দৈনিকবার্তা-হাটহাজারী, ৯ জুলাই: হাটহাজারী পৌরসভায় ভিজিএফ চাল বিতরণে নয়-ছয় হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম অনুযায়ী জনপ্রতি অসহায়-দুস্থদের মধ্যে ১০ কেজি হারে চাল বিতরণের কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। পরিমাণে কম চাল বিতরণ করার কারণে প্রায় সাড়ে পাঁচশ কেজিও বেশি চাল উদ্বৃত্ত রয়েছে। তবে এই চাল কেন উদ্বৃত্ত জন্য রাখা হয়েছে এমন প্রশ্ন চাল নিতে আসা দুস্থতের।
তাইতো বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তুলেছে অসহায়-দুস্থ লোকদের।পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি সাপ্তাহে পবিত্র ঈদ উপলক্ষে হাটহাজারী পৌর এলাকার দরিদ্র ও মাঝে চাল বিতরণের জন্য ৩শ ৩৭ বস্তায় ১৬ হাজার তিনশত কেজি চাল বরাদ্দ এসেছে। এর মধ্যে ৯শ কেজি চাল জেলে সম্প্রদায়ের জন্য। বাকী ১৫ হাজার ৪শ কেজি চাল ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে পৌর এলাকার গরীব ১৫শ ৪০ জনের জন্য যাতে প্রতি জনকে ১০ কেজি করে চাল বন্টন করার কথা রয়েছে।
গত ৫ জুলাই হাটহাজারী ইউএনও ও পৌরপ্রশাসক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন এই চাল বিতরণ উদ্বোধন করেন। কিন্তু চাল বিতরণকালে সবাইকে সঠিকভাবে জনপ্রতি ১০ কেজি চাল বন্টনে পরিমাণে কম দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। চাল নিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, তাঁদের কেউ কেউ জনপ্রতি ৮কেজি, কেউবা সাড়ে ৮ কেজি চাল পেয়েছেন। আবার কেউ কেউ ৯ কেজি বা তার কিছু বেশী চাল পেয়েছেন।
এদিকে গত তিনদিন ধরে বন্টনকৃত চালপ্রাপ্তদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিলে বিষয়টি জনমুখে প্রচার পায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সাংবাদিকরা সরেজমিনে চাল বন্টন পরিদর্শন করতে গেলে কথা হয় চাল বন্টনের দায়িত্বে থাকা পৌরসভা লাইসেন্স পরিদর্শক আকরাম হোসেনের সাথে। তিনি জানান, ১৬ হাজার ৩শত কেজি চাল থেকে ৯০০ কেজি চাল জেলেদের দেওয়া হয়েছে। বাকী ১৫৪০ জনের মধ্যে ১৪৫৮ জনের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এরপর আরো ৮২ জন এখনো চাল নেয়নি। তিনি পৌরসভায় মজুদকৃত বন্টন করা হয়নি এমন চালের বস্তা প্রায় ২৮টি বলে স্বীকার করেন।
তবে পৌরসভায় ৩৩৭ বস্তায় ১৬ হাজার ৩ শত কেজি যে চাল এসেছে সে হিসেবে প্রতি বস্তায় গড়ে চালের পরিমাণ ৪৮.৩৬৭ কেজি। এখনো পৌরসভায় ২৮ বস্তা চালের মজুদ থাকলে সে হিসেবে এখনো নুন্যতম ১৩শ ৫৪ কেজি চাল মজুদ রয়েছে। চাল না নেওয়া ৮২ জনকে জনপ্রতি ১০ কেজি চাল দেওয়া হলে যা দাঁড়াবে তা হলো ৮শ ২০ কেজি। হিসেব অনুযায়ী আরো প্রায় সাড়ে ৫শ কেজি চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। তাইতো অসহায-দুস্থরা প্রশ্ন তুলেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এ চাল এখন কি করবেন? নাকি তাঁরা এ চাল নিজেদের মধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে নিবেন।
এ সময় পৌরসভা কার্যালয়ে উপস্থিত এক স্থানীয় আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌর কমিটির সদস্য সাংবাদিকরা চাল বিতরণের তথ্য সংগ্রহ করার বিষয়টি সংবাদকর্মীদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কিনা তা জানতে চেয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে (লাইসেন্স পরিদর্শক আকরাম হোসেন) গালমন্দ করেন।এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে হাটহাজারী নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন এ প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।