দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৭ জুলাই ২০১৫: নাশকতার মামলায় বিএনপির তিন নেতার জামিন টিকলো না আপিল বিভাগে।আপিল বিভাগ তাদেরকে এক সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।জামিন বাদ হয়ে যাওয়া বিএনপির এই তিন নেতা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের জামিন বহাল রেখেছেন আদালত।প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন।গত ৯ জুলাই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই চার নেতাকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন বিচারপতি মো. জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।এমকে আনোয়ারের বিরুদ্ধে নয়টি, তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চারটি, আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বিরুদ্ধে একটি ও আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে ৪২টি মামলা রয়েছে। বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো রজ্জু করা হয়।কিন্তু ১৪ জুলাই জামিনের স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
২১ জুলাই সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের অবকাশকালীন চেম্বার বেঞ্চ আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে ২৭ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেন।সোমবার শুনানি শেষে এমকে আনোয়ার, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানকে এক সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন আদালত।আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন।রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।গত ৯ জুলাই বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো.জাকির হোসেনের বেঞ্চ বিএনপির এই চার নেতাকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেয়।বিএনপি নেতাদের মধ্যে আমান গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগে পল্টন, শাহবাগ, মিরপুর ও মতিঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানার ৪২টি মামলায় আগাম জামিন পান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার জামিন পান নয়টি মামলায়। এর মধ্যে ঢাকার পল্টন থানায় পাঁচটি, যাত্রাবাড়ী ও খিলগাঁও থানার একটি এবং কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার দুটি মামলা রয়েছে।বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু আগাম জামিন পান পল্টন থানার এক মামলায়। আর তরিকুল ইসলাম যশোরের চার মামলায় চার সপ্তাহের আগাম জামিন পান।রাষ্ট্রপক্ষ তাদের জামিনের আদেশ স্থগিতের আবেদন করলে গত সপ্তাহে চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২৭ জুলাই দিন ঠিক করে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।আদেশের পর মুরাদ রেজা বলেন, ঘটনাগুলো ঘটেছে জানুয়ারি মাসে। আর তারা আগাম জামিন চেয়েছেন জুলাই মাসে। এ কারণে আগাম জামিনের আবেদন যৌক্তিকতা হারিয়েছে বিবেচনা করে হাই কার্টের জামিন আপিল বিভাগ বাতিল করে দিয়েছে।বিএনপির তিন নেতা এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করলে বিচারিক আদালত তাদের জামিন আবেদন বিবেচনা করতে পারে বলেও আপিল বেঞ্চের আদেশে বলা হয়েছে।মুরাদ রেজা বলেন, তরিকুল ইসলামের আবেদনে বিশেষ কিছু যুক্তি ছিল। সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে আপিল বিভাগ তার জামিন স্থগিতের আবেদনে নো অর্ডার দিয়েছে।