দৈনিকবার্তা-সিলেট, ১৭ জুলাই ২০১৫ : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, শিশু রাজনকে পৈশাচিক নির্যাতনে যারা হত্যা করেছে তারা মানুষ না, জানোয়ার। রাজন হত্যার আসামি (কামরুল ইসলাম) সৌদি আরবে পালাতে সহায়তাকারী বদমায়েশদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুক্রবার বেলা আড়াইটায় সিলেট সদর উপজেলার বাদেয়ালী ভাইয়ারপাড় রাজনদের বাসায় গিয়ে তিনি একথা জানান।এ সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাতে গিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।
মুহিত বলেন, ঘটনার দিন এলাকাবাসী সোচ্চার হলে রাজনকে বাঁচানো সম্ভব হত। তিনি এলাকাবাসী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্দেশে খুনিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজন হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। অর্থমন্ত্রী রাজনের ভাই সাজনের ভবিষ্যতের জন্য ৫ লাখ টাকার ফান্ড গঠনের ঘোষণা দেন।এ সময় আওয়ামী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমেদ, সুব্রত পুরকায়স্থ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যাকারী জানোয়ারদের বিচারে কোনো ধরনের আইনি ফাঁক- ফোঁকর রাখা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তাদের আইনের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা রাজনকে হত্যা করেছে তারা মানুষ নয়, জানোয়ার। তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।মন্ত্রী হত্যাকারীদের বদমাইশ আখ্যা দিয়ে বলেন, বদমাইলগুলোকে পালাতে যারা সুযোগ করে দিয়েছে তাদেরও আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, গ্রামবাসীরা ইচ্ছা করলে রাজনকে বাঁচাতে পারতেন। কিন্তু তারা করেননি। গ্রামীবাসীদের মধ্যে যদি কেউ এ ঘটনায় জড়িত থাকেন তাদেরও শাস্তি দেওয়া হবে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যাদের একুট সন্দেহ হবে কেউই বাঁচতে পারবে না।মন্ত্রী বলেন, বিচার ব্যবস্থায় আইনী কোনো ধরনের ফাঁক ফোকর রাখা হবে না। যাতে জানোয়ারগুলো বাঁচতে না পারে।এদিকে, সিলেটে আলোচিত শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার তালিকাভুক্ত সর্বশেষ আসামি আলী হায়দারকে (৩৭) আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকের সিলেট সদর উপজেলার শেখপাড়া এলাকা থেকে জনতা আটক করে পুলিশে দেয়।জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এ মামলার তালিকাভুক্ত চার আসামির মধ্যে একমাত্র আলীই গ্রেপ্তার হওয়ার বাকি ছিলেন।
এর আগে এ ঘটনার তালিকাভুক্ত আসামি কামরুল ইসলামকে সৌদি আরব থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তায় গ্রেপ্তর করা হয়। অন্য দুজনের মধ্যে মুহিতকে স্থানীয়রা প্রথমদিনেই আটক করে আর চৌকিদার ময়নাকে এলাকাবাসী ও তার মায়ের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়।প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্যে রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় নির্যাতনের ভিডিওচিত্রও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়। লাশ গুম করার সময় স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে আটক করেন সিলেট সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুহিত আলমকে। পরে মুহিতকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় মুহিত, তার ভাই কামরুল ইসলাম, আলী হায়দার ও স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন রাজনের বাবা।