দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ আগস্ট, ২০১৫: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগ করতে তুরস্কের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করেছে। তুরস্কের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করে এসব সুবিধার সুফল পেতে পারে।তুরস্কের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত হারসেইন মাফতুগুলু বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাত করতে গেলে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য আরো বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তুরস্কের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে জাহাজ নির্মাণ, ভারী যন্ত্রপাতি, নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, বস্ত্র, তৈরি পোশাক, পাটজাতপণ্য, পেট্রো কেমিক্যাল ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে।তিনি অভিন্ন ইতিহাস, বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যকার সৌহার্দপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ বন্ধনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। দু’দেশের মধ্যে ব্যাপকভিত্তিক সামরিক সহযোগিতায়ও সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিক খাতে তুরস্কের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সং¯’ার অব্যাহত সহযোগিতার প্রশংসা করেন।তিনি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সম্প্রসারণে ডি-৮ গ্র“পকে আরো জোরদারে গুরুত্বারোপ করেন।বৈঠকের শুরুতে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদত বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একই সঙ্গে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের নৃশংস হত্যাকা-ে গভীর শোক প্রকাশ করেন।এ প্রসঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৬৯ সালের ২৩ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভূষিত করার দিন তার (রাষ্ট্রদূত) জন্ম হয়েছিল।তিনি দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আগামীতে এই বন্ধন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরো সুসংহত হবে।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে তুরস্কের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তার দেশ সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি পরিবর্তনশীল দেশ এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।হারসেইন মাফতুগুলু বিশ্বে নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান।তিনি উন্নয়নশীল ৮ দেশের সমন্বয়ে গঠিত ডি-৮ গ্র“পে বাংলাদেশের ভূমিকাকে ইতিবাচক অভিহিত করে বলেন, সন্ত্রাস দমনে আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে এবং এই সম্পর্ক জোরদারের প্রয়াস চলছে।তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে তুরস্ককে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানান।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।