ripon_264609

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২২ জুলাই ২০১৫: আন্তনদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে ভারতের পরিকল্পনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। প্রতিবেশী এই দেশটির সঙ্গে অভিন্ন নদীর হিস্যা আদায়ে আরও উদ্যোগী হতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি। বুধবার দুপুর ১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত বিষয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ উদ্বেগের কথা জানান দলটির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন।রিপন বলেন,১৩জুলাই ভারতের সেচমন্ত্রীর বরাত দিয়ে সে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবর বেরিয়েছে, ভারত তিনটি অভিন্ন নদীতে বাঁধ দিয়ে আন্তনদী সংযোগ প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে রিপন বলেন, এটি ভারতের নিজস্ব বিষয় হলেও এর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে। ব্রহ্মপুত্রসহ অনেক নদী এতে পানিশূন্য হয়ে পড়তে পারে।আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন নদীগুলোতে বাংলাদেশের পানির যে ন্যায্য হিস্যা তা আদায় করা সরকারের দায়িত্ব। বিষয়টি নিয়ে তিনি ভারতকে চাপ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি এ বিষয়ে বিএনপি সরকারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতেও প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেন তিনি। আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প প্রসঙ্গে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, এই প্রকল্পের ফলে বাংলাদেশের সেচ ব্যবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে এবং পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ভারতের এই আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে একটি ডেথ সেন্টার পরিণত করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়।

তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে ভারত ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বর্ষার মওসুমে পানি টেনে নিয়ে যাবে। ফলে বাংলাদেশ শুকনো মওসুমে কোনো পানি পাবে না। এর ফলে কৃষি এবং নদীগুলো মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এতে একতরফাভাবে ভারতই লাভবান হবে বাংলাদেশ নয়।তিনি বলেন, এটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৫৪টি নদীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। যার ফলে ভারত চাইলেই এবিষয়ে একা সিদ্ধান্ত নিয়ে পারে না।সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৩ জুলাই ভারতের একটি পত্রিকা সেদেশের সুপ্রিম কোর্টের বরাত দিয়ে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প করা হবে বলে জানিয়েছে। এই প্রকল্পটি করার জন্য নির্দেশও দেয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে। এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও সরকারের নজরে আসলো না। তাহলে কি আমাদের বুঝতে হবে বাংলাদশের পানি সম্পদমন্ত্রী ঘুমিয়ে থাকেন?সরকারকে উদ্দেশ্য করে রিপন বলেন, জরুরি ভিত্তিতে পানি সম্পদ বণ্টনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলাচনায় বসুন। ভারতের হাই কমিশনারকে ডেকে আনুন। এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এবং ভারতের সঙ্গে যতো অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে সিগুলো মীমাংসার জন্য আলোচনা শুরু করুন।এসব মীমাংস করার জন্য শুধু পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় নয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও সম্পৃক্ত করতে হবে।সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভারত সরকারকে সাফ জানিয়ে দেন, পানি প্রসঙ্গে এদেশর জনগণ ঐক্যবদ্ধ। এখানে কোনো বিভাজন নেই। আপনারা যদি চান বিএনপির সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী ও দেশের বরেণ্য পানি বিশ্লেষকদের পরামর্শ নিতে পারনে। বিএনপিও আপনাদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতে প্রস্তুত রয়েছ।

ড. রিপন বলেন, ভারত তার নদীগুলোর মধ্যে ইন্টার লিংকিং প্রজেক্ট চালু করার কথা ভাবছে। গত ১৩ জুলাই ভারতের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রীকে উদ্ধৃতি করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তিনটি রিভার লিংকিং (আন্তঃনদী সংযোগ) প্রজেক্ট নিয়ে ভারত প্রাথমিক কাজ শুরু করতে চায়।তিনি বলেন, বিষয়টি ভারতের নিজস্ব ব্যপার হলেও, ভারত বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন ৫৪টি নদী প্রবাহিত হয়। তাই এ প্রজেক্টের কারণে বাংলাদেশ চরম পানি সংকটের মধ্যে পড়বে।জানা যায়, ভারত তার দেশের মধ্যে বিভিন্ন নদীতে বাঁধ নির্মাণ করছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভারত পানি আটকিয়ে রেখে শুষ্ক মৌসুমে তার নিজ দেশে প্রবাহিত করে নিজেদের চাষাবাদসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে কাজে লাগাবে। এর প্রভাবে বাংলাদেশ থাকবে পানিশূন্য।বিএনপির মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভারতের এ ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদ না করার ভূমিকা নিয়ে বিএনপি উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এসময় দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ছাড়াও অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।