খালেদা জিয়া-Khaleda zia

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১ আগস্ট: স্থল সীমান্ত চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব লাভকারী ছিটমহলবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এদিকে,মায়ের পেটে শিশুও আজ নিরাপদ নয় বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ-বেপরোয়া যে মায়ের পেটে শিশুও আজ নিরাপদ নয়। মায়ের গর্ভ বিদীর্ণকারী শাসকদলীয় অস্ত্রবাজরা মাগুরাসহ সারাদেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থার আশু অবসান প্রয়োজন।শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি এই শুভক্ষণে আনন্দিত।বিলুপ্ত হওয়া ছিটমহলবাসীদের এই আনন্দের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শামিল হয়েছেন, তিনিও আনন্দিত।এই মাহেন্দ্রক্ষণে তাদের তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন।ছিটমহল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতের ছিটমহলের ৩৭ হাজার মানুষের ভূমিসহ বাংলাদেশি হয়ে যাওয়ার দিন এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।বাংলাদেশের ভেতরে থাকা এই ১১১টি ছিটমহলের নাগরিক এতদিন পরিচয়ে ভারতীয় থাকলেও তারা ছিল সব অধিকারবঞ্চিত। তেমনি ভারতের ভেতরে থাকা ৫১টি ছিটমহলের ১৪ হাজার বাসিন্দাও ছিল বঞ্চিত।

১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির আওতায় শনিবার মধ্য রাতে হয় ছিটমহল বিনিময়ের আনুষ্ঠানিকতা, যাতে বাংলাদেশের ভেতরের ছিটমহলগুলো বাংলাদেশের হয়ে গেল, ভারতের ভেতরেরগুলো হয়ে গেল ভারতের। রিপন বলেন, আজ জাতির জীবনে একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন, আনন্দের দিন। ছিটমহলের জনগণ নাগরিকত্ব ফেরত পেয়েছেন। এক সময় তাদের ছিটের জনগণ বলা হতো। এখন বাংলাদেশে আর কোনো ছিট নেই।

বিলুপ্ত এই ছিটমহলগুলোর মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে সেখানে দ্রুত উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণের জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন তিনি।বাংলাদেশের ভুখণ্ডে মিশে যাওয়া ছিটমহলগুলোর মানুষের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগোযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সকল উদ্যোগ নিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। মূলধারার মতো তারাও যেন সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারেন।একই সঙ্গে একটি ছিটমহলের নাগরিকত্ব নিয়ে সঙ্কটের বিষয়টি গণমাধ্যমে দেখার কথা জানিয়ে তার সুরাহার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতা।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, শুক্রবার রাত ১২টার পর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিক ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্ট জাতীয় পার্লামেন্টে র‌্যাটিফাই হওয়ায় ১৬২টি ছিটমহল বিলুপ্ত হয়ে দুদেশের পতাকা উড্ডীন হয়েছে সেখানে। ৫২ হাজার মানুষের ৬৮ বছরের কান্নাভেজা মুক্তির আনন্দে-আমরাও আনন্দিত। রিপন বলেন, বাংলাদেশের নতুন এসব নাগরিকরা আমাদের মূল ধারায় মিশে যাবেন, এটি ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯৭৪ সালে এসব ছিটমহল নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল-ভারত বহু বছর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে তা অনুমোদন করায়-আমরা তাকে, তার সরকারকে ও ভারতের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে আগেই অভিনন্দিত করেছিলাম।

তিনি বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আগামী জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই হবে বলে জানিয়ে জাতিকে হতাশ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি এই শঙ্কা জাগিয়ে তুলেছেন যে, দেশে আবারো একটি ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন পাঁচ শতাংশের সরকার গঠিত হবে।তিনি বলেন, সরকার এ সংকট থেকে বাঁচতে পারে দেশের বিরোধী দলগুলোকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা না দিয়ে দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মূলত সংবিধান থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রহিত করে শাসকদল সর্বস্তরের জনগণের আকাঙ্খাকে গলাটিপে হত্যা করে যে বিষবৃক্ষ রোপন করেছে – সেটার বিষে আজ সরকার জরজর। যার ফলশ্র“তিতে দেশে এখন কোনো আইনের শাসন নেই, সুশাসন নেই-ফলশ্র“তিতে কর্ত্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার যাঁতাকলে জাতি আজ নিষ্পিষ্ট। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণের মতো একটি জাতীয় নির্বাচনের কথা বলেছেন-যাতে করে দেশের জনগণ তাদের পছন্দ অনুযায়ী একটি সরকার পেতে পারেন।