salahuddin_1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২২ জুলাই ২০১৫: ভারতের শিলংয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এরফলে ওই অভিযোগে তার বিচার চলবে আদালতে। বুধবার শিলংয়ের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কে এম এল নংব্রিয়ের আদালত এই অভিযোগ গঠন করেন। শুনানির এই দিন ঘোষণা করেন।অভিযোগ গঠন করে আগামী ৩০ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত।শুনানিতে অংশ নিতে ওই আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।বিনা পাসপোর্টে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে শিলংয়ের পুলিশ সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট-৪৬’-এ মামলা করেছে।সাত জনকে এই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে।অভিযোগ টওমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রয়েছে।আদালতে সালাহ উদ্দিন আহমেদের পক্ষে রয়েছেন আইনজীবী এস পি মাহান্তা। অপরদিকে সরকারপক্ষে রয়েছেন আইনজীবী আই সি ঝা।

ভারতের আদালতে রায় যাই হোক, যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরতে চান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ, যাকে নাশকতার মামলায় বাংলাদেশের পুলিশও খুঁজছে।অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে শিলংয়ের আদালতে বুধবার অভিযোগ গঠনের শুনানির আগে তিনি বলেন, কোর্ট যে রায় দিক, আমি আমার দেশে ফিরে যেতে চাই। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে ঢোকার অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারায় এই মামলা চলছে সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।এ আদালতের পিপি আইসি ঝা জানিয়েছেন, বিএনপির এই নেতা অনুপ্রবেশের অভিযোগ স্বীকার করে নিলে বিচারক বুধবারই রায় জানিয়ে দিতে পারেন।ভারতের পাসপোর্ট আইনে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলার সাত সাক্ষী ইতোমধ্যে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।ঢাকা থেকে ‘উধাও হওয়ার দুই মাস পর গত ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে হদিস মেলে সালাহ উদ্দিনের। কিছুদিন কারাগার ও হাসপাতালে কাটানোর পর স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনায় জামিন পান তিনি। মেঘালয় পুলিশ গত ৩ জুন এ মামলায় যে অভিযোগপত্র দিয়েছে, তার ভিত্তিতে বুধবার অভিযোগ গঠনের শুনানি চলছে মেঘালয়ের বিচারিক হাকিম কেএমএল নংব্রির আদালতে।

শুনানির জন্য সালাহ উদ্দিন তার আইনজীবীকে নিয়ে সকালে জেলা দায়রা আদালতে এলে সেখানেই তার সঙ্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কথা হয়।সালাহ উদ্দিন বলেন, তার শরীরের অবস্থা এখন ভালো। আর দেশে ফেরার ক্ষেত্রে তার কাউকে ভয় পাওয়ারও কিছু নেই।আদালতের বাইরে এক আত্মীয়র সঙ্গে দাঁড়িয়ে এক কাপ চা খাওয়ার পর ভেতরে ঢুকে যান সালাহ উদ্দিন।৫৪ বছর বয়সী সালাহ উদ্দিনের দাবি, অচেনা এক দল লোক ঢাকার এক বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়েছিল। এরপর আর কিছুই তিনি মনে করতে পারেন না।শিলংয়ে খোঁজ মেলার পর আচরণ অসংলগ্ন মনে হওয়ায় বাংলাদেশের সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীকে প্রথমে একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করেছিল পুলিশ।স্বামীর সন্ধান পাওয়ার পর শিলংয়ে ছুটে যান সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তিনি চিকিৎসার জন্য স্বামীকে ভারত থেকেই সিঙ্গাপুরে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে আদালতে তার আবেদন নাকচ হয়ে যায়।বিএনপির এই নেতা এ মুহূর্তে দেশে ফিরে গ্রেপ্তার হওয়ার চেয়ে ভারতেই দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে আগ্রহী বলে তার ঘনিষ্ঠরা এর আগে জানিয়েছিলেন।নিখোঁজ হওয়ার আগে বিএনপির অবরোধ-হরতালে নাশকতায় প্রাণহানির মধ্যে অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রায় এক মাস বিবৃতি পাঠিয়ে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন সালাহ উদ্দিন। সে সময় বিভিন্ন মামলায় তাকে আসামি করা হয়।ভারতে হদিস মেলার পর সালাহ উদ্দিনকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে ইন্টারপোলের একটি রেড নোটিস’ পাঠানোরও খবর আসে।