image_11343

দৈনিকবার্তা-পাইকগাছা, ০৪ আগস্ট ২০১৫: ভারী বর্ষণের পর এবার কপোতাক্ষের বাঁধ ভেঙ্গে নতুন করে আবারও খুলনার পাইকগাছায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে কয়েক হাজার বিঘার মৎস্যঘের। ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন ঘেরব্যবসায়ীরা। ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে লোকজন। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অপর দিকে জলাবদ্ধতা নিরসনেকপিলমুনির নাছিরপুর খালের আংশিক পাটা অপসারণ করা হয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরের জোয়ারে কপোতাক্ষের বাঁধ ভেঙ্গে উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নের কাঠিপাড়া, রাড়ুলী ও বগা গ্রামের প্রায় ১০/১১ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে কয়েক হাজার বিঘার মৎস্য ঘের। ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন দাশ জানিয়েছেন, গত ৩১ জুলাই রাতে কপোতাক্ষের বাঁধ ভেঙ্গে গেলে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত করা হয়। কিন্তু জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত রবিবার বাঁধের কিছুটা এবং সোমবার দুপুরের দিকে বাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়।

এতে তিনটি গ্রামের ৭শ’ পরিবারের প্রায় ১১ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়ে। স্থানীয় ঘের ব্যবসায়ী প্রভাষক হাছিবুর রহমান জানান, তার ১১শ’ বিঘার মৎস্য ঘের সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ডাঃ শংকর কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, কাঠিপাড়া ও খেরসা সংলগ্ন স্লুইচ গেটটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় গেটটি ভেঙ্গে গোটা রাড়ুলী ইউনিয়ন প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া মালোপাড়া, শ্রীকন্ঠপুরের কিছু অংশে পানি ঢুকে লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এর আগে গত শনিবার কপোতাক্ষের বাঁধ ভেঙ্গে হরিঢালী ও কপিলমুনির ইউনিয়নের কয়েক হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়ে। অপরদিকে গত প্রায় দেড় মাসের ভারীবর্ষণে উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের ২০ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। অসংখ্য কাঁচা ঘর-বাড়ি ধসে পড়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে শতশত ঘর-বাড়ি।

গড়ুইখালী ইউনিয়নের ৮-১০ কিলোমিটার রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। কাঁচা রাস্তা সম্পূর্ণ এবং পাকা রাস্তার ইটের হেজিং উঠে রাস্তা নষ্ঠ হয়ে গেছে। এদিকে সোমবার উপজেলার কপিলমুনির নাছিরপুর খালের নেট পাটা আংশিক অপসারণ করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, নেটপাটা তোলা হলেও নির্বাহী অফিসার চলে আসার পর তালতলা এলাকায় আবার পাটা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকার বাঁধ অপসারণ করাসহ অবৈধ নেটপাটা উত্তোলনের কাজ চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় নাছিরপুর খালের বড় বড় নেটপাটা উত্তোলন করা হয়েছে। আর ছোটখাটো গুলি এলাকাবাসীকে অপসারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।