7473622_orig

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ জুলাই ২০১৫: বিশ্বকাপের পর দেশের মাটিতে দাপটের সাথে পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। আর বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে পিছিয়ে পড়েও, দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে ইতোমধ্যে সমতাও এনেছে টাইগাররা। তাই হ্যাট্টিক সিরিজ জয়ের দারুণ এক সুযোগ এখন বাংলাদেশের সামনে। হ্যাট্টিক সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই বুধবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হচ্ছে মাশরাফিবাহিনী। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বেলা তিনটায়।এগারতম বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুখ-স্মৃতি নিয়ে দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। পুরো সিরিজে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে টাইগাররা। পাকিস্তানকে হারানোর স্মৃতি টাটকা থাকতে থাকতে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সেখানে টাইগারদের গর্জন অব্যাহত ছিলো। তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় মাশরাফি বাহিনী। প্রথম দু’ম্যাচ হারলেও তৃতীয় ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ায় ভারত।তাই পাকিস্তান ও ভারতকে দু’টি সিরিজে হারানোর সুখ-স্মৃতি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ শুরু করে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টুয়েন্টি টুয়েন্টি সিরিজ ২-০তে হারের পর প্রথম ওয়ানডেতেও বাজেভাবে হারের তেতো স্বাদ পায় টাইগাররা। তাতে ওয়ানডে সিরিজ হারের শংকায় তৈরি হয় বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ব্যাট-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই পারফরমেন্সের সেরাটা প্রদর্শন করে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা আনে টাইগাররা। সেই সাথে ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলাও নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে সমতা আসায় তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে জিতে হ্যাট্টিক শিরোপা জয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের। সেটি করতে হলে আবারো ঝলসে উঠতে হবে টাইগারদের। প্রথম ওয়ানডেতে তিন বিভাগে ভালো না করতে পারলেও, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তিন বিভাগে পারফরমেন্সের সেরাটাই দিয়েছে সৌম্য-নাসিররা। ফলে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয়টা এসেছে বেশ সহজেই।দ্বিতীয় ওয়ানডের ধারাবাহিকতাটাই তৃতীয় ম্যাচে অব্যাহত রাখতে চাইবে বাংলাদেশ। যাতে ইতিহাসের পাতায় যোগ হয় আরো একটি সাফল্যের পালক। এমন সুযোগ কাজে লাগানোর কথাই বললেন বাংলাদেশ ও বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, ‘বিশ্বকাপের পরই দু’টি সিরিজ খেলেছি দু’টিই জিতেছি। সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাই। সিরিজে এখন ১-১ সমতা রয়েছে। তাই তৃতীয় ম্যাচটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কখনো সিরিজ জিতিনি। তাই এবারের সুযোগটি কাজে লাগাতে চাই আমরা।সিরিজে এগিয়ে গিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু বাংলাদেশের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচটি বাজেভাবেই হারে প্রোটিয়াসরা। তাই সিরিজ নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেছে সফরকারীরা। তবে দল চ্যালেঞ্জে নিতে প্রস্তুত বলে জানালেন স্পিনার ইমরান তাহির, ‘দ্বিতীয় ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতে যাওয়ায়, সিরিজ এখন চ্যালেঞ্জের। তাই আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। তবে তৃতীয় ম্যাচে যারা ভালো খেলবে তারাই সিরিজটি জিতবে।

তিন ম্যাচ সিরিজে সমতা আনার পর বুধবার জেতার লক্ষ্যে চট্টগ্রামে মাঠে নামবে টাইগাররা। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খেলার জন্য মঙ্গলবার দুদলই প্রাক্টিস সম্পন্ন করেছে। এবার শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর বড় সুযোগ বলে মনে করছেন বাংলাদেশ দলের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।বিশ্বকাপের পর থেকে ঘরের মাঠে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে বড় জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে পাকিস্তান, এরপর ভারতকে হারিয়ে মাশরাফির দল আগে চেয়েও শক্তিশালী। ক্রিকেটের আরেক পরাশক্তি প্রোটিয়া জয়ের মিশন। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর সুযোগটা কাজে লাগাতেই চাই এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন সাকিব। সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেন, যেখানেই খেলি জিততে হলে তো ভালো ক্রিকেট খেলতেই হবে মাঠ বলেন আর উইকেট বলেন আর পরিবেশ বলেন। আমরা বাংলাদেশের সবগুলো মাঠেই ম্যাচ জিতছি।আমাদের কাছে মনে হয় সবগুলো গ্রাউন্ডই লাকি। এটা আমাদের হোম। প্রতিটি ম্যাচ এই চিন্তা করেই খেলতে নামি।এনপোলি ন্যাশনাল পলিমার বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার আগে মঙ্গবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।সাকিব বলেন, সিরিজের এই পর্যায়ে এসে কেউই ফেভারিট নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক বড় দল। তবে আমারও তাদের ছাড় দেবো না। কালকে জয়ের জন্যই আমরা মাঠে নামবো। দু’দলের সামনেই ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা তাদের আগে কোন সিরিজ হারাতে পারিনি। এটাই বড় সুযোগ।চট্টগ্রামে বাংলাদেশ দলের রেকর্ডটাও অনেক ভালো। দর্শক মাঠ সবই টাইগারদের পক্ষে। এজন্য ওয়ানডে সিরিজ জেতার জন্য বুধবার মাঠে নামবে মাশরাফি বাহিনী।