দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২ আগস্ট: ভারতের মনিপুর, গুজরাট ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বৃষ্টিপাত, বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ৮২ জনের প্রাণহানি হয়েছে।মনিপুর রাজ্যের চান্দেল জেলার জৌমল গ্রামে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানায়, খেংজো মহকুমার জৌমল গ্রামে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে ভূমিধস হয়েছে। এতে বেশিরভাগ ঘরবাড়ি মাটির নিচে চাপা পড়েছে। ভারত-মায়ানমার সীমান্তের কাছে ওই এলাকায় পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছে। আসাম রাইফেলস ও গ্রামবাসীরা ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।এদিকে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ জেলায় বন্যায় নয় ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে। রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, পশ্চিম মেদিনীপুরে সাত জন ও বাঁকুরা জেলায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হাওড়া, বাঁকুরা ও হুগলি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
নদীর বাঁধ ভেঙে পানি উপচে পড়ায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পরিস্থিতি এখনও গুরুতর। তবে জেলার সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পাঁচ জেলায় কয়েক লাখ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৭১ হাজার ঘরবাড়ির আংশিক বা পুরোপুরি ক্ষতি হয়েছে।গুজরাটের উত্তরাঞ্চলে ভারী বর্ষণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৩। রাজ্যের জরুরী নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তারা জানান, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বনসকণ্ঠ জেলায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।গুজরাটের উত্তরাঞ্চলে বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান পুরোমাত্রায় চলছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সেনা, বিমান ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যসহ ভারতের জাতীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ বাহিনী (এনডিআরএফ)’র ১৭ টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। ১৩ হাজারেরও বেশি লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আড়াই হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনঃসস্থাপন করা হয়েছে। দুই শতাধিক গ্রামীণ সড়ক চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। পাঁচ হাজারেরও বেশি স্কুল পুনরায় খুলেছে।গত কয়েকদিনে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে মনিপুর রাজ্যের ইমফল, নামবুল, ইরিল ও কংবা নদীসহ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্ব ইমফল ও পশ্চিম ইমফল জেলার অনেক এলাকাসহ রাজ্যের রাজধানী ইমফলের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাজ্যের চার পার্বত্য জেলায় কয়েক কোটি রুপির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। থুবাল জেলায় বন্যায় শতশত লোক গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং তারা বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে অবস্থান নিয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা ও ভুমিধস হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রামপুর ও কিনাউর এলাকায় ২৬ টি সড়ক, সিরমাউর এলাকায় ৩৯টি সড়ক, রহরো ও দোদরা-কারে ৫ টি, মান্ডিতে ১৯, দালহাউজিতে ১৫ ও পালামপুরে একটি সড়কসহ প্রায় ১শ’ সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।আবহাওয়া অফিস আগামী ছয় দিন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আরো বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে।