দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৮ জুলাই ২০১৫: বাংলাদেশের প্রথম সারির নাট্যদল ‘প্রাঙ্গণেমোর’ নিয়মিতভাবে রবীন্দ্রনাথের নাটকের চর্চা করে আসছে। ইতিমধ্যে দলটি রবীন্দ্রনাথের ৪টি নাটক মঞ্চে এনেছে যা দেশ বিদেশে দর্শক নন্দিত হয়েছে। প্রাঙ্গণেমোর-এর ৪র্থ প্রযোজনা ‘রক্তকরবী’ নাটকটি আগামী ১ আগস্ট মঞ্চায়িত হবে কলকাতার একাডেমী অফ ফাইন আর্টস মিলনায়তনে।
কলকাতার বিখ্যাত নাট্যদল পূর্ব-পশ্চিম আয়োজিত ২৮ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত ৬দিনব্যাপী নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে। এ নাট্যোৎসবে রক্তকরবী নাটক মঞ্চায়নের জন্য প্রাঙ্গণেমোরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই ২৬ সদস্যের দল নিয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেস যুগে দলটি কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। রক্তকরবী নাটকটি এর আগে ভারতের কল্যাণী ও বহরমপুরে মঞ্চায়িত হয়েছে। সেখানকার দর্শকদের কাছে নাটকটি সমাদৃত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত এ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন নূনা আফরোজ।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন নূনা আফরোজ, অনন্ত হিরা, রামিজ রাজু, আউয়াল রেজা, শিশির রহমান, পলাশ, জসিম, সরোয়ার সৈকত, সাগর, রিগ্যান, সুমী, মনির, শুভ, শুভেচ্ছা, সীমান্ত, কিশোর, প্রকৃতি, সুজয়, চৈতী, সোহাগ। নাট্য পরিচয়:
ঘটনাস্থানটির প্রকৃত নামটি কী সে সম্বন্ধে ভৌগলিকদের মতভেদ থাকা সম্ভব। কিন্তু সকলেই জানেন, এর ডাকনাম যক্ষপুরী। প-িতরা বলেন, পৌরাণিক যক্ষপুরীতে ধনদেবতা কুবেরের স্বর্ণসিংহাসন। কিন্তু এ নাটকটি একেবারেই পৌরাণিক কালের নয়, একে রূপকও বলা যায় না। যে জায়গাটার কথা হচ্ছে সেখানে মাটির নীচে যক্ষের ধন পোঁতা আছে। তাই সন্ধান পেয়ে পাতালে সুড়ঙ্গ-খোদাই চলছে, এইজন্যেই লোকে আদর ক’রে একে যক্ষপুরী নাম দিয়েছে। এই নাটকে এখানকার সুড়ঙ্গ-খোদাইকরদের সঙ্গে যথাকালে আমাদের পরিচয় হবে।
যক্ষপুরীর রাজার প্রকৃত নাম সম্বন্ধে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতের ঐক্য কেউ প্রত্যাশা করে না। এইটুকু জানি যে, এঁর একটি ডাকনাম আছেÑ মকররাজ। যথাসময়ে লোকমুখে এই নামকরণের কারণ বোঝা যাবে। রাজমহলের বাহির-দেয়ালে একটি জালের জানলা আছে। সেই জালের আড়াল থেকে মকররাজ তাঁর ইচ্ছামত পরিমাণে মানুষের সঙ্গে দেখাশোনা করে থাকেন। কেন তাঁর এমনতরো অদ্ভুত ব্যবহার তা নিয়ে নাটকের পাত্রগণ যেটুকু আলাপ-আলোচনা করেছেন তার বেশি আমরা কিছু জানি নে। এই রাজ্যের যাঁরা সর্দার তাঁরা যোগ্য লোক এবং যাকে বলে বহুদর্শী।
রাজার তাঁরা অন্তরঙ্গ পার্ষদ। তাঁদের সতর্ক ব্যবস্থাগুণে খোদাইকরদের কাজের মধ্যে ফাঁক পড়তে পায় না এবং যক্ষপুরীর নিরন্তর উন্নতি হতে থাকে। এখানকার মোড়লরা এক সময়ে খোদাইকর ছিল, নিজগুণে তাদের পদবৃদ্ধি এবং উপাধি-লাভ ঘটেছে। কর্মনিষ্ঠতায় তারা অনেক বিষয়ে সর্দারদের ছাড়িয়ে যায়। যক্ষপুরীর বিধিবিধানকে যদি কবির ভাষায় পূর্ণচন্দ্র বলা যায় তবে তার কলঙ্ক- বিভাগের ভারটাই প্রধানত মোড়লদের ’পরে।
জেলেদের জালে দৈবাৎ মাঝে মাঝে অখাদ্য জাতের জলচর জীব আটকা পড়ে। তাদের দ্বারা পেট-ভরা বা ট্যাঁক-ভরার কাজ তো হয়ই না, মাঝের থেকে তারা জাল ছিঁড়ে দিয়ে যায়। এই নাট্যের ঘটনাজালের মধ্যে নন্দিনী নামক একটি কন্যা তেমনিভাবে এসে পড়ে। মকররাজ যে বেড়ার আড়ালে থাকেন সেইটেকে এই মেয়ে টিঁকতে দেয় না।