দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬ জুলাই ২০১৫: পোল্যান্ডের ট্যুরিজম ফিল্ম ফেস্টিভাল কর্তৃপক্ষকে দিনে-দুপুরে ব্ল্যাকমেইল করে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ডকুমেন্টারি নিজের নামে চালিয়ে দিয়ে তথাকথিত ‘অ্যাওয়ার্ড’ বাগিয়ে নেয়ার পর অপকর্ম ঢাকতে মইনুল হোসেন মুকুল এবার লন্ডনে বসে নতুন জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতারণার ষোলকলা পূর্ণ করতে খোদ রেড ডট মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের প্রশংসাপত্রই জালিয়াতি করে বসেছেন বহুল সমালোচিত এই ভিডিও এডিটর। একইসাথে বানোয়াট ক্রেডিট লাইনের হোমমেইড ডিভিডি ও ভূয়া কাগজপত্র সহ সম্প্রতি তিনি হাজির হন লন্ডনে আয়োজিত ‘প্রায় জনশূন্য’ প্রেস কনফারেন্সে।
ট্যুরিজম ডকুমেন্টারি ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ এর সফল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রেড ডট মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের ইস্যুকৃত ‘অ্যাপ্রিসিয়েশন লেটার’ যেভাবে জালিয়াতি করেছেন মইনুল হোসেন মুকুল, তার দৃশ্যমান প্রমাণাদি ইতিমধ্যে তুলে ধরেছেন রেড ডটেরই এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জিয়াউল পাইকার জুয়েল। নিজের স্বাক্ষরিত ডকুমেন্ট জালিয়াতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সুচতুর মইনুল হোসেন মুকুল অনেক দিন ধরেই আমাকে খুব বিরক্ত করে আসছিলেন যাতে আমরা তাকে রেড ডটের তরফ থেকে একটি প্রশংসাপত্র দেই। তিনি আমাদেরকে বার বার বোঝান বাংলাদেশে ও লন্ডনে তার হতাশাগ্রস্ত জীবনের কথা”।
“আমি শুরু থেকে তাকে বলে আসছিলাম রেড ডটের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গাজী শুভ্রই একমাত্র কর্মকর্তা যিনি এই ধরণের লেটার ইস্যু করার ক্ষমতা রাখেন। মইনুল হোসেন মুকুল অনেকটা কান্নাকাটি করে আমাদেরকে আরো বলেন, তার এবং তার কোম্পানির বিরুদ্ধে যেহেতু অনেক জালিয়াতির মামলা ঝুলছে তাই নতুন করে ফ্রেশ জীবন শুরু করতে তিনি অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাবেন এবং এর জন্য রেড ডটের পক্ষ থেকে যাতে এটলিস্ট একটি লেটার তাকে দেয়া হয়”। ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ নির্মাণের সময় শ্যুটিংয়ে একজন ভলান্টিয়ার হিসেবে সামান্য সময় দেয়ায় প্রোডাকশনের ১৫৬ জনের একজন হিসেবে মইনুল হোসেন মুকুল তার নামে রেড ডটের ঐ ‘অ্যাপ্রিসিয়েশন লেটার’ ইস্যু করাতে সক্ষম হন এভাবেই।
রেড ডটের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জিয়াউল পাইকার জুয়েল সুষ্পষ্টভাবে আরো বলেন, “মইনুল হোসেন মুকুল অতি সম্প্রতি আমাদের ঐ লেটারের কনটেন্ট পরিবর্তন করে নিজের নামের পাশে ‘ডিরেক্টর’ বসিয়ে জঘন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন, যা তার করা আরো একটি জালিয়াতি ও প্রতারণামূলক অপরাধ”। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, মইনুল হোসেন মুকুল নিজেকে ‘ব্রিটিশ-বাংলাদেশি’ পরিচালক হিসেবে পরিচয় গিয়ে সম্প্রতি পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ট্যুরিজম ফেস্টিভালে হাজির হন ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ডকুমেন্টারির নির্মাতা হিসেবে। নেক্কারজনক এই জালিয়াতির প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দেন রেড ডটের চেয়ারম্যান, স্বনামধন্য সঙ্গীতশিল্পী মাহফুজ আনাম জেমস ও এমডি গাজী শুভ্র সহ অন্যান্য কলাকুশলীরা।
এদিকে ‘পরিচালক’ হতে গিয়ে রীতিমতো ‘ভিলেন’ বনে যাওয়া মইনুল হোসেন মুকুল লন্ডনে সংবাদ সম্মেলনে রেড ডটের যে ‘অ্যাপ্রিসিয়েশন লেটার’ দেখিয়েছেন, তার কপি ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও ‘এডিটেড এন্ড ফ্যাব্রিকেটেড’ প্রমাণিত হয়েছে। প্রতারণায় তড়িঘড়ি করতে গিয়ে ‘কনটেন্ট’ পরিবর্তন করার সময় হুবহ ফন্ট বসাবার সময় বের করতে পারেননি মইনুল হোসেন মুকুল। প্রোডাকশনের ছবিতে নিজের নাম জুড়ে দিয়ে ভূয়া ‘ক্রেডিট লাইন’ বানিয়ে হোমমেইড ডিভিডি প্লে করে দেখিয়েছেন লন্ডনে। ডকুমেন্টারিতে অংশ নেয়া অপেশাদার ব্রিটিশ মডেল ভিকি কার্টারকে নগদ পাউন্ড ধরিয়ে দিয়ে নিজের স্বপক্ষে মিথ্যা ভিডিও বিবৃতি অবশ্য সযত্নেই সাজিয়েছেন মইনুল হোসেন মুকুল, এমন অভিযোগও এখন ‘ব্রিটিশ-বাংলাদেশি’ এই প্রতারকের বিরুদ্ধে।
‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ স্ক্যান্ডালের মূলহোতা মইনুল হোসেন মুকুল কর্তৃক ডকুমেন্ট জালিয়াতির আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছেন রেড ডট মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জিয়াউল পাইকার জুয়েল। প্রমাণাদির সংশ্লিষ্ট লিংক :