দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৫ জুলাই ২০১৫: যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সারা দেশে মঙ্গলবার রাতে পবিত্র লাইলাতুল কদর পালিত হয়েছে।ইবাদত-বন্দেগী, নফল নামাজ আদায়, জিকির আসকার, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল, আলোচনাসভা এবং মোনাজাতের মধ্যদিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ এই পবিত্র রজনী পালন করেন।পবিত্র রমজানের মহিমান্বিত এই রাতের ইবাদতকে হাজার মাসের ইবাদত থেকে উত্তম হিসেবে গণ্য করা হয়। রাতভর ইবাদত বন্দেগীর মধ্যদিয়ে মুসল্লিরা লাইলাতুল কদর পালন করেন।
লাইলাতুল কদরের রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ মসজিদে ও বাসায় নফল নামাজ আদায় করেন। তারা জিকির-আসকার ও কোরআন তেলওয়াত করেন। মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সারারাত জেগে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা, মিলাদ, জিকির আসকার, কোরআনের তাফসির ও ওয়াজ মাহফিল হয় ফজরের নামাজ পর্যন্ত। ফজরের নামাজের পর আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।পবিত্র লায়লাতুল ক্বদর উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মঙ্গলবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘পবিত্র লায়লাতুল ক্বদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। এছাড় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে পবিত্র লায়লাতুল ক্বদরের ফজিলত ও করণীয় শীর্ষক ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ, কিয়াম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।পবিত্র লায়লাতুল ক্বদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়।ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ লাইলাতুল কদরের রাতে এবং ফজরের নামাজ শেষে কবরস্থানে গিয়ে কবরবাসীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে সারাদেশে পবিত্র লাইলাতুল কদর পালিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নিজেদের গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি এবং অধিক সাওয়াব হাসিলের আশায় নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার আর বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ এ রাত। শবে কদর উপলক্ষে আজ বুধবার সরকারি ছুটি।লাইলাতুল কদর উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশের মসজিদগুলোতে মিলাদ-মাহফিলসহ বিশেষ ইবাদত-বন্দেগির আয়োজন করা হয়। পবিত্র এ রাতে অনেকেই কবরস্থানে গিয়ে স্বজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।মাগরিবের পরপরই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ রাজধানী ঢাকার বড় ছোট সব মসজিদেই মুসল্লিরা সমবেত হন। এশার নামাজের আগে মসজিদগুলো ভরে যায়। এ সময় লাইলাতুল কদরের তাত্পর্য ও ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এশার নামাজ জামাতে আদায়ের পর সবাই নফল নামাজসহ নানা ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল হন। ফজরের নামাজ পর্যন্ত চলে এসব ইবাদতপর্ব। ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় ও আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ শেষে ঘরে ফেরেন অনেকে।
লাইলাতুল কদরের রাত বিশ্ব মুসলিম সমপ্রদায়ের কাছে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ রাত। লাইলাতুল কদর অর্থ মহিমান্বিত রজনী বা মর্যদাসম্পন্ন রাত। পবিত্র এ রাতেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ওপর নাজিল হয়েছিল পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআন। পবিত্র কুরআনে এ রাতকে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। নবী করীম (সাঃ) এ রাতে নিজে ইবাদতে মশগুল থাকতেন এবং তাঁর সাহাবীদেরও বেশি বেশি ইবাদত করার নির্দেশ দিতেন। রমজান মাসের ২১ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে বেজোড় সংখ্যার রাতেই পবিত্র লাইলাতুল কদর। তবে ২৭ রমজান অর্থাত্ ২৬ রমজান দিবাগত রাতকেই কদরের রাত হিসেবে ধরে নেয়া হয়েছে।