দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ০৮ জুলাই ২০১৫: নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১-এর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। পল্লী বিদ্যুতের চেয়ারম্যানের নির্দেশে পুঠিয়া জোনাল দপ্তরের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মজিবুল হক ও নাটোর পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি-১-এর এজিএম রঞ্জন কুমার তদন্ত কাজ পরিচালনা করেন।এসময় পল্লিবিদ্যুতের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিস্যিয়ান সিরাজ উদ্দিনের এক কর্মচারির কাছ থেকে দপ্তরের ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল জব্দ করা হয়। তদন্তে অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়ায় তদন্তকারী দল বাগমারা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওয়ারিং পরিদর্শক বাসুদেব হালদার ও ওয়ারিং মিস্ত্রী সিরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ সংযোগের নামে গ্রাহকদের কাছে থেকে উৎকোচ আদায় ও হয়রানীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পরে এই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাসুদেব হালদারকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নাটোর সদর কার্যালয়ে তাৎক্ষনিক বদলী করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং ওয়ারিং মিস্ত্রী সিরাজ উদ্দিনের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রদত্ত লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়। দালালচক্রের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা নেই। নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বাগমারা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তদন্তকারী দল বাসুদেব ও সিরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিদ্যুত সংযোগ দেওয়ার নামে ঘুষ দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত থাকার প্রমান পাওয়ায় চেয়ারম্যানের বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এছাড়া এই অফিস থেকেও তাদের বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুত সমিতির বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওযার জন্য চেয়ারম্যান মহোদয়ের নিকট সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
উভয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুত সমিতির বিধি মোতাবেক এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । এসময় তদন্তকারী দলের কাছে বাগমারা পল্লী বিদ্যুত অফিসে ঘুষ দুর্নীতি ও মিটার খুঁটি বানিজ্যের সাথে জড়িত কয়েকটি সিন্ডিকেটের প্রায় পনের জন দালালের সিন্ডিকেট দলের সদস্যরা হলেন, হাটগা্েঙ্গাপাড়া এলাকার শহিদুল, রনসিবাড়ির বাচ্চু, তাহেরপুরের নাজিম, দ্বীপপুরের হাফিজ ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লাইনম্যান তাজ ও হারু নাম বেরিয়ে আসে। এসব দালালের সঙ্গে যোগসাজোস করে ওই অফিসের ওয়ারিং পরিদর্শক বাসুদেব হালদার ও ওয়ারিং মিস্ত্রি সিরাজুল ইসলাম ঘুষ বানিজ্যের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলে গত বছরের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌর এলাকার বিভিন্ন গ্রামে সাড়ে দশ হাজার নতুন বিদ্যুত সংযোগ প্রদানের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ঘুষ বানিজ্য করেন।
বাগমারা পল্লী বিদ্যুত সমিতির এক কর্মকর্তার মতে, এই বিশাল অংকের ঘুষ বানিজ্যের সাথে বাসুদেব ও সিরাজসহ ওই ১৫ সিন্ডিকেট সদস্যের বাইরেও বাগমারা ও নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতি কার্যালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও জড়িত আছেন। তাদের মতে বিশাল অংকের এই ঘুষ বানিজ্যের সাথে জড়িত চুনোপুঠিদের শায়েস্তা করার পাশাপাশি রাঘোব বোয়ালদের সনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারলেই বাগমারা পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং সাধারণ গ্রাহক পাবে তাদের কাঙ্খিত সেবা।