দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৭ আগস্ট ২০১৫: বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রত্যাশা অনুযায়ী নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। নৈতিক ভিত্তি দুর্বল হওয়ায় সরকার সীমান্ত হত্যা নিয়েও জোরালো প্রতিবাদ করতে পারছে না।শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তিনি।আসাদুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফের ডিজি পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সে বৈঠকে বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন না। সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এ বৈঠক চলাকালেই নওগাঁ সীমান্তে একজন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। আসাদুজ্জামানের দাবি, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। যে কারণে তাদের ভিত্তি দুর্বল। এ জন্যই তারা প্রতিবেশীর কাছে প্রতিবাদও জানাতে পারছে না।সরকারদলীয় সাংসদ কর্তৃক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ভূমি দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে আসাদুজ্জামান এ বিষয়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদকে ঝেড়ে কাশার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্যাতন ভোগ করে বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপি নয়; আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে হিন্দুদের সম্পত্তি জবরদখল হয়। মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ হিন্দু- বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সংখ্যালঘুদের বাড়ি দখলের যে অভিযোগ রয়েছে তা তদন্ত ও খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক একটি মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে’ ফেসবুকের এমন এক পোস্টের প্রসঙ্গে একমত পোষণ করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ভারতের মত ধর্ম নিরপেক্ষ দেশে যদি সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় থাকে তাহলে বাংলাদেশে কেন হতে পারে না। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত, সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা একটি মন্ত্রণালয় হওয়া উচিৎ এবং এটি যুক্তিযুক্ত। ফেলানীর বাবা চাইলে হত্যার বিচার আবারো শুরু হতে পারে’ ভারতের গণমাধ্যমে প্রচারিত এমন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ফেলানীর বিষয়ে যে রায় হয়েছে সে রায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি বলে ফেলানীর বাবা অভিযোগ করেছে। তাহলে ফেলানী হত্যার বিচার আবার কেন শুরু করা হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।বাংলাদেশ সীমান্তে প্রতিদিন ২২-২৫ নাগরিক হত্যার শিকার হচ্ছে। কিন্তু এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।রিপন বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো উচ্চ পর্যায়ে ও কার্যকর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে বাংলাদেশের জনগণের দাবিগুলো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে পারছে না। কারণ এই সরকার একটি অনির্বাচিত সরকার।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহিন প্রমুখ।