ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ জুলাই, ২০১৫ : ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসানকে আটক মাদক দ্রব্যের মামলায় আসামী করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেছে পটুয়াখালীর দুমকি থানা পুলিশ। সোমবার বিকেলে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিলায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তারিক শামস এর আদালতে হাজির করলে আদালত সিডব্লিউ মূলে আসামীদের জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। এদিকে,কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ২১ ও ২২ জুলাই দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সোমবার বেলা পৌনে ৪টায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্র দলের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান।

রোববার রাত ১১ টার দিকে লেবুখালী ফেরিঘাট থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় আরো ৫ ছাত্রদল নেতা কর্মীকেও আটক করা হয়। পুলিশের দাবী আটক কৃত ছাত্রদল সভাপতির লাগেজ চেক করে ৪৫ পিস ইয়াবা ও এক বোতল মদ পাওয়া গেছে। অপর আটককৃতরা হলেন মেহেন্দিগজ্ঞ ছাত্রদলের মোঃ সালাউদ্দিন, মোঃ রফিকুল ইসলাম, সৈয়দ জসিম উদ্দিন ও সাইফুল ইসলাম। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি সাদা রঙ্গের প্রিমো ব্রান্ডের গাড়ী আটক করা হয় যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো গ ২২-৫৬৮৮।ছাত্রদলের সভাপতিকে আটকের পর সোমবার রাত ২ টায় পটুয়াখালী পুলিশ অফিসে সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষনিক ভাবে প্রেস ব্রিফিং করেন পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদ। আটককৃত ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সভাপতির বিরুদ্ধে পল্টন,শাহাবাগ ও মতিঝিল থানায় মোট ২১ টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া দুমকি থানার ওসি বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে ছাত্রদল সভাপতি সহ আরো ৫ নেতা কর্মীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসানসহ ছয়জনকে রোববার রাতে পটুয়াখালীতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের গাড়িতে থাকা লাগেজ থেকে ৪৫টি ইয়াবা বড়ি ও একটি বোতল উদ্ধার করার দাবি করেছে পুলিশ। বোতলের পদার্থ মদ হতে পারে বলে পুলিশের সন্দেহ। গ্রেপ্তার হওয়া ছয়জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পটুয়াখালীর দুমকি থানায় মামলা হয়েছে।দুমকি থানার পুলিশের ভাষ্য, গত রাত ১১টার দিকে দুমকি উপজেলার লেবুখালী ফেরিঘাট থেকে ওই ছয়জনকে তারা আটক করে। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

পুলিশের দাবি, রাজীব তাঁর পাঁচ সহযোগীকে নিয়ে একটি প্রাইভেট কারে (ঢাকা মেট্রো-গ-২১-৫৩৮৮) করে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা যাচ্ছিলেন। পথে লেবুখালী ফেরিঘাটে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বহন করা গাড়িতে থাকা লাগেজ তল্লাশি করে ৪৫টি ইয়াবার বড়ি ও এমন একটি বোতল উদ্ধার করা হয়, যার ভেতর মদ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।এদিকে, রাজিব হাসানের আইনজীবী ও জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ওয়াহিদ সরওয়ার কালাম অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক ভাবে হেও প্রতিপন্ন করতে পুলিশ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতির নামে এমন একটি মিথ্যা মালা দায়ের করেছে। এ ছাড়া সময় ক্ষেপন করে আসামীদের আদালতে হাজির করায় সোমবার তাদের জামিন আবেদন করা যায়নি। মঙ্গলবার আসামীদের জামিন আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে যে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ন স্থানে পুলিশ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ২১ ও ২২ জুলাই দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সোমবার বেলা পৌনে ৪টায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্র দলের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান।কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ২১ জুলাই মঙ্গলবার দেশের সকল জেলা, মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় সমুহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ এবং ২২ জুলাই বুধবার দেশের সকল থানা ও পৌর এলাকা ও কলেজ সমুহে বিক্ষোভ মিছিল।সংবাদ সম্মেলনে রাজীব আহসানকে আটকের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ ঘটনা সরকারের মদদে আইন-শৃঙ্খালা বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্থা মিথ্যা ভাবে সাজিয়েছে।তিনি বলেন, রাজীব আহসান ঈদ উপলক্ষে তার বাবার কবর জিয়ারত করতে ঢাকা থেকে পটুয়াখালী যান।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ছাত্রদলেল সহ-সভাপতি তারেকুজ্জামান, মামুন বিল্লাহ, ইফতেখার কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালী ফেরিঘাট থেকে একটি মাইক্রোবাসসহ রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় গাড়িতে তার সঙ্গে থাকা আরও চারজনকেও গ্রেফতার করা হয়।