Rajshahi Tanor Bank News 16-7-15
দৈনিকবার্তা-রাজশাহী প্রতিনিধি, ১৬ জুলাই ২০১৫ : রাজশাহীর তানোরে সোনালী ব্যাংক থেকে এক কোটি ১৮ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করার পর একে একে বের হয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। ওই টাকা আত্মসাতের মূল নায়ক নজির হোসেন সোহেল ছাড়াও ব্যাংকটির সে সময়কার রাজশাহী শাখার মহাব্যবস্থাপক, উপমহাব্যবস্থাপক, তানোর শাখার সিনিয়র অফিসারসহ তিনটি অডিট টিমের কর্মকর্তারাও জড়িত বলে সোহেল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তানোর সোনালী ব্যাংকের আইটি শাখা কর্মকর্তা সোহেল গ্রেপ্তার হওয়ার পর এসব তথ্য দিয়েছেন র‌্যাবের কাছে। র‌্যাব রাজশাহী-৫-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলেনে তিনি সাংবাদিকদের কাছেও এ তথ্য দেন।

সোহেল দাবি করেন, সোনালী ব্যাংক তানোর শাখার অভ্যন্তরিন হিসেব থেকে লভ্যংসের মোট ১ কোটি ১৮ হাজার টাকা সরিয়েছেন। তবে এই টাকা সরানোর পরে বিষয়টি সোনালী ব্যাংক রাজশাহীর শাখার মহাব্যবস্থাপককে ১৫ লাখ, উপমহাব্যবস্থাপককে ১০ লাখ, তিনটি অডিট দলকে ৫ লাখ এবং ওই শাখার সিনিয়র অফিসার হাসান মোহাম্মদ খালিদুলকেও কয়েক লাখ টাকা দিয়েছেন। তানোর শাখায় একটি একটি উকাউন্ট খুলে টাকাগুলো তিনি প্রথমে ট্রান্সফার করেন। এরপর সেগুলো পর্যায়ক্রমে তার স্ত্রী ও বাবার একাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে নজির হোসেন সোহেলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত অপর দুজন হলেন, নজিরের বন্ধু ও নগরীর দরিখরবোনা এলাকার মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে এস এম মাসুদ হাসান এবং নজির হোসেনের স্ত্রী সালমা জাহান লিমা। নজির হোসেনকে এসএম মাসুদ অপহরণ করে রেখেছিলেন বলেও দাবি করেন এই অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব তাকে উদ্ধার করতে গিয়েই গ্রেপ্তার হন মাসুদসহ নজিরের স্ত্রী সালমা। এরপর ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাতের মামলায় সোহেলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

র‌্যাব জানায়, সোহেল টাকাগুলো আত্মসাত করে এসএম মাসুদের সহযোগিতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে প্রায় তিন শ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ধানসহ ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। এছাড়াও দুইটি ট্রাক ও একটি মাইক্রোবাস কিনেছেন সোহেল।এসব আত্মসাতের জন্যই সোহেলকে অপরহণ করে রেখেছিলেন মাসুদ দাবি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী র‌্যাব–এর পরিচালক লেফ: কর্ণেল মাহাবুব আলম। তিনি বলেন, ‘আটক হোসেল সোনালী ব্যাংক তানোর শাখা থেকে যে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন, তার সঙ্গে আরো যারা জড়িত তাদের সকলের নামই স্বীকার করেছেন। তবে বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে আমরা তাদের নাম এখনোই বলছি না। এটি তদন্তকারী কর্মকর্তারাই বের করবেন বলেন র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রয়াত্ব সোনালী ব্যাংক লিমিটেড রাজশাহীর তানোর শাখা থেকে ১ কোটি ১৮ হাজার টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটে। ওই শাখার তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক কর্মকর্তা নাজির হোসেন সোহেল এ টাকা আত্মসাত করেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ২৪ মে থেকে ব্যাংকের অভ্যান্তরিন তদন্তে এ টাকা আত্মসাতের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে সোহেল আত্মগোপন করেন।