দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১০ আগস্ট ২০১৫: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য কয়েক দিনের মধ্যে লন্ডন যাবেন। সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন এ কথা জানান।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাচ্ছেন। চলতি মাসের ১১,১২ বা ১৩ তারিখ তিনি রওনা হতে পারেন। এটি তাঁর চিকিৎসকের সাক্ষাতের সময়ের ওপর নির্ভর করছে। তিনি সেখানে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন থাকতে পারেন।আরেক প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলে লন্ডনে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে। যেহেতু খালেদা জিয়া একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, একটি বড় দলের প্রধান, তাই এ ধরনের সাক্ষাৎ অস্বাভাবিক কিছু নয়।লন্ডনে চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করছেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। এ বছর রমজানে সৌদি আরবে মা ও ছেলের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সে দেশে তাঁদের ওমরাহ পালনের কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়া ও তারেক সৌদি আরব যাননি। খালেদা জিয়া সেখানে দিন দশেক থাকতে পারেন বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান রিপন।উনার (খালেদা জিয়া) ডাক্তারকে দুই বার দেখাতে হবে। সেই হিসেবে সাপ্তাহখানেক অথবা সর্বোচ্চ ১০ দিন তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করবেন।খালেদা কোন সমস্যার জন্য চিকিৎসা নেবেন সে বিষয়ে রিপন কিছু না বললেও বিএনপির একাধিক নেতা এ প্রশ্নে চোখের চিকিৎসার কথা বলেছেন।বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা ইতোমধ্যে তার চোখের চিকিৎসার কথা বলে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার বিচারকের কাছে বিদেশে যাওয়ার অনুমতিও চেয়েছেন।
২০০৬ সালের শেষ দিকে ক্ষমতা ছাড়ার পর যুক্তরাজ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় সফর এটি। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফেরার আগে বড় ছেলে তারেককে দেখতে লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি।রিপন অভিযোগ করেন, এইচএসসির ফল খারাপ হওয়ায় সরকার বিএনপিকে দায়ী করার মতো ঠুনকো যুক্তি দিয়ে দলকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। তাঁর দাবি, বিরোধীদের জন্য নয়, শিক্ষাব্যবস্থায় নৈরাজ্যের কারণে এবার উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফল খারাপ হয়েছে।বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘চিকিৎসার জন্য’ দুই-একদিনের মধ্যে লন্ডনে যাচ্ছেন, যেখানে গত সাত বছর ধরে অবস্থান করছেন তার বড় ছেলে তারেক রহমান। বিএনপি নেতারা জানান, খালেদা জিয়া গতবছর ওমরাহ করতে সৌদি আরবে গেলে তারেকও লন্ডন থেকে সেখানে গিয়েছিলেন। এরপর আর মা- ছেলের দেখা হয়নি।ডজনখানেক মামলার পলাতক আসামি তারেক ২০০৮ সাল থেকে পরিবার নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট বৈধতা হারানোয় তিনি এখন শরণার্থী হিসেবে দেশটিতে অবস্থান করছেন বলে ঢাকা ও লন্ডনের বিভিন্ন সূত্রের খবর।
প্রতিবছরের মতো এবারও রোজার সময় ওমরাহ করতে সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু ওই সফর তিনি শেষ মুহূর্তে বাতিল করেন দলের শীর্ষ নেতাদের কারাগারে থাকার কথা বলে। সে সময় তারেকেরও সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন আসে। পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকলে তিনি কীভাবে সৌদি আরবে যেতে চেয়েছিলেন সে বিষয়টি বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে তখন স্পষ্ট হয়নি।যুক্তরাজ্য সফরে বিএনপি চেয়ারপারসন সে দেশের কোনো রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন কি না জানতে চাইলে সংবাদ ব্রিফিংয়ে রিপন বলেন, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনবার, দুই বার সংসদে বিরোধীদলের নেত্রী ছিলেন। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান তিনি। সুতরাং যে দেশে সফর করবেন, সেদেশের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাপার থাকে, সৌজন্য সাক্ষাতের ব্যাপার থাকে, থাকতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।