দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১ আগস্ট: আগামী সংসদ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই হবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এমন বক্তব্যে জাতি হতাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. রিপন বলেন, এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সৈয়দ আশরাফ শঙ্কা জাগিয়ে তুলেছেন যে, দেশে আবারো ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন পাঁচ শতাংশের সরকার গঠিত হবে।বিএনপির এ মুখপাত্র জানান, সদ্য বিলুপ্ত হওয়া ১৬২টি ছিট মহল এবং বাংলাদেশের অন্তর্ভূক্ত ৫২ হাজার নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশের গৌরব ও আনন্দের দিন। ছিনটমহলের নাগরিকদের মতো বিএনপিও তাদের সঙ্গে আনন্দিত।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন হতাশা প্রকাশ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিবার্চন আয়োজনে সংলাপ ডাকতে সরকারের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন।আওয়ামী লীগের মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফ শুক্রবার বলেছিলেন, বিএনপি ভুল বুঝতে পেরে তত্ত্বাবধায়কের ইস্যু থেকে সরে এসেছে। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুসারে বর্তমান সরকারের অধীনেই হবে। সে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে।রিপন বলেন, আমরা তার এই মন্তব্যে হতাশ হয়েছি। এর মধ্য দিয়ে আশঙ্কা জাগে যে, সরকার আবার ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন একটি নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে কি না।
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক হোক, আর যে নামেই হোক,দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দরকার।আমরা কোনো জিদ ধরে বসে থাকিনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা কেয়ারটেকার সরকার- এই দুটি শব্দের ওপর স্টিকড হয়ে আমরা বসে থাকিনি। আমরা বলেছি, নিবার্চনকালীন সময়ে এক ধরনের নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে। কারণ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। কোনো একগুয়েমি নয়, কোনো জেদাজেদির বিষয় নয়, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, বলেন রিপন।ওই ‘নিরপেক্ষ সরকারের রূপ কী হবে, এর দায়িত্ব কী হবে- তা নিয়ে সব রাজনৈতিক দলসহ নাগরিক সমাজকে নিয়ে আলোচনা চাইছে বিএনপি।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেনের উদ্বেগের সঙ্গে একমত পোষণ করে রিপন বলেন, আমাদের দল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে ও কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার বিলোপ সাধনে যাবতীয় নাগরিক ও যে কোনো রাজনৈতিক দলের উদ্যোগকে সমর্থন করে এবং ভবিষ্যতে করবে।বিএনপির অভ্যন্তরীণ অবস্থা নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার বক্তব্যেরও সমালোচনা করেছেন আসাদুজ্জামান রিপন।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, শাসক দলের ক্ষমতা হারানো কিছু ব্যক্তি বিএনপি ও তার নেতৃত্ব নিয়ে কটূক্তি করে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজেদের পত্রিকার পাতায় বাঁচিয়ে রাখার নির্লজ্জ প্রয়াস চালাচ্ছেন।আমি তাদের উদ্দেশে বিশেষ করে সুরঞ্জিত সেন গুপ্তসহ তার সহযোগীদের বলতে চাই- আপনারা নিজেদের আয়নার সামনে নিজের চেহারাটা একটু দেখুন। তাদের দুর্গতির জন্য নিজেদের দুর্নীতির কালো বেড়ালে রূপান্তরিত হওয়াই দায়ী। আপনারা নিজেদের দুর্গতি নিয়ে চিন্তা করুন। বিএনপিকে নিয়ে চিন্তার প্রয়োজন নেই।
নয়া পল্টনে সংবাদ সম্মেলনে রিপনের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জিয়াউর রহমান খান, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবদুস সালাম আজাদ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন, খোরশেদ মিয়া আলম, সিমকি ইমাম, সুলতানা আহমেদ।