photo-1437560690

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২২ জুলাই ২০১৫: জলবায়ু পরিবর্তনের বৈরী প্রভাব মোকাবেলা, জ্বালানি দক্ষতার উন্নয়ন ও শাসন ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করতে জার্মানি সহায়তা হিসাবে বাংলাদেশকে ২০৮ মিলিয়ন ইউরো প্রদান করবে।বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. থমাস হেইনরিচ প্রিঞ্জ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা জানান।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ওই সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, জার্মানি বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে তার অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের সঠিক পথে রয়েছে।আইটি সেক্টরে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতির উল্লেখ করে জার্মান দূত এই সেক্টরে তার দেশ থেকে বিনিয়োগ আনার ব্যাপারে তার উচ্চাশা ব্যক্ত করেন।তিনি বলেন, বর্তমানে বছরে গড়ে দেড় হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য জার্মান ভিসা পাচ্ছে এবং তা আরো বাড়তে পারে।বায়োগ্যাস বাংলাদেশের সম্ভাবনার উল্লেখ করে ড. প্রিঞ্জ বলেন, তার দেশে মোট জ্বালানি ব্যায়ের ২৬ শতাংশ আসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। তিনি আরো বলেন, আমরা তা ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে চাই।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে জার্মানি রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি ছিলেন এক মহান বাগ্মী এবং জার্মান জনগণ তাকে উচ্চ মর্যাদা দেয়।এ প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি তার বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর সফরের উল্লেখ করে বলেন, ইতিহাস কথা বলেন।

বিএনপি-জামায়াত জোটের দেশব্যাপী সন্ত্রাস ও পেট্রোল বোমা হামলার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিট পরিদর্শন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি আগুনে পুড়ে আহতদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ প্রত্যক্ষ করেছেন।এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,একটি স্বতন্ত্র বার্ণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় জার্মানি বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে।প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে নয়া জার্মান রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এবং স্বাধীনতার পর থেকে উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি জার্মানির টেকসই প্রতিশ্র“তির প্রশংসা করেন।তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগের এক চমৎকার গন্তব্য এবং অত্যন্ত উদার বিনিয়োগ নীতি থাকায় তিনি এখানে আরো বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিকাশমান জাহাজ শিল্পের উল্লেখ করে বলেন, এ সেক্টরে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।দেশে পৃথক বার্ণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী অন্যতম প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসাবে তিনি জার্মানির কথা স্মরণ করেন।প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেলকে তাঁর সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরেরও আমন্ত্রণ জানান।অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, শ্রমিক কল্যাণের কথা চিন্তা করে বিদেশি ক্রেতাদের বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের দাম বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ টাকা শ্রমিকদের আরো কল্যাণে ব্যয় করা হবে। বুধবার নেদারল্যান্ডের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত গারবেন ডি জং সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ আহবান জানান।সাক্ষাত শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।পোশাক শ্রমিকদের কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৬ বছরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি দ্বিগুণ করা হয়েছে। পাশাপাশি নারী শ্রমিকদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সরকার তাদের জন্য চাকরির বাজার সৃষ্টি করছে। দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিনা বেতনে নারী শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।রাষ্ট্রদূতের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের মধ্যকার সুসর্ম্পক বিদায়ী এ রাষ্ট্রদূতের সময় নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত গারবেন ডি জং।বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরের উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।এছাড়াও কৃষি,প্রাণিজ সম্পদ এবং ভূমি উদ্ধার খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন নেদারল্যান্ডের এ প্রতিনিধি।ক্রিকেটে ধারাবাহিক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন গারবেন ।