দৈনিকবার্তা-ময়মনসিংহ, ৩ আগস্ট: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধ সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি, হামলা, ভাঙচুর এবং ছাত্র হত্যার অভিযোগ এনে সংগঠনটির ৭৯ নেতাকর্মী গণপদত্যাগ করেছেন। একইসঙ্গে সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন পদত্যাগকারী নেতাকর্মীরা। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সামনে দপ্তর সম্পাদক আতিক শাহরিয়ারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন নেতাকর্মীরা।
পদত্যাগকারী নেতাকর্মীরা হলেন- সহ-সভাপতি মো. মেহেদী আজম, যুগ্ম-সম্পাদক তায়েফুর রহমান রিয়াদ, মাহবুবুর রহমান রাহাত, রাকিব আল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনউদ্দিন রুবেল, অনুপ দাস, দীপঙ্কর মজুমদারসহ ৬৭ জন এবং বিভিন্ন হল কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাকসহ ১২ নেতাকর্মী পদত্যাগ করেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে যুগ্ম-সম্পাদক খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ জানান, বর্তমান বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ তাদের অনুগত ক্যাডাররা কমিটি ঘোষণার পর থেকে সীমাহীন সন্ত্রাস, মাদক, শিক্ষার্থী নির্যাতন, শিক্ষক লাঞ্ছিত করা এবং ছাত্র হত্যাসহ চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করছে। এসব অপকর্মের জন্য এখন পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। কেওয়াটখালীতে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো.জসিমউদ্দিনের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খান বাবু, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি নুরে আলম, যুগ্ম-সম্পাদক ওবায়দুল ইসলাম খানসহ ৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তিনি জানান, অস্ত্র মামলায় কারাগারে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) বিজ্ঞানী মারধর ও চাদাঁবাজির অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন সহ-সভাপতি ওহাব রিন্টু, সহ-সভাপতি বিজয় কুমার বর্মণ, যুগ্ম-সম্পাদক মনিরুল হাসান পলাশ। এছাড়াও বাকৃবি ছাত্রদলের করা ভাঙচুর মামলায় আসামি করা হয়েছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।পদত্যাগকারী নেতারা দাবি করেন, বর্তমান কমিটি ২০১৩ সালে গঠিত হয়ে দুই বছরের অধিক সময় পার করলেও নতুন কমিটি না দেয়ায় নেতৃত্বে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের প্রতি মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঘোষণার দাবিও করেন তারা।পদত্যাগের বিষয়ে কথা বলতে সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পওয়া যায়নি।
বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পদত্যাগ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, এ বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। দ্রুত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি করে বিষয়টির সমাধান করা হবে।উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে ছাত্রলীগের ২৮তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনে সভাপতিসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করার পর থেকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়নি বর্তমান কমিটির বিদ্রোহীসহ পদলোভী নেতাকর্মীরা।