দৈনিকবার্তা-কুড়িগ্রাম, ০৮ জুলাই ২০১৫: ফেলানীর বাবা পুনরায় মেয়ের হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) এর নির্বাহী পরিচালক কিরীট রায়ের কাছে কার্যকরী উদ্যোগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে একটি আবেদন জানিয়েছেন৷ বুধবার দুপুরে তিনি এ আবেদন করেন৷
ভারতের কোচবিহারে বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচারের রায়ে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করেছে আদালত৷ ফেলানীর বাবা-মা মেয়ে হত্যার অপ্রত্যাশিত এই রায়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন৷ ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম নুরু জানান, দুই দফা সাক্ষ্য দেয়ার পরও তার মেয়ের হত্যার ন্যায্য বিচার পায়নি তিনি৷ তিনি এ রায় প্রত্যাখ্যান করেন৷ তার মতে অমিয় ঘোষের ফাঁসি হওয়া উচিত্ ছিল৷ তানা করে ভারতের বিএসএফ বিচারের নামে তামাশা করেছে৷ তাই ভারত সরকারের কাছে সঠিক বিচার পাওয়ার আশায় উলি্লখিত সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আবেদন পত্রে ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম জানান, ৭ জানুয়ারি ২০১১ সালে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের আনর্্তজাতিক সীমানা পিলার ৯৪৭ এর কাছে বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে নির্মমভাবে ফেলানী নিহত হয়৷ এ ঘটনার পর বিএসএফ-এর আদালতে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ গঠন করে৷ ২ বত্সর ৮ মাস পর ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ রায় দেন গঠিত আদালত৷ সেই রায় প্রত্যাখ্যান করে ভারত সরকারের কাছে ফেলানী হত্যার পুনর্বিচার চেয়ে আবেদন করলে বিএসএফ মহাপরিচালক পুনর্বিবেচনার আদেশ দিয়েছিলেন৷ এরপর গত বৃহস্পতিবার বিএসএফ কোর্ট অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে আবারো নির্দোষ বলে পুনরায় একই রায় দেন৷ তিনি আরো বলেন,আসামি বিএসএফ অমিয় ঘোষ ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করার কথা আদালতে স্বীকার করার পরও সে নির্দোষ প্রমানিত হওয়ায় আমি বিস্মিত ও মর্মাহত৷ আমার মেয়ের হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় বিএসএফ যেহেতু সরাসরি জড়িত যে কারণে এর দায় ভারত সরকার তথা ভারতীয় জনগণের৷ এ ব্যাপারে ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থা মাসুম উচ্চ আদালতে মামলাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আইন সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র উপ-পরিচালক টিপ সুলতান বলেন, ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম আমাদের মাধ্যমে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) এর নির্বাহী পরিচালক কিরীট রায়ের কাছে ভারতের উচ্চ আদালতে মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে একটি আবেদন করেছে৷ আমরা সার্বক্ষানিক তাকে আইনি সহায়তা প্রদান করব৷ বাংলাদেশ আইন সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট অবন্তী নুর জানান, আমরা ফেলানী হত্যা মামলার অধিকাংশ কাগজ-পত্র জোগাড় করে ফেলেছি৷ আইনি সহায়তার জন্য ভারতীয় দূতাবাস এবং পরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছি৷ আমরা ফেলানী হত্যা মামলার ন্যায় বিচারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবো৷