দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৭ জুলাই: ভোগের মধ্যে সুখ নয়, ত্যাগের মাধ্যমেই নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই নিজেকে একজন সত্যিকার দেশপ্রেমী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। যারা ভোগের গড্ডালিকায় নিজেকে বিলিয়ে দেয় তারা নিজেরা হয়তো ভোগ বিলাসের জীবন কাটাতে পারে। কিন্তু দেশকে কিছু দিতে পারে না। এর প্রমাণ তোমরা বাংলাদেশেই দেখেছ। সোমবার বিকালে গণভবনে নতুন নির্বাচিত ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সাথে মতবিনিময় কালে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।
তিনি এসময় আরো বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে ছাত্রলীগ বাংলাদেশের জনগণকে মুক্তির পথ দেখিয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ আদর্শ নিয়ে চলে। কারণ আদর্শ ছাড়া, নীতি ছাড়া কখনো কোনা নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারে না। তাই নব নির্বাচিত ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লোভ লালসার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে জনগণের সেবা করতে হবে।
নতুন নির্বাচিত ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইনকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তাদের বলতে চাই, তোমরা যে দায়িত্ব পেয়েছ এবং তোমাদের যারা নির্বাচিত করেছে তাদের প্রতি সম্মান রেখে তোমরা তোমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। কারণ আওয়ামী লীগ যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তখন বঙ্গবন্ধু ছাত্রদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। ছাত্রদের দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মানুষের আর্থ-সামাজিত উন্নতি হয়, দেশের উন্নতি হয়। এটি একটিই কারণে হয়, কারণ আওয়ামী লীগ আদর্শ নিয়ে চলে।
যে আদর্শ বঙ্গবন্ধু দিয়ে গেছেন। একটি লক্ষ্য রেখেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি। কাজেই ছাত্র লীগের নেতা-কর্মীকে এই অল্প বয়স থেকে সেভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে। কারণ আমি কী পেলাম সেটা বড় কথা না, আমি দেশকে কী দিলাম, সাধারণ মানুষকে কী দিতে পারলাম সেটিই বড় কথা। একজন রাজনীতিবিদের জীবনে এটাই হচ্ছে চরম সত্য। কাজেই তাদের সব সময় এটাই চিন্তা করতে হবে আমি দেশ এবং দেশের মানুষকে কতটুকু দিলাম।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এর সোমবার ৪৪তম জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার গণভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপস্থিতিতে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আআমস আরেফিন সিদ্দিক, দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, নাঈম রাজ্জাক এমপি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, ফোকাস বাংলা নিউজের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও জয়ী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ইয়াসিন কবীর জয় ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ সম্পাদক সাদিকুর রহমান চৌধুরী পরাগ, শাহ্রিয়ার খান বর্ণ, সাংবাদিক শাহেদ চৌধুরী, সাংবাদিক রাহুল রাহা ।
প্রসঙ্গত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং দেশের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী মরহুম ড. ওয়াজেদ মিয়ার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেও একজন আন্তর্জাতিক স্বীকৃত আইটি বিশেষজ্ঞ। উপরন্তু পারিবারিক উত্তরাধিকার হিসেবেই তিনি লাভ করেছেন জনসাধারণের প্রতি দায়বদ্ধতা ও আপন মেধা মননকে দেশের কল্যাণে নিবেদন করে দেশে ও জাতির ভাগ্য উন্নয়নের অবদান রাখার প্রেরণা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে যখন দেশে তথ্যপ্রযুক্তিকে প্রত্যন্ত এলাকা অবধি সম্প্রসারিত করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার মাধ্যমে সর্বাধুনিক ও ব্যয়বহুল এই প্রযুক্তিকে দেশের তৃণমূলের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন তখন অনেকেই একে অসম্ভব বলে মনে করেছিলেন। অথচ মাত্র ছয় বছরের মধ্যে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণা বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে।বাংলাদেশকে এত দ্রুত ডিজিটালাইজেশন করার নেপথ্যে প্রধান ভূমিকা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।
তাঁর পরিকল্পনা, দিকনির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘সজীব ওয়াজেদ জয় : সমৃদ্ধ আগামীর প্রতিচ্ছবি’ নামে এই গ্রন্থ প্রকাশনা করা হয়েছে। চার রঙে ছাপা ২০০ পৃষ্ঠার সচিত্র গ্রন্থটিতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সংক্ষিপ্ত আকারে শিক্ষা ও কর্ম অভিজ্ঞতা, পারিবারিক প্রেক্ষাপট এসব তুলে ধরা হয়েছে। এর পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান, তথ্য প্রযুক্তি খাতে দেশ কতদূর এগিয়েছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবস্থান কেমন, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ও সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া রয়েছে বিগত সমস্যা দেশের রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতি এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাত, তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে দেশের তরুণ প্রজন্মের উজ্জ্বল প্রতিনিধি সজীব ওয়াজেদ জয় যেসব বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সেসব বক্তব্যের নির্বাচিত কিছু অংশ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অর্জন নিয়ে একগুচ্ছ আলোকচিত্র সংযোজিত করা হয়েছে।
সুখপাঠ্য গ্রন্থটির সম্পাদক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এমপি, প্রকাশক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন এবং পরিকল্পনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জয়ীতা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ইয়াসিন কবীর জয়। বইটি প্রচ্ছদ ও অঙ্গপরিকল্পনা করেছেন শাহ্রিয়ার খান বর্ণ।