দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০ জুলাই: রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ভবিষ্যতে কেউ যেনো আর বর্বরতা চালানোর সাহস না পায় সেজন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতির নামে জনগণের ব্যাপক ক্ষতি ও জীবন্ত মানুষ হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিররুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তাঁর সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার তাঁর কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের মাঝে চেক বিতরণকালে এ কথা বলেন।চলতি বছরের শুরুতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের রাজনৈতিক কর্মসূচির সময় পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে হতাহত এবং ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের আর্থিক সহায়তার চেক টওদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা একথা বলেন। তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের ৯২ দিনের তথাকথিত অবরোধে অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার ৩৭ ব্যক্তি আত্মীয়-স্বজন এবং ১৮৫ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন মালিকদের মাঝে ৮ কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি টাকার ২২২টি চেক বিতরণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ক্ষতিসাধনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের কেউ রেহাই পাবে না। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি। কারণ তাদের শাস্তি না হলে আগামীতে তারা আবারো একই ঘটনা ঘটাবে।চেক বিতরণের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব নয়। আমরা আমাদের সাধ্যমতো আপনাদের পাশে দাঁড়াতে চাই এবং এই চিন্তা-চেতনা থেকে সাহায্য-সহায়তার চেষ্টা করছি।তিনি বলেন, ব্যক্তিস্বার্থ চরিত্রার্থের জন্য জনগণের ক্ষতিসাধন ও জীবন্ত মানুষ পোড়ানোর মতো এমন নৃশংসতা কেউ দেখাতে পারে তা কল্পনাও করা যায় না।শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে ৯২ দিনে যে নিষ্ঠুরতা ও তান্ডব চালিয়েছে তা বাংলাদেশের মানুষ অতীতে কখনো দেখেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি রাজনীতি করেন মানুষের সেবা ও কল্যাণের জন্য। কিন্তু যে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জনগণ নির্মমতার শিকার হয়, তা আদৌ কোন রাজনীতি নয়। সেটা মূলত জঙ্গীবাদী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। বিএনপি ও জামায়াতের ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবেলা ও প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনগণের সাহসিকতার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সাহসী ভূমিকা দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছে।তিনি বলেন, দেশের মানুষ আর এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ত ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না। একটি পরিবারের একজনের মৃত্যুতে ওই পরিবারের অনেক ক্ষতি হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। মানুষ স্বাধীনভাবে জীবিকা নির্বাহ করে নিজেদের জীবনযাত্রা উন্নত করবে এটাই ছিলো সবার কামনা।আমরা কখনোই জনগণের ক্ষতিসাধন বরদাস্ত করি নাই এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছে এবং আমি মানুষকে সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে চাই।জনগণের পাশে দাঁড়ানোর তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে আগামীতে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক ঘটনা মোকাবেলায় দলমত নির্বেশেষে সবার সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের সদস্য, আহত ব্যক্তি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন মালিকদের মাঝে ৯৯৪টি চেকে ৩৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বিতরণ করেন।