Dhaka-City

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ জুলাই ২০১৫: নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার চতুর্থ অধিবেশনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর কাছে এ দাবির কথা জানান তার।বৈঠক শেষে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওনারা (ডিসি) নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ চাচ্ছেন, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ সংযোগপ্রাপ্ত অঞ্চলের ৮০ শতাংশ জায়গায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পারবো।হামিদ বলেন, বিদ্যুৎ সুবিদা সবার কাছে পৌঁছে দিতে অনেক গ্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের মধ্যে পল্লী এলাকার ৯০ শতাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ দিতে পারবো।এদিকে, দেশের বিভিন্ন জেলায় বিদ্যমান খালি শিল্প প্লট বরাদ্দের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা চেয়েছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। এ বিষয়ে তারা মন্ত্রীর কাছে বেশকিছু সুপারিশও করেছেন।তিন দিনব্যাপী চলমান জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০১৫’র দ্বিতীয় দিনে বুধবার তৃতীয় অধিবেশনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে তারা এ বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বৈঠক শেষে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে জেলা প্রশাসকরা খালি শিল্প প্লট বরাদ্দের বিষয়ে নির্দেশনা চেয়েছেন। এ বিষয়ে তারা বিভিন্ন সুপারিশও করেছেন। মৌলভীবাজারে একটি মৎস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে তোলার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক। তারা জেলাভিত্তিক শিল্প কারখানার ধরন সম্পর্কেও জানতে চেয়েছেন।আমু বলেন, আমরা তাদের ( জেলা প্রশাসকদের) জানিয়েছি-খালি শিল্প প্লটের বিষয়টি সরকারের নজরে রয়েছে। এগুলো উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হবে। এ বিষয়ে যথাযথ ভূমিকা রাখতে ও উপযুক্ত মনিটরিং চালু রাখতে ডিসিদের বলেছি।এছাড়া জেলা প্রশাসকরা যেন যার যার অবস্থান থেকে এ বিষয়ে কাজ করেন সেই নির্দেশও দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেন, শিল্প প্লট যাতে ঠিকভাবে বরাদ্দ হয় সে জন্য নির্দেশনা চেয়েছেন ডিসিরা। এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ডিসিদের জানানো হয়েছে।২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামায়াতের ‘নৈরাজ্য, নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ নিয়ন্ত্রণে রাখায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত আলোচনায় মন্ত্রী এ ধন্যবাদ জানান। সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক।আলোচনা শেষে তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছিল ডিসিরা সেটা দক্ষতার সঙ্গে সামলিয়েছেন। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে গত জানুয়ারিতে ৯২ দিনের নাশকতা, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কারণেও তাঁদের ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে।বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন,প্রতি জেলায় একটি করে পণ্য চিহ্নিত করে সেটাকে আরও পরিচর্যা করে কীভাবে রপ্তানি করা যায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি হচ্ছে, এক জেলায় এক পণ্য’ নীতি। এ ছাড়া ভেজালবিরোধী অভিযানে ডিসিদের আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, খাদ্যে কেউ ভেজাল দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খাদ্য এবং দুযোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে জেলা প্রশাসকদের সব চেয়ে বেশি চাহিদা বলে জানিয়েছেন দুই মন্ত্রী। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত কার্য অধিবেশন শেষে এ কথা জানান খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এবং ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।কামরুল ইসলাম বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তাদের চাহিদা ছিল বেশি। বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য গুদামের প্রয়োজন। অনেক খাদ্য গুদাম নষ্ট হয়ে গেছে। সেই চাহিদা বেশি দিয়েছেন।আমরা আশ্বস্ত করেছি, সরকারিভাবে ১ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন খাদ্য গুদাম তৈরি হচ্ছে, আগামীকাল প্রথম দফায় টেন্ডার যাচ্ছে।বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত ১৯ লাখ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার সাইলো ২৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।আমরা তাদের চাহিদা ফুলফিল করব।ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছেও চাহিদা ছিল বেশি করে বরাদ্দ দেওয়া, বলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।তিনি বলেন, বিশেষ করে দুযোগপ্রবণ এলাকায় মালামাল লিফট দেওয়ার জন্য ট্রাক এবং গোডাউন করে দেওয়ার জন্য বলেছেন তারা। আমরা ব্যবস্থা নেব।টিআর-কাবিখার বরাদ্দ নিয়ে নিয়ে অভিযোগ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে তারা কোন কথা বলেনি। সুষ্ঠুভাবে যাতে বণ্টন হয় সেটা নিশ্চিত করা হবে।এর আগে সকালে ডিসিদের সঙ্গে ভূমি, পররাষ্ট্র, পরিবেশ ও বন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নিয়ে আলাদা আলাদা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।