4545_73599

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৮ জুলাই:  রানা প্লাজা ভবন ধসের ঘটনায় ইমারত আইনে করা মামলায় ছয় পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। একই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় সরকারি চার কর্মকর্তাকে আসামি করার বিষয়ে অনুমতির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে পাঠানো হয়েছে।বুধবার ঢাকার বিচারিক হাকিম শাহিনুর রহমান এ আদেশ দেন। ইমারত আইনে করা মামলার আসামি মর্জিনা বেগম, মাহবুবুর রহমান, ফারজানা ইসলাম, মাহবুব আলম, নান্নু ঠিকাদার ও রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।হত্যা মামলায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ইউসুফ আলী, শহিদুল ইসলাম ও জামসেদুর রহমান এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আওলাদ হোসেনকে আসামি করতে সরকারের অনুমতির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

গত ১ জুন সাভারে রানা প্লাজায় ভবন ধসের ঘটনায় হত্যা মামলা ও ইমারত নির্মাণ আইনে করা মামলায় ওই ভবনের মালিক সোহেল রানাসহ ৪২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।ওই দিন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে এ দুই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর।রানা প্লাজার ভবন ধসে হত্যা মামলায় ৪১ জনকে ও ইমারত নির্মাণ আইনে করা মামলায় ১৮ জনতে আসামি করা হয়েছে। এ হিসেবে দুই মামলার আসামি ৫৯ জন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ১৭ জনের নাম উভয় মামলার অভিযোগপত্রে থাকায় ব্যক্তি হিসেবে আসামি ৪২ জন।মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, তাঁর বাবা আবদুল খালেক, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র রেফাত উল্লাহ প্রমুখ।

মামলা তদন্ত: ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এই শিল্প দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৪ জন নিহত হন। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার মানুষ। মর্মান্তিক এ ঘটনায় মোট পাঁচটি মামলা হয়। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ আইনের ১২ ধারায় সাভার থানায় একটি মামলা করেন। একই দিন সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ একই থানায় আরও একটি মামলা করেন। পুলিশের করা মামলায় রানা প্লাজা ধসে প্রাণহানিকে অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত করে অভিযোগ আনা হয়। এ দুটি মামলা সিআইডি তদন্ত করছে।

এ ছাড়া পোশাকশ্রমিক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শিউলী আক্তার বাদী হয়ে ঢাকা মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে রানা প্লাজা ধসকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করে আরেকটি মামলা করেন। আদালত এই মামলাটিও তদন্ত করতে সিআইডিকে আদেশ দেন।এর আগে সিআইডির তদন্তকারী সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, রাজউক ও পুলিশের করা মামলার তদন্তের সঙ্গে শিউলি আক্তারের অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে।এ ছাড়া ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহিন শাহ পারভেজ ধামরাই থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করেছিলেন। এ দুটি মামলার অভিযোগপত্র আগেই দেওয়া হয়েছে।