দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩১ জুলাই: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার মতো ভুল আর করবেন না।তিনি বলেন, সংবিধানে সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। আগামী নির্বাচনও সংবিধান অনুযায়ী হবে।
সেখানে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। গত নির্বাচনে তিনি (খালেদা জিয়া) অংশ না নিয়ে যে ভুল করেছেন, আশা করি এবার সেই ভুল করবেন না।সৈয়দ আশরাফ শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে যুবলীগের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।‘যে কোনো নামের একটি নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন, এটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আশরাফ বলেন, তত্ত্বাবধায়কের দাবি থেকে তারা সরে এসেছেন কি-না, তা তো স্পষ্ট করেননি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটি ছবি হাজারো শব্দের চেয়ে শক্তিশালী। যুবলীগের বইয়ে বঙ্গবন্ধুর অনেক ছবি সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এটা তরুণ প্রজেন্মর জন্য শিক্ষনীয়।প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ৭০ সালের নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু নেত্রকোনায় এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়েছিলেন। আমি তখন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। আমিও ওই সভায় গিয়েছিলাম। সভা শেষে যখন রাত ৩টার দিকে ফিরে আসছিলাম সার্কিট হাউসে, তখন রাস্তায় গাছ ফেলা হয়েছিল। আমরা বুঝতে পারলাম কুচক্রীমহল বঙ্গবন্ধুকে ঢাকায় ফিরতে না দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা তখন সবাই মিলে গাছগুলো সরিয়ে ফেললাম। পরে সার্কিট হাউসে আসলাম।
আশরাফ বলেন,ওই সময় তৎকালীন টেপুটি কমিশনারকে তলব করলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বললেন- আমি এখনই ইয়াহিয়ার সঙ্গে কথা বলবো। কমিশনার বললেন- এখন তো রাত ৩টা বাজে। তাছাড়া ইয়াহিয়া খান রাওয়ালপিন্ডিতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু বললেন- আমি এসব বুঝিনা। আপনি ব্যবস্থা করুন কথা বলার জন্য। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে কথা বলেন।
তখন বঙ্গবন্ধু ফোনে বলছিলেন- আপনি কি পাকিস্তানে নির্বাচন চান কি চান না? আর যদি র্বিাচন চান তাহলে রাতে আমার যাওয়ার সময় গাছ ফেললেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ইয়াহিয়া খান বললেন, নির্বাচন হবে। আপনি শান্ত হোন। এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। ওই সময় বঙ্গবন্ধু যেভাবে কথা বললেন আমি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যুবলীগকে উদ্দেশ করে বলেন, যুবলীগ যে বইটি প্রকাশ করেছে, এটি চমৎকার একটি গ্রন্থনা। চমৎকার এডিটিং। যুবলীগের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এ বইটি সৃজনশীল। এ বইটি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে তারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবে। তাই আমি যুবলীগের কাছে আরেকবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আশরাফ বলেন, ৭০ সালের নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের এতো সদস্য ছিল না। কিন্তু ছাত্রলীগ ছিল সংগঠিত। ঘরে ঘরে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের দাওয়াত পৌঁছে দিতো ছাত্রলীগ। তাই নির্বাচনের প্রচারও করতে হয়েছে ছাত্রলীগকেই।বইটি তরুণ ও যুব সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যুবলীগের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ,ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ। এ ছাড়া ওই অনুষ্ঠানে যুবলীগের শীর্ষ নেতাসহ বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।এর আগে যুবলীগ আয়োজিত ‘বাঙালির হৃদয়ের ফ্রেমে জাতির পিতা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও সংবাদচিত্র প্রদর্শনীতেও বক্তব্য রাখেন সৈয়দ আশরাফ। বইটির প্রকাশক ও সম্পাদক যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং জয়ীতা প্রকাশনীর সত্বাধীকারী ইয়াসিন কবির জয় ।