2736655110_03174c71ba

দৈনিকবার্তা-মাদারীপুর, ৯ জুলাই:  ঈদ এগিয়ে আসছে। এই সময়ে ঘুম হারাম হয়ে গেছে মাদারীপুরের দর্জিপাড়াগুলোয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের পছন্দের ডিজাইনের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন তারা। এবারও এ চিত্রের ব্যতিক্রম নেই।এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা শহরের নিউমার্কেট, আমিন সুপার মার্কেট,সানিম প্লাজা,ভুইয়া মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেট ও মহল্লার দর্জিরা জানান, এখন সবাই বেশ ফ্যাশন সচেতন, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা।

তবে মেয়েরাই সাধারণত ঈদের পোশাক তৈরিতে দর্জি দোকানগুলোয় বেশি ভিড় করে থাকেন। এরই মধ্যে অনেক দর্জি দোকানে অর্ডার নেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।পুরান বাজারের একাধিক দর্জি দোকানি বলেন, পাড়া-মহল্লার দর্জি দোকানে এখনো অর্ডার নেওয়া হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, জেলা শহরের পুরান বাজারের নিউমার্কেট সহ সব মার্কেটের টেইলার্সের কারিগর, মাস্টার, ম্যানেজারসহ সবাই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঈদ সামনে রেখে অনেক দোকানে নতুন কর্মচারীও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মাদারীপুরে নারীদের পোশাক সেলাইয়ের অন্যতম নিতু টেইলার্স, সাজ টেইলার্স, মিতা টেইলার্সে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকেই পোষাক বানাতে আসেন। ব্যবসায়ীরা জানান, কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে রাজধানীর বাইরের এসব অর্ডারি পোশাক সরবরাহ করা হয়।এদিকে ছেলেরাও পছন্দসই পোশাক তৈরিতে ছুটছেন দর্জি বাড়িতে। এ বিষয়ে পুরান বাজারের ভুইয়া মার্কেটে ডি.এম টেইলার্সের স্বত্তাধিকারী মাস্টার আ. রহিম বলেন, ঈদ ঘিরে ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এ ক্ষেত্রে যারা করপোরেট চাকরি করেন, তাদের আনাগোনাই একটু বেশি থাকে।

দর্জি খাতের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের সংগঠন মাদারীপুর দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকর্তারা জানান, দর্জি ব্যবসা এখন জমজমাট। ৮-১০ বছর ধরে তৈরি পোশাকের কদর বেড়ে যাওয়ায় এ ব্যবসায় কিছুটা ভাটা পড়লেও ঈদ ঘিরে প্রতিবারই চাপ বাড়ে। পোশাক তৈরির মজুরি বেড়ে গেছে। ফলে মানুষ রেডিমেট পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। তবে মজুরি বেশি হলেও শৌখিন ও ফ্যাশনসচেতনরা এখনো শরীরের মাপ অনুযায়ী পোশাক তৈরি করাতে দর্জিবাড়ি আসছেন। তিনি জানান, বর্তমানে টেইলারিং ব্যবসায় অনেক বড় বড় পুঁজি চলে এসেছে।

টেইলার্স মালিকদের কয়েকজন জানান, কয়েক বছর ধরেই এ শিল্পের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য রয়েছে। ফলে মজুরির অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ হারে গ্রাহককে ভ্যাট দিতে হচ্ছে। এসব কারণে নামি টেইলার্সে মজুরি একটু বেশি। একটি শার্ট তৈরিতে নামি টেইলার্সে মজুরি নেওয়া হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। অন্যান্য টেইলার্সে নেওয়া হয় ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। প্যান্টের মজুরি নামি টেইলার্সে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। অন্যান্য টেইলার্সে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সুটের মজুরি ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। দোকানভেদে এর পরিমাণ আরও বেশি হয়ে থাকে। একইভাবে মহিলাদের পোশাক তৈরিতেও উচ্চ মজুরি নেওয়া হচ্ছে। সালোয়ার-কামিজের মজুরি (সাধারণ মানের) ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা। ডিজাইন অনুযায়ী এই মজুরি দেড় থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি পায়। পেটিকোটের মজুরি ২৫০ থেকে ২৮০, ব্লাউজের ৩৫০ থেকে ৪৫০ এবং সেমিজের ১৭০ থেকে ২৫০ টাকা।