দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬ আগস্ট, ২০১৫: গত ০৫/০৮/২০১৫ তারিখ রাত ১২.১০ টায় রাজধানীর ধানমন্ডি থানা এলাকা থেকে কামরাঙ্গীর চরের চাঞ্চল্যকর নাসিমা হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতের নাম জুয়েল বিশ্বাস। উল্লেখ্য, গত ৩০/০৬/২০১৫ তারিখ কামরাঙ্গীরচর থানাধীন পশ্চিম রসুলপুরস্থ সড়ক নং-০১, বাড়ী নং-০৩, অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আনোয়ার হোসেনের বাড়ী এর বাসিন্দারা বিকাল অনুমান ১৬.০০ ঘটিকায় থানায় সংবাদ দেন যে, অত্র বাসার ৩য় তলার একটি কক্ষ হতে বিকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছে যা বাহির দিক থেকে তালাবদ্ধ আছে।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়িওয়ালা এবং স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে রুমের তালা ভেঙ্গে অজ্ঞাতনামা এক মহিলার মৃত দেহ মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পায় যার দুই হাত পিঁছন দিক থেকে বাঁধা। মৃত দেহটি পঁচে বিকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল।প্রাথমিক তদন্তে বাড়ির মালিক ও আশপাশের ভাড়াটিয়া লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মৃত অজ্ঞাতনামা মহিলা তার স্বামী ও আনুমানিক ৫/৬ বছর বয়সের ০১টি ছেলে সহ গত ২৬/০৬/২০১৫ খ্রিঃ সকালে উক্ত বাড়ির মালিকের স্ত্রী শাহিদা বেগমের সাথে ২০০০/-টাকা মাসিক ভাড়া ঠিক করিয়া অগ্রিম ৫০০/-টাকা প্রদান করে বাসায় উঠে। বাড়িওয়ালার স্ত্রী ভাড়া দেওয়ার সময় বর্ণিত ভাড়াটিয়ার নাম, ঠিকানা, পরিচয়পত্র, টেলিফোন নাম্বার অথবা কোন ধরণের পরিচয় না নিয়েই বাসা ভাড়া দেওয়া ভিকটিম বা হত্যাকারী কারোরই নাম পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এ ঘটনায় কামরাঙ্গীরচর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা রুজু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনার মূল আসামী জুয়েল বিশ্বাসকে রাজধানীতে ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামী জুয়েল জানায়, সে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান হিসাবে ভাড়া থেকে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করে থাকে। গত প্রায় ০৬ বছর পূর্বে ভিকটিম নাসিমা বেগম (২৫) পিতা-মোঃ আসলাম শেখ, সাং-শংকরপুর জমাদার পাড়া সড়ক (নতুন বাস স্ট্যান্ডের পাশে) থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর কে প্রেম করে বিয়ে করে। বিয়েরর ঘটনা জুয়েল তার পরিবারের নিকট গোপন রাখে।
স্ত্রী নাসিমাকে বিয়ের পর কখনই নিজ বাড়ীতে নেয় নাই। ভিকটিম নাসিমা তার বাবার বাড়ী যশোরই থাকত। আসামী জুয়েল তার প্রথম বিয়ে গোপন রেখে পরবর্তী সময়ে নিজ এলাকায় অন্য আরেকটি বিয়ে করতে গেলে ভিকটিম নাসিমার সাথে বিবেদের সৃষ্টি হয় এবং সে নাসিমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।
পরবর্তীতে ২৮/০৬/২০১৫ ইং তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ০১.৩০ ঘটিাকার সময় তাদের ছেলে দিপু ঘুমিয়ে পড়লে আসামী জুয়েল খেলার ছলে স্ত্রী নাসিমার দুই হাত বাধিয়া ফেলে এবং এক পর্যায়ে স্ত্রী নাসিমার গলা টিপিয়া হত্যা করে ছেলে দিপুকে নিয়ে রুমে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ এর নির্দেশনায় এডিসি লালবাগ সঞ্জিত কুমার রায়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার আর এম ফয়জুর রহমান ও তদন্তকারী অফিসার এসআই শাহজাহান কবির এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।