fatullah-shoot_302761

দৈনিকবার্তা-নারায়ণগঞ্জ, ৪ আগস্ট: সোমবার রাতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার মাহমুদপুরে হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাস থামিয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি করে ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে হত্যার ১৮ ঘন্টা পার হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা। পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

মঙ্গলবার দুপুরে নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে, ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম হত্যার প্রতিবাদে ও শোক প্রকাশ করে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে চাষাঢ়ায় প্যানোরামা প্লাজা বন্ধ রাখা হয়েছে। মারের্কটের ব্যবসায়ীরা হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রু খুনীদের গ্রেফতার করে ন্যায়বিচারের দাবী জানান। এই মার্কেটে নিহত নুরুল ইসলামের দুইটি দোকান রয়েছে। এছাড়া ঢাকার মোতালেব প্লাজায় একটি মোবাইলের দোকান ও বায়তুল মোকাররম মার্কেটে একটি জুয়েলারী দোকান রয়েছে বলে তার পরিবার জানিয়েছে।

ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর রেল স্টেশন এলাকার হাজী হানিফের ছেলে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম সোমবার রাত পৌঁনে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে উৎসব পরিবহনের একটি বাসে নারায়ণগঞ্জ ফিরছিলেন। পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের মাহমুদপুর এলাকায় দুর্বৃত্তরা হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাসের গতিরোধ করে। কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাসে উঠে যাত্রী নুুরুল ইসলামকে বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে একটি গুলি করে তার সাথে থাকা একটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেমে নির্বিঘেœ চলে যায়। গুরুতর অবস্থায় ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামসহ যাত্রীবাহি বাসটি নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বোমার বিস্ফোরণে বাসটির গ্লাস ভেঙ্গে যায়।

তবে হত্যাকান্ডের ১৮ ঘন্টা পার হলেও পুলিশ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার বা হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। পুলিশ বিষয়টি জানতে নিহতের বাড়িতেও যায়নি বলে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। নুরুল ইসলামের কাছ থেকে দুর্বৃত্তদের ছিনিয়ে নেয়া ব্যাগটিও উদ্ধার করতে পুলিশ র্বর্থ হয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহতের ছেলে শুভ ও ভাই আল ইসলাম।

ব্যবসায়ী ছেলের কোন শত্র“ নেই জানিয়ে ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন নিহতের পিতা হাজী হানিফ ও মা আনোয়ারা বেগম। বিকেলে মোবাইল ফোনে স্বামীর সাথে শেষ কথা হয় স্ত্রী’র। সাবিনা ইয়াসমিন তখনো জানত না তার স্বামী আর বাড়ি ফিরবে না। এটাই তার শেষ কথা হবে। স্বামী হারানোর শোকে পাথর স্ত্রী কথা বলতে পারছেন না। একেবারে স্তব্ধ হয়ে গেছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ বলছে হত্যার বিষয়ে তারা তদন্ত করছে।

খুনীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে তাদের দাবী।ফতুল্লা মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্ত করা হয়েছে। পুলিশ লাশের সাথে তার বাড়িতে গিয়েছে। হত্যাকান্ডের বিষয়ে জোর তদন্ত চলছে। শীঘ্রই খুনীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার করা হবে। পুলিশ সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, লাশ দাফন শেষে নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে ফতুল্লা থানায় বাদি হয়ে একটি মামলা করবেন। তার প্রস্তুতি চলছে।