SM5

দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ০২ আগস্ট ২০১৫: অস্বাভাবিক জোয়ারে ভাসছে কলাপাড়ার ২৫টি গ্রাম। কোথাও কোমর আবার কোথাও বুক সমান পানির প্লাবন চলছে। রবিবার থেকে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবনে অন্তত পাঁচ হাজার কৃষক পরিবার চরম বিপাকে পড়েছেন। চাল-চুলা থেকে সব পানিতে ডুবে গেছে। ২৪ ঘন্টায় এভাবে দুই দফা প্লাবনের শিকার মানুষগুলো এখন দু’চোখে সব অন্ধকার দেখছে। ভিটেমাটিতে আদৌ বসবাস করতে পারবে কী না তা নিয়ে পড়েছেন মহা অনিশ্চয়তায়। বাড়িঘর থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, আবাদি জমি, স্কুল, মাদ্রাসা-মসজিদ সব জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকছে। লালুয়ার চারিপাড়া ও মহিপুর ইউনিয়নে নিজামপুর বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত থাকায় এসব গ্রামের মানুষ এমন দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এসব মানুষের এবছরের আমন আবাদ পড়েছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। এখন বাড়িঘরে বসবাসে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তার শঙ্কা।

বিধ্বস্ত বাঁধ মেরামতের দাবিতে দু’টি ইউনিয়নের হাজারো নারী-পুরুষ পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তারিকুজ্জামান তারা জানান, অন্তত তিন হাজার কৃষক পরিবার বাড়িঘর ছাড়ার উপক্রম হয়েছে। সব পানিতে ভাসছে। মানুষ আছে না খেয়ে। পারছে না রান্না করতে। ভেসে গেছে পুকুর-ঘেরের কোটি কোটি টাকার মাছ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। প্রকৃতির এ বিপর্যয়কে মানবসৃষ্ট বিপর্যয় বলে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের দাবি। কারণ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে দফায় দফায় মেরামত করা বাঁধ কীভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গেল। অস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবের পাশাপাশি গাববাড়িয়ার ক্লোজার করায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চারটি ইউনিয়নের আরও ৪০টি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে আছে। এসব গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার কৃষক পরিবারের আমন আবাদ ভেস্তে যেতে বসেছে। এ গ্রামগুলো এখন ভারী বর্ষনের পানিতে ভাসছে। কোথাও এক ইঞ্চি জমি নেই যেখানে হালচাষ করতে পারবেন কৃষক। মোট কথা কলাপাড়ার অর্ধশতাধিক গ্রামের কৃষক এবছর আমন আবাদ করতে পারছেন না। দ্বি-মুখী বিপর্যয়ে অন্তত দশ হাজার একর কৃষি জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্তত ৩০ হাজার মেট্রিকটন ধানের উৎপাদন থেকে বঞ্চিতের শঙ্কা রয়েছে।