত্বেও ২০ দলের ঐক্য অটুট কেউ ভাঙতে পারবে না বলেও দৃঢ় প্রত্যায় করে ‘‘ জোট ভাঙতে সরকার নানা চক্রান্ত করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘ গত প্রহসনের নিবার্চনেও শত চেষ্টা করেও সরকার জোটের কোনো দলকে নিতে পারেনি এবং জোটের কোনো ব্যক্তিকেও তারা নিবার্চনে আনতে পারেনি। অর্থাৎ ২০ দলের ঐক্য অটুট আছে, অক্ষুন্ন আছে, শক্তিশালী আছে এবং আগামীতেও থাকবে । সরকার জুজুর ভয় দেখাচ্ছে অভিযোগ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ দেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল অতীতের মতো এখনও জুজুর ভয় দেখিয়ে মুক্ত বিশ্বের সহানুভুতি আকৃষ্টের লক্ষে কাজ করছে। সেজন্য গুম, খুন, শিশু হত্যা, নারী নিযার্তন, ব্লগার খুনের মতো ঘটনা নিবিঘ্নে বেড়ে চলেছে।
শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশকে জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর সরকারি চক্রান্ত সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ থাকার এবং তা প্রতিহত করার জন্য ২০ দল আহবান জানাচ্ছে।’’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের বিষয়াবলী জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। দীর্ঘ সাড়ে ৯ মাস পর বুধবার রাতে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়।
বর্তমান সংকট নিরসনে সুষ্ঠু নিবার্চনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ ২০ দল মনে করে জনগনের নিবার্চিত ও জনগনের কাছে দায়বদ্ধ সরকারই শুধু দেশে চলমান গুম,খুন, মামলা, হামলা ও দখলের রাজনীতি বন্ধ, জনগনের মৌলিক অধিকার ও অর্থণৈতিক সংকটের অবসান করতে পারে। এজন্য আমরা ২০ দল একটি নিবার্চিত সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের অংশগ্রহনের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নিবার্চন চায়। দেশের জনগন এই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আছে।’’ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করতে গিয়ে যারা মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি হয়েছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবির পাশাপাশি আন্দোলনে নিহত-আহত আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২০ দল বলেছে, ‘‘ ভবিষ্যতে এই বীর সেনানীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে।’’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ অভিহিত করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ গুম,খুন, সন্ত্রাস, দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষজনকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার বানিজ্য ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। শিশু হত্যা ও নারী নিযার্তন এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে মনেই হয়না- আমরা কোনো সভ্য দেশে বসবসা করছি এবং দেশে কোনো সরকার আছে।’’ ‘‘একের পর এক ব্রগার হত্যার ঘটনা ঘটছে। দেশের কোনো নাগরিকই আজ নিরাপদ নন। এমনকি মায়ের পেটেও শিশুও নয়। অথচ সরকারের দাবি দেশের মানুষ নাকী শান্তিতে আছে।’’
হিন্দু সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘূদের সম্পত্তি দখল, আর্থিক ব্যাংকে অর্থ লুট, দুর্নীতিসহ নানা কর্মকান্ডে সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেন নজরুল।‘‘ সর্বগ্রাসী দুর্নীতি আজ দেশকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দিয়েছে। সম্প্রতি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু কর্তৃক সরকারি বেসিক ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় পত্রিকায় প্রকাশের পর জনগন বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। তারা জানতে চায় কে এই শেখ আব্দুল হাই ?
কার প্রশ্রয়ের তিনি নির্বিবাদে দীর্ঘদিন ধরে লুটপাট চালাতে পারলেন। এর আগে শেয়ার বাজার ও রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকগুলো যারা লুটপাট করেছে- তাদেরও বিচার হয়নি। এজন্যই তারাও সরকারি দল ও জোটের নেতা-কর্মী এবং সরকারের মদদেই এসব লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।’’ওইসব লুটপাটের ঘটনা সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছে ২০ দল। সারাদেশে বন্যায় সরকারি ত্রানের অপ্রতুলতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে দুর্গতদের পযাপ্ত ত্রান সামগ্রি প্রদান ও তাদের পূর্ণবাসনের দাবিও জানান নজরুল।
আন্দোলনের কথা বলছে, অন্যদিকে আপনাদের কর্মসূচি নেই, সংবাদ সম্মেলনে সীমাব্ধ- এরকম প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘‘ আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে চাই। যখনই আমরা কোনো সভা-সমাবেশ কিংবা মিছিল অথবা মানববন্ধনের মতো নিরহ কর্মসূচি পালন করতে চাই, তখন আমাদের লড়তে হয় অস্ত্রধারী সরকারি বাহিনী কিংবা অন্ত্রধারী সরকারি দলের লোকদের। এটা যদি আমরা চালিয়ে যেতে চাই তাহলে আমাদের সংঘর্ষ করতে হবে। কিন্তু আমরা হত্যা, সন্ত্রাস ও সংঘর্ষের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। ফলে আমাদেরকে বার বার জনগনের কাছে আসতে হচ্ছে আপনাদের মাধ্যমেই জানাতে হচ্ছে।’’
‘‘ জনগন নিজেরাও দেখছে, তাদের দাবি আদায়ের জন্য আমরা সংগ্রাম করছি। কিন্তু আমাদের রাস্তায় নামতে দেয়া হচ্ছে না। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের রাস্তায় নামতে দেয়া হচ্ছে না বা পারছি না তাতে জনগন যতটুকু আমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট তার চেয়ে বেশি অসুন্তুষ্ট হচ্ছে এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে।’’ লন্ডনে চিকিৎসার জন্য কবে খালেদা জিয়া যাবেন জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ এটা বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসার একটা বিষয়। তিনি কখন যাবেন, এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। আমি কিছু বলতে পারবো না।’’
সংবাদ বিফ্রিঙে অন্যান্যের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমিমুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি মুহাম্মদ ফয়েজুল্লাহ, জাগপা‘র খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপি‘র শাহাদাত হোসেন সেলিম, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ডিএল সাইফুদ্দিন মনি, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, কল্যাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তের উলামা ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির বাবু রামকৃষ্ণ সাহা, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ ভাসানী গোলাম মোস্তফা।
এছাড়া বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, প্রেস উইংয়ের সদস্য সামুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খানও ছিলেন। গতকাল বুধবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ২০ দলীয় জোটের বেঠক অনুষ্ঠিত হয়। বেঠকে আলোচ্য বিষয়ের বর্ণনা দিতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
দৈনিকবার্তা পাঠকদের জন্য পুরো বক্তব্যে তুলে ধরা হল:
২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে আয়োজিত এই প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য আপনাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ। গতরাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ২০ দলীয় জোটের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সকল শরিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় অনুষ্ঠিত আলোচনার প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক কিছু বিষয়ে ২০ দলের অবস্থান ও বক্তব্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।
সভার শুরুতেই গণতন্ত্র পূণ:প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ২০ দলীয় জোটের যে সব নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানানো হয়। যারা সরকারি বিভিন্ন বাহিনী কিম্বা সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে আহত ও পঙ্গু হয়েছেন- তাঁদের সুচিকিৎসা এবং মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ ও হয়রানীর শিকার সহকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়। সভায় মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্র পুণ:রুদ্ধার আন্দোলনের এই সব বীর সেনানীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
প্রিয় সাংবদিক বন্ধুগণ,
আপনাদেরই সবার চেয়ে বেশী জানার কথা যে দেশ আজ কি ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। গুম, খুন, সন্ত্রাস, দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনগণকে হয়রানী, গ্রেফতার বাণিজ্য ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।
শিশু হত্যা ও নারী নির্যাতন এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে মনেই হয় না যে আমরা কোন সভ্য দেশে বাস করছি এবং দেশে কোন সরকার আছে। একের পর এক ব্লগার হত্যার ঘটনা ঘটছে। দেশের কোন নাগরিকই আজ নিরাপদ নয়। এমন কি মায়ের পেটে শিশুও নয়। অথচ সরকারের দাবী দেশের মানুষ নাকি শান্তিতে আছে। ২০ দল নারী নির্যাতন ও শিশু হত্যাসহ সব হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানাচ্ছে।
