ফরিদপুর-400x1764

দৈনিকবার্তা-ফরিদপুর, ০৭ আগস্ট ২০১৫: বিদ্যুত দেওয়ার প্রাথমিক ধাপে ভালো ইলেক্ট্রিক সামগ্রী দেওয়া বাবদ টাকা নিয়ে নিন্মমানের ইলেকট্রিক সামগ্রী দেওয়ায় মেইন সুইচ ও সুইচ বোর্ড খুলে স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে গ্রামবাসী। গতকাল শুক্রবার (৭ আগস্ট) ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের কাইমুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে এ প্রতিবাদের ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে ঐ গ্রামের শতাধিক মেইন সুইচ ও বোর্ড খুলে রাস্তায় দাড়িয়ে যায় কয়েক শত এলাকাবাসী। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫ বছর প্রাতিক্ষার পর বিদ্যুৎ পেতে যাচ্ছিল তারা। তাই বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ইলেক্ট্রিক সামগ্রীর প্রয়োজন হলে সবাই মিলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রীকে মালামাল ক্রয়ের দায়িত্ব দিলে স্থানীয় আ’লীগের নেতা জালাল শেখ স্ব-ইচ্ছায় মিস্ত্রীর কাছ থেকে সে দায়িত্ব ভার নেয়। পরে আ’লীগ নেতা টাকা আত্মসাৎ করে সবার বাসায় নিন্ম মানের বিদ্যুৎ সরঞ্জাম ব্যবহার করলে গ্রামবাসী মেইন সুইচ ও বোর্ড খুরে রাস্তায় নেমে আসে।ঐ গ্রামের কৃষক মোঃ কবির বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় আ,লীগ নেতা জালাল শেখ ১৩৫ টি পরিবারের কাছ থেকে ২৭০০ করে টাকা নিয়ে নিন্ম মানের মালামাল সরবরাহ করায় আমরা এর প্রতিবাদ করছি। তা ছাড়া জালাল শেখ গত কয়েক বছরে দফায় দফায় বিভিন্ন পরিমান টাকা নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে প্রতারণা করেছে। ঐ গ্রামের কৃষাণী রওশনারা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ, স্বামী কামলা দিয়ে যে টাকা রোজগার করে তা দিয়ে আমরা দিন আনি দিন খাই। বহু অপেক্ষার পর গ্রামে বিদ্যুৎ আসবে জেনে চাল-আটা না কিনে খাওয়ার কষ্ট করেও বিদ্যুতের জন্য টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমরা এর বিচার চাই।

নিন্ম মানের ইলেকট্রিক সামগ্রী ব্যবহারে আতঙ্ক গ্রস্থ মমতাজ বেগম বলেন, আমাদের ঘর টিনের । এ ধরণের খারাপ মাল ব্যবহার করে ঘর বিদ্যুৎতায়িত হয়ে আমার ছোট ছেলে-মেয়ে মারা গেলে তার দায়ভার কে নিবে। আমরা ভালো মালামাল চাই। দিনমজুর মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, আমি টাকা দেওয়া দেরি হলে জালাল শেখ বলে সবাই টাকা দিয়ে দিয়েছে তুমি এখনো দেওনি তুমি বিদ্যুৎ পাবা না। তখন আমি উপায়ান্ত না পেয়ে দুইটা ছাগল বিক্রি করে টাকা দেই।গৃহবধু ফেলানী বলেন, আমার স্বামী নেই। ছেলে মেয়ের পড়ালেখার জন্য বিদ্যুৎ নিয়েছিলাম। কিন্তু নিন্ম মানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই বিদ্যুতের ভালো মালামাল চাই।স্থানীয় চায়ের দোকানদার শেখ মজিদ বলেন, আমরা গ্রামে মানুষ ভালো মন্দ তেমন কিছু বুুঝি না। শখ করে টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছি।এব্যাপারে এলাকাবাসীর অভিযোগে অভিযুক্ত জালাল শেখ বলেন, গ্রামবাসী ইলেকট্রিক সামগ্রী গুলো নিন্ম মানের বললে আমরা ও গুলো পাল্টে দিতে চেয়েছি। অতিশিঘ্রই পাল্টে দিব। যেখানে মেইন সুইচ ও বোর্ড ১২ শত টাকায় হয়ে যায় বলে গ্রামবাসী বলছে সেখানে আপনি ২৭ শত টাকা নিলেন কেন এমন প্রশ্ন করলে জালাল শেখ বলেন, যা নিয়েছি তার পুরো টাকাটাই পল্লী বিদ্যুতের পিছে খরচ হয়েছে।এব্যাপারে নর্থ-চ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান মোস্তাক বলেন, গ্রামবাসীর বিদ্যুৎ সংক্রান্ত অভিযোগটি আমার কাছে এসেছে। আমি সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলেছি এক সপ্তাহের মধ্যে এগুলোকে পরিবর্তন করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।