doinikbarta-ashraful

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ জুলাই ২০১৫: শোকের মাস আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নিজস্ব স্বকীয়তা থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম৷তিনি বলেন,এ বছর বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাত্‍ বাষির্কী৷ আপনারা আপনাদের মতো করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনুষ্ঠান করেন সংবাদ প্রকাশ করেন৷ আমরা কোনো কিছু আপনাদের চাপিয়ে দিতে চাই না৷ চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছু মৌলিক হয় না৷ আমরা চাই, আপনারা আপনাদের নিজস্ব স্বকীয়তা থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনুষ্ঠান করুন৷ বৃহষ্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাত্‍ বার্ষিকী পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকরা এই পরামর্শ দেন ৷ সৈয়দ আশরাফ বলেন, আমরা আপনাদের সৃজনশীল প্রোগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে জানতে, তার সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পারবো৷ আপনারা বঙ্গবন্ধুকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিন৷

দেশের বিশিষ্ট সাংবাদিকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সার্বজনীন করার লক্ষ্যে তাঁর জন্ম ও শাহাদাত্‍ বার্ষিকী পালনে জাতীয় কমিটি গঠনের উপর গুরুত্বরোপ করেছেন৷এজন্য তারা আওয়ামী লীগ নেতাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে কোন দলের সম্পদ হিসাবে সীমাবদ্ধ রাখা ঠিক হবে না৷ বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতির সম্পদ৷ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিয়েছেন৷ তাই বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও মৃতু্যবার্ষিকী পালনে সকল রাজনৈতিক দল মিলে জাতীয় কমিটি করা যায় কিনা তা ভাবতে হবে৷

সাংবাদিক নেতারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রচারণা দেখে মনে হয় তিনি কেবলই আওয়ামী লীগের সম্পত্তি৷ কিন্তু বঙ্গবন্ধু কোনও দল বা ব্যক্তির নয়, তিনি সমগ্র জাতির৷ এ কারণে বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও শাহাদাত্‍ বার্ষিকী জাতীয়ভাবে পালন করতে হলে আওয়ামী লীগকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে৷ দলমত নির্বিশেষে সবার সঙ্গে বসতে হবে৷ বঙ্গবন্ধুকে মানুষের আত্মার আত্মীয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে৷মতবিনিময় সভায় সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের সকলের চেতনা৷ তিনি কোন দলের সম্পদ নয়, সমগ্র জাতির সম্পদ৷ যে মিথ্যা ধারণা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কর্ে এতদিন দেয়া হয়েছিল সেটি এখন কাটতে শুরম্ন করেছে, তা জেনে আমরা আনন্দিত৷মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে শুধু মাত্র আওয়ামী লীগের সম্পত্তি করা হলেই সমস্যা৷ বঙ্গবন্ধু শুধু আওয়ামী লীগের সম্পতি হতে পারে না৷ তিনি সমসত্ম বাঙ্গালি জাতির৷

সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন,বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতীয় সম্পদ৷ তাই তাঁর মৃতু্যবার্ষিকী পালনের জন্য একটি জাতীয় কমিটি করতে হবে৷ যেখানে সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা থাকবেন৷ সবাই মিলে একটা ইভেন্ট করতে হবে৷ যাতে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে৷কালের কন্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে শুধু জন্ম ও মৃতু্যবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের মধ্য সীমাবন্ধ না রেখে সারাবছর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যমে তাকে স্মরণ করতে হবে৷ একই সাথে তরম্নণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানাতে প্রথম শ্রেণী থেকে সকল শ্রেণীর পাঠ্যপুসত্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বিভিন্ন প্রবন্ধ সংস্থাপন করার দাবি জানান তিনি৷

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনের নামে যাতে সারাদেশে কোন চাঁদাবাজি না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে৷এই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ইতোমধ্যই দলের পক্ষ থেকে আমাদের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নির্দেশ দিয়েছেন, কারো বিরুদ্ধে জাতীয় শোক দিবস পালনের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ এলে তার বিরম্নদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে৷সভায় সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজরুল আহসান বুলবুল, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ইনকিলাব সম্পাদক বাহাউদ্দিন, সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ চৌধুরী, মানবকন্ঠের প্রকাশক ও সিনিয়র সাংবাদিক জাকারিয়া চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ, বাসস-এর প্রধান বার্তা সম্পাদক কুতুবউদ্দিন, বাসস-এর প্রধান বার্তা সম্পাদক (বাংলা) হালিম আজাদ প্রমুখ৷আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগাঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