Image - Holy Hajj & new BOMB blast by Abdul Gaffar  Chowdhury - 02

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৮ জুলাই ২০১৫: “আল্লাহর ৯৯ নাম কাফেরদের দেবতাদের নাম ছিল”- এমন কাল্পনিক বক্তব্যের কৈফিয়ত দিতে গিয়ে উল্টো আরেকটি বোমা ফাটিয়ে বসলেন বয়োবৃদ্ধ লেখক-কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী। নিউইয়র্কের টাইম টেলিভিশনকে দেয়া ভিডিও বক্তব্যে কোন যৌক্তিক কারণ ও রেফারেন্স ছাড়াই তিনি বলেন, “এমনকি হজ্জও ইসলামের হজ্জ নয়, দুই হাজার তিন হাজার বছর আগে কাফেরদের দ্বারা প্রবর্তিত হজ্জ”। আল্লাহর ৯৯ নামের সাথে কাফেরদের জগাখিচুড়ি পাকিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসার পর হজ্জের ইতিহাস নিয়ে প্রদত্ত আজগুবি তথ্যের কোন ব্যাখ্যা অবশ্য তিনি এখনো কোথাও দেননি।

স্যোশাল মিডিয়াতে অনেকেই তাই জানতে চাইছেন, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানের রচয়িতা ‘প্রিয় গাফফার ভাই’-এর আসলে হয়েছেটা কি ? তিনি কি বার্ধক্যজণিত নতুন কোন জটিলতায় আক্রান্ত ? শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বেঁধেছে এমনটা প্রায়শঃই তিনি বলে থাকেন তাঁর কাছের লোকদের। কিন্তু এবার নিউইয়র্কে গিয়ে রোজা-রমজানের দিন তাঁর এমন কি হলো যে, সবকিছু বাদ দিয়ে ধর্মীয় ‘একাডেমিক’ আলোচনার নামে জাকির নায়েককেও ছাড়িয়ে গেলেন ! অনেকেরই প্রশ্ন, নিউইয়র্কের বেকুব দর্শক-শ্রোতাদের সামনে ভরা মজলিসে সেদিন আবদুল গাফফার চৌধুরী আসলেই কি কোন ‘একাডেমিক’ আলোচনা করেছিলেন ?

যিনি নিজে বলছেন, ছোটবেলায় বরিশালের মাদ্রাসায় পড়ে ইসলামী জ্ঞান তিনি অর্জন করেছেন, সেখানে ইসলামের ইতিহাস নিয়ে ‘একাডেমিক’ আলোচনার কতটা যোগ্য আবদুল গাফফার চৌধুরী, এই কানাঘুষাও এখন চলছে প্রকাশ্যে। টাইম টেলিভিশনর ক্যামেরায় নিজেকে উঁচুমানের ‘মুসলমান’ দাবী করা এই মানুষটি বৃদ্ধ বয়সে যেভাবে পাগলের প্রলাপ বকেছেন হজ্জের ইতিহাস বয়ান করতে গিয়ে, তাতে তাঁর বিশেষ শ্রেণীর ভক্ত-অনুরাগীদের একটি বড় অংশও যারপরনাই ক্ষিপ্ত হয়েছেন। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, হিন্দু-বৌদ্ধ-ইহুদী-খ্রিষ্ঠান সব ধর্মের পন্ডিতরাই যেখানে জানে ‘নবী ইব্রাহিম’ প্রবর্তন করেছিলেন হজ্জ, সেখানে আমাদের ‘প্রিয় গাফফার ভাই’ হজ্জের ক্রেডিট কাফেরদের দিয়ে দিনকে বানাচ্ছেন রাত !

আবদুল গাফফার চৌধুরীর কাছে অনেকেই সবিনয়ে জানতে চেয়েছেন, হজ্জের প্রবর্তক তথা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম(আ) কি তাহলে অমুসলিম বা ‘কাফের’ ছিলেন ? এই প্রশ্নের উত্তর যদি ‘না’ হয় তবে ‘হজ্জ কাফেরদের প্রবর্তিত’ তার অনুকুলে প্রামাণিক দলিল নিয়েই আগামীতে ক্যামেরার মুখোমুখি হবেন আবদুল গাফফার চৌধুরী, এমন আশাবাদ তাঁর শুভাকাঙ্খীদের। স্যোশাল মিডিয়াতে অবশ্য আগেভাগেই বলা হচ্ছে, হজ্জের ইতিহাস ইস্যুতেও গোজামিল দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চালাবেন তিনি। কেননা আজীবনই নাকি তিনি ‘মরা মানুষ’ তথা ‘মৃত ব্যক্তির’ রেফারেন্স দিয়ে লেখালেখি করেছেন যাতে রেফারেন্সকৃত ব্যক্তি কোনদিন চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ না পায়।

এদিকে টাইম টেলিভিশনকে দেয়া ভিডিও বক্তব্যে আবদুল গাফফার চৌধুরী গেল ফেব্রুয়ারিতে তাঁর ওমরাহ পালন নিয়ে যে ‘কৌশলী’ তথ্য দিয়েছেন, তার নৈতিক বাস্তবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে জেদ্দা ও লন্ডনে। সৌদি বন্দরনগরী জেদ্দা থেকে বলা হচ্ছে, এ বছর স্থানীয় বাংলা স্কুলের একুশে ফেব্রুয়ারি পালন অনুষ্ঠানে এয়ার টিকেট সহ আনুষাঙ্গিক সুবিধাদি দিয়ে লন্ডন থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল আবদুল গাফফার চৌধুরীকে, যেহেতু তিনি ঐতিহাসিক সেই গানটি লিখেছিলেন। জেদ্দায় অবস্থানকালীন যারা তাঁকে সময় দিয়েছেন, তাদেরই একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যিনি আমাদের এখানে ৫ ওয়াক্ত আজানের সময় অযু-নামাজেরই ধার ধারেননি, তাঁর ওমরাহ পালন নিয়ে ‘নো কমেন্ট প্লিজ’। আবদুল গাফফার চৌধুরী কর্তৃক হজ্জের নতুন ইতিহাস বয়ানের এক্সক্লুসিভ ভিডিও দেখুন :