সর্বগ্রাসী দুর্নীতি আজ দেশকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দিয়েছে। সম্প্রতি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু কর্তৃক সরকারি বেসিক ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা পত্রিকায় পড়ে জনগণ বিষ্মিত ও ক্ষুব্ধ। তারা জানতে চায় কে এই শেখ আব্দুল হাই এবং কার প্রশ্রয়ে তিনি নির্বিবাদে দীর্ঘ দিন ধরে লুটপাট চালাতে পারলেন। এর আগে শেয়ার বাজার এবং রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংক গুলো যারা লুট করেছে,তাদেরও বিচার হয়নি এজন্যই যে তারাও সরকারি দল- জোটের নেতা-কর্মী এবং সরকারের প্রত্যক্ষ মদদেই এসব লুট পাটের ঘটনা ঘটেছে। ২০ দল সব লুটপাটের বিচার চায় Ñ দোষীদের শাস্তি চায়।
সরকারি দলের লোকেরা সব কিছু দখল করে নিচ্ছে। খাল, বিল, নদী-নালা, হাট-বাজার, নৌ বন্দর, বাস টার্মিনাল এবং ব্যবসা বাণিজ্য দখলের পর এবার তারা দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, জমি ও ব্যবসা দখল করা শুরু করেছে। এই অপকর্মের মাত্রা এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে সরকারি দলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যক্তিরাও আজ প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, বিশিষ্ট চিকিৎসক প্রাণগোপাল দত্ত এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নেতা বাবু রানা দাসগুপ্ত তাদের অন্যতম। হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন এই সর্বগ্রাসী দখল প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার। ২০ দল সরকারি দলের সব কিছু গিলে খাওয়ার রাজনীতি বন্ধের দাবী জানাচ্ছে।
বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলে থাকতেও এদেশকে জঙ্গী রাষ্ট্র হিসাবে প্রমাণ ও প্রচারের অপচেষ্টা চালিয়ে ছিল। এখনও সেই জুজুর ভয় দেখিয়ে তারা মুক্ত বিশ্বের সহানুভ‚তি আকৃষ্টের লক্ষ্যে কাজ করছে। আর সে জন্যই গুম, খুন, শিশু হত্যা, নারী নির্যাতন, ব্লগার খুনের মত ঘটনা নির্বিঘে বেড়ে চলেছে। দায়ীরা গ্রেফতার হচ্ছে না। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীসহ কোন হত্যারই বিচার হচ্ছে না। সরকারি বাহিনী কতৃক পেট্রোল বোমায় নীরিহ মানুষ মারার খবরও ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশকে জঙ্গী কিম্বা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর সরকারি চক্রান্ত সম্পর্কে সজাগ থাকার এবং তা প্রতিহত করার জন্য ২০ দল দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
দেশে চলমান গুম, খুন, মামলা, হামলা, দখলের রাজনীতি বন্ধ, জনগণের মৌলিক মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক সংকট মুক্তি আজ সময়ের দাবী। ২০ দল মনে করে যে, জনগণের নির্বাচিত এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকারই শুধু তা নিশ্চিত করতে পারে। আর সে কারণেই ২০ দল নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও সকালের অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্দিতামূলক নির্বাচন চায়। দেশের জনগণ এই দাবীতে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু সরকার সীমাহীন দমন-নিপীড়ন চালিয়ে জনগণের আকাক্সখাকে ব্যর্থ করে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। সারা বিশ্বে এমন কি আমাদের দেশের ইতিহাসও সাক্ষ্য দেয়, নির্যাতন-নিপীড়ন করে জনগণের ন্যয়সঙ্গত আকাক্সখা পূরনের আন্দোলন ব্যর্থ করা যায় না। সত্যিকারের গণতন্ত্র ও নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সফলতা তই শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
২০ দলীয় জোট হত্যা, বিদ্বেষ, প্রতিশোধ কিম্বা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেনা। লাখো শহীদের রক্তার্জিত ¯^াধীন বাংলাদেশের জনগণ শান্তি, সম্প্রীতি ও সুশৃংখল জীবন এবং অব্যহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি চায়। ২০ দল দল-মত নির্বিশেষে সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগীতায় জনগণের সেই আকাক্সখা সফল করতে চায়। সেই লক্ষ্যেই ২০ দল শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যহত রাখবে ইনশাআল্লাহ।
সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
দেশের বিরাট অংশ আজ বন্যা দূর্গত। অসহায় এই বন্যা দুর্গত জনগণ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রীর অভাবে বিপন্ন জীবন যাপন করছে। এ ব্যাপারে সরকারী উদ্যোগ ও সহায়তা একেবারেই অপ্রতুল। ২০ দল অবিলম্বে বন্যা দুর্গত জনগণকে পর্যাপ্ত সাহায্য প্রদান এবং তাদের যথাযথ পুনর্বাসনের দাবী জানাচ্ছে। একই সাথে ২০ দল জোটের নেতা-কর্মীদের এবং দেশের সম্পন্ন জনগণকে বন্যাদুর্গত জনগণকে সহায়তা করার আহবান জানাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কর্মপরিষদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এম এম আমিনুল রহমান, বিজিপি সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব আবদুল মতিন সাঈদ, এনপিপির মহাসচিব মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব বাবু রহমান কৃষ্ণ সাহা, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাঈদ প্রমূখ।