দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৭ জুলাই ২০১৫: সরকারের কৃষি ও কৃষক বান্ধব নীতির সাথে সঙ্গতি রেখে এবং সংশ্লিষ্টদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৫.৫ শতাংশ বেশি। এছাড়া সমবায় ব্যাংক ৩০ কোটি টাকা এবং বিআরডিবি ৬৭৬ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করবে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গভর্নর ড. আতিউর রহমান এ তথ্য দেন। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গভর্নর আতিউর রহমান এ কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা রাজী হাসান, এস কে সুর চৌধুরীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
চলতি অর্থবছরে মোট ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক; যা গত অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ বেশি। বিগত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ শতাংশ বেশি কৃষি ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হয়েছিল।প্রকাশনায় বলা হয়, সরকারের নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এবং সংশ্লিষ্টদের মতামত বিবেচনায় ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা বিগত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ বেশি। এছাড়া ব্যাংকগুলোর জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বাইরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক ও পল্লী উন্নয়ন বোর্ড নিজস্ব অর্থায়নে যথাক্রমে ৩০ কোটি টাকা ও ৬৭৬ কোটি টাকা কৃষি বিতরণ করবে।
নতুন নীতিমালায় বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের ন্যূনতম ২ শতাংশ কৃষি ও পল্লী খাতে বিতরণ করতে হবে। নতুন নয়টি বেসরকারি ব্যাংকের জন্য এ হার ৫ শতাংশ। মোট ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা, বেসকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ৬ হাজার ৭১৭ হাজার কোটি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর ২৯৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যে সব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে না তাদের অর্থবছর শেষে লক্ষ্যামাত্রার অনর্জিত অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা দিতে হবে। ব্যাংক ওই জমার উপর কোনো সুদ পাবে না।কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বিগত অর্থবছরে ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৫ হাজার ৯৭৮ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৩ শতাংশের বেশি।পরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, আমাদের মূল কাজ মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হিসেবেই এ কৃষি ঋণ নীতিমালা জারি করা হয়ে থাকে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণ অনেক ক্ষেত্রেই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বাধা দূর করতে তিনি ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে কৃষি ঋণ বিতরণে যাতে কোনো কেলেঙ্কারি না হয় সে ব্যাপারে তিনি ব্যাংকগুলোকে বিশেষভাবে সতর্ক করে দেন।