দৈনিকবার্তা-বগুড়া , ০৫ আগস্ট, ২০১৫: বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা। শহরের দত্ত বাড়ি এলাকায় বগুড়া ট্রেড সেন্টার নামের একটি বহুতল ভবনের সামনে শতশত মানুষের ভিড়। কৌতুহলি হয়ে গিয়ে দেখা গেল নিচ তলায় এনআরবি ব্যাংকের সামনে কেউ লাইনে দাঁড়িয়ে, আবার কেউ মেঝেতে বসে আছেন।অনেকে আবার দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে মেঝেতেই শুয়ে পড়েছেন। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলো মেঝেতে এভাবে শুয়ে আছেন কেন? এখানে কী? তারা জানালেন, অনিয়ম ছেড়ে তারা বিআরটিএ’র নিয়ম অনুযায়ী মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার ফি জমা দিতে এসেছেন ব্যাংকে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও তারা ফি জমা দিতে পারছেন না। এতে গত কয়েকদিন ধরেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।মেঝেতে বসে ও শুয়ে থাকা নামুজার সাইফুল ইসলাম, শরিফ হোসেন এবং মোকামতলার আব্দুল জব্বার জানালেন তারা ব্যাংকে এসেছেন মটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমা দিতে। মঙ্গলবারও তারা এসেছিলেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর ব্যাংক থেকে জানানো হয় দুপুর ২টার পর টাকা জমা নেয়া হবে না। এভাবেই প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের জন্য টাকা জমা দিতে আসা লোকজন।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী গত ১৫ জুলাই থেকে রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল আটক অভিযান শুরু হয়েছে। বগুড়া শহর ছাড়াও বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১২০০ মোটরসাইকেল আটক করেছে। এছাড়াও হাজার হাজার মোটরসাইকেল চালক রেজিস্ট্রেশন না থাকায় রাস্তায় বের করছেনা। ফলে অধিক সংখ্যক মানুষ একই সময়ে রেজিসেট্রশন করার জন্য প্রতিদিন বিআরটিএ অফিসে ভিড় করছে।এনবিআর ব্যাংক ছাড়াও সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংকে টাকা জমা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রতিটি ব্যাংকে গিয়ে একই চিত্র চোখে পড়ে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, অন্যান্য কাজের পাশাপাশি ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী তারা টাকা জমা নিচ্ছেন। ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার পর বিআরটিএ থেকে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে ২শ মোটর সাইকেলের রেজিসেট্রশন দেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার মটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে বগুড়া বিআরটিএ অফিস।বগুড়ার ট্রাফিক পরিদর্শক জানান, শহরে রেজিস্ট্রিশনবিহীন মোটরসাইকেল চলাচল নেই বললেই চলে। ১২০০ মোটরসাইকেল আটকের পর অন্যরা রেজিস্ট্রেশন করতে শুরু করেছে। তিনি আরও জানান, আটক মোটরসাইকেলগুলো রেজিস্ট্রেশনের জন্য ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার পর বিআরটিএ থেকে প্রত্যয়ন নিলেই তা দেখে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিআরটিএ বগুড়া অফিস জানায়, অধিক সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিতে আসায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই গ্রাহকদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে শিগগিরই বগুড়া ডিসি অফিস চত্বরে বিআরটিএ অফিসের নীচতলায় টাকা জমা নেয়ার বুথ চালু করা হবে।বিআরটিএ বগুড়া অফিসের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান জানান, রেজিস্ট্রেশন করার জন্য মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এ কারণে তাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। ব্যাংকে হয়রানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে বিষয়টি বিআরটি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। এ কারণে মানুষের ভোগান্তি কমাতে শিগগিরই বিআরটি অফিসে টাকা জমা নেয়ার বুথ করা হবে। সেখানে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টাকা জমা নেয়া হবে।’