দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ আগস্ট, ২০১৫: আগামী ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত বলে আদালতকে জানিয়েছেন বার কাউন্সিল চেয়ারম্যান এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।এ তথ্য আদালতে পেশের পর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ আবেদনটির নিষ্পত্তি করে দেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এর আগে গত ৯ জুলাই বার কাউন্সিল নির্বাচনের সংশোধিত ভোটার তালিকা ৩০ জুলাই প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলো আপিল বিভাগ।গত ১৩ আগস্ট আইনজীবীদের পেশাগত বিষয়ের সর্বোচ্চ সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচনের দিন ধার্য ছিল। সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম নির্বাচন পেছানোর জন্য আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৯ জুলাই এক আদেশে আদালত আগামী ২৬ আগস্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানে দিন ধার্য করে।গত ২৫ মার্চ বার কাউন্সিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল, যাতে ভোটের দিন রাখা হয়েছিল ২০ মে। এরপর ৯ এপ্রিল ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়, যাতে ভোটার সংখ্যা দেখানো হয় ৪৮ হাজার ৪৬৫ জন। ওই তালিকায় অস্পষ্টতা ও একই নাম একাধিকবার থাকার কথা জানিয়ে বার কাউন্সিলের পাঁচজন নির্বাচিত সদস্য এবং ১০১ জন আইনজীবী আলাদাভাবে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিবকে চিঠি দেন। চিঠিতে তারা তালিকা ঠিক করতে বলেন। এরপর ১২ মে বার কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় নেয়া সিদ্ধান্তে নির্বাচন পিছিয়ে ২৭ মে তারিখ ঠিক করা হয়। ভোটার তালিকায় থাকা কিছু ত্রুটি হালনাগাদ করার জন্য সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।পরে পৃথক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বার কাউন্সিলের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে গত ২১ মে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। গত ১৭ মে এ সংক্রান্ত রিট আবেদন দায়ের করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ড. ইউনূস আলী আকন্দ।
আইনজীবী ড. ইউনূস আলী আকন্দ বুধবার জানান, বার কাউন্সিল নির্বাচনের ভোটার তালিকা ও ভোট পদ্ধতি নিয়ে রিট দায়ের করা হয়। শুনানি শেষে আদালত নির্বাচন ৩ মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দেয়। হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিতে ওইদিনই আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করেন বার কাউন্সিলের সচিব মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন। আদালত বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পুর্ণাঙ্গ বেঞ্চে প্রেরণ করে।আগামী ২৬ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে স্থাপিত ভোটকেন্দ্র, দেশের জেলা সদরের সকল দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভোটকেন্দ্র এবং দেশের ১২ উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি আদালত অঙ্গনের ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে ১৪টি সদস্য পদে নির্বাচনের জন্য চূড়ান্তভাবে ৬১ জন প্রার্থী রয়েছেন। ১৪ জন সদস্যের মধ্যে সারা দেশে সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের ভোটে সাধারণ আসনে ৭ জন এবং দেশের ৭টি অঞ্চলের লোকাল আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে ৭ জন নির্বাচিত হবেন। সাধারণ আসনে ৭ জন সদস্যের বিপরীতে ৩২ জন প্রার্থী এবং ৭টি অঞ্চলের লোকাল আইনজীবী সমিতির ৭টি সদস্য পদে মোট ২৯ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
৭টি অঞ্চল হলো- গ্রুপ-এ-সাবেক বৃহত্তর ঢাকা জেলার সকল আইনজীবী সমিতি এখানে ৪ জন প্রার্থী। গ্রুপ-বি-বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতি এখানে ৩ জন প্রার্থী। গ্রুপ-সি- বৃহত্তর চট্রগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতি-এখানে ৩জন প্রার্থী। গ্রুপ-ডি- বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতি- এখানে ৫ জন প্রার্থী। গ্র“প-এফ- বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতি-এখানে ৩ জন প্রার্থী। গ্র“প-এইচ- বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতি-এখানে ৪ জন প্রার্থী এবং গ্র“প-জি বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতি-এখানে ৭ জন প্রার্থী অংশ নিচেছন।প্রতি তিন বছর অন্তর বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বার কাউন্সিল ১৫ জন সদস্যের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে রাষ্ট্রের এটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। আর বাকী ১৪ জন আইনজীবীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। ১৪ জনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে একজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে থাকেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও সমমনা আইনজীবী সংগঠন সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং বিএনপি ও তাদের সমমনা আইনজীবীদের সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলসহ মোট ৪টি প্যানেল প্রার্থী দিয়েছে। এছাড়াও একক প্রার্থীরাও এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন