1438405504

দৈনিকবার্তা-জয়পুরহাট, ১ আগস্ট ২০১৫: জয়পুরহাটের দুটি আবাসিক হোটেলে পৃথক অভিযান চালিয়ে নেপালে পাচারের উদ্দেশে আনা ২০ জনকে উদ্ধার করেছে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাচারকারী চক্রের এক দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান, মানব পাচারের গোপন সংবাদ পেয়ে ডিবি পুলিশ শুক্রবার ও শনিবার পৃথক অভিযান চালিয়ে শহরের সৌরভ ও পৃথিবী আবাসিক হোটেল থেকে ২০ জনকে উদ্ধার করেছে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ জয়পুরহাট সদরের উপরচক এলাকার লাভলু আকন্দ নামের পাচারকারী চক্রের এক দালালকে গ্রেপ্তার করে। তার বাড়ি জয়পুরহাট সদর উপজেলার ওপরচক এলাকায়। সে ঢাকা কোচ এস.আই পরিবহনের জয়পুরহাট কাউন্টারের একজন কর্মচারী।গোয়েন্দা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, এস.আই পরিবহনের ঢাকা কাউন্টারের সুমন হোসেন উদ্ধারকৃতদের নেপালে পাচারের উদ্দেশে অগ্রীম টাকা নিয়ে জয়পুরহাটে পাঠিয়ে দেয়। তাদের দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারত হয়ে নেপালে পাচার করার জন্য পাচারকারী দলের সদস্য আটককৃত লাবলু তাদের জয়পুরহাটের সৌরভ হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে। গোপনে সংবাদ পেয়ে শহরের সৌরভ ও হোটেল পৃথিবী আবাসিক হোটেলে দু’দফায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারকৃতরা হলো গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম তালুকবেলকা গ্রামের মোছাদ্দেক হোসেন (২৮), একই উপজেলার রামডাকুয়া গ্রামের জাকারিয়া (২৮), ফারুক হোসেন (২৭) ও জাহিদুল ইসলাম (২৮) এবং নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার নবিয়াবাদ গ্রামের আল আমিন (২৩) মানিক মিয়া (২০) হানিফ (৩৪) এবং একই উপজেলার ধনিয়া গ্রামের জাকির হোসেন (২২) ও চাঁন্দিয়াকাঁন্দি গ্রামের রমজান মিয়া (১৯)। হেটেল পৃথিবী থেকে যাদেও উদ্ধার করা হয় তারা হলো সৌরভ,(২১) আলঅমিন(২৩) পলাশ(২২) নাজমুল(২৪) মেরাজ(২২) খোকন(২৫) নুরল(২২) কবির(২৩) জাকির(২৫) কাজল(২২) মানিক)(২৩)

উদ্ধার হওয়া মানিক,রমজান ও আল আমিন জানান,নেপালে থাকা তাদের এলাকার রমজান নামের এক দালাল নেপালে যেতে তাদের প্রলুব্ধ করে। জানায় জনপ্রতি ৭৫ হাজার টাকা খরচের কথাও। নেপালে রাজমিস্ত্রীর কাজ করলে মোটা অংকের বেতন পাওয়ার লোভ দেখায় তাদের। এ জন্য রমজানের কথামত তার ভাগিনা ঢাকার লেবু ব্যবসায়ী জসিমের সাথে যোগাযোগ করলে জসিম তাদের ঢাকার এস.আই পরিবহন কাউন্টারের কর্মী সুমনের হাতে তুলে দেয়। সুমন তাদের তিনজনের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা অগ্রীম নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদিয়া আবাসিক হোটেলে দুইদিন রেখে জয়পুরহাটে পাঠিয়ে দেয়। নেপালে পৌঁছার পর তাদের প্রত্যেককে আরো ৫৫ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানায়। জয়পুরহাটে পৌঁছার পর লাবলু তাদের সাথে যোগাযোগ রাখে। এ সময় হিলির মিজান নামের এক দালালও মোবাইল ফোনে তাদের সাথে যোগাযোগ করে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান, মানব পাচারের গোপন সংবাদ পেয়ে ডিবি পুলিশ শুক্রবার রাতে শহরের সৌরভ আবাসিক হোটেলে অভিযান চালায়। তাদেও স্বীকারোক্তি মোতাবেক শহরের আবাসিক হোটেল পৃথিবীতে বেলা ১১টায় অভিযান চালিয়ে তাওে আটক করাহয়। এ সময় নেপালে পাচারের উদ্দেশে আনা নরসিংদী ও গাইবান্ধার নয় ব্যাক্তি ও ১১ ব্যাক্তিকে তারা উদ্ধার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ জয়পুরহাট সদরের ওপরচক এলাকার লাভলু আকন্দ নামের পাচারকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করে। দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারত হয়ে নেপালে পাচার করার উদ্দেশে তাদের জয়পুরহাটের ওই দুটি আবাসিক হোটেলে গোপনে রাখা হয়। এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর থানায় মানব পাচার আইনে মামলা করা হয়েছে।