দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ জুলাই ২০১৫: বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী মুহাঃ ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক বলেছেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানাসমূহের মোট ৩৭০ দশমিক ৮২৪ একর জমি এ পর্যন্ত বিক্রয় করা হয়েছে৷তিনি রোববার সংসদে সরকারি দলের সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন৷মন্ত্রী বলেন, ওই জমির মধ্যে ঢাকেশ্বরী কটন মিলস লিঃ-এর ৪৮ দশমিক ০৫ একর, ঢাকেশ্বরী কটন মিলস লিঃ-এর ৫১ দশমিক ০৮ একর, আদর্শ কটন স্পিনিং এন্ড উইভিং মিলস লিঃ, ২৬ দশমিক ২২ একর, বাংলাদেশ টেঙ্টাইল মিলস লিঃ-এর ১৫ দশমিক ৬৫ একর, চিশতী টেঙ্টাইল মিলস লিঃ-এর ১৬ দশমিক ৪৯ একর, মোহিনী মিলস লিঃ-এর ২৯ দশমিক ৩৬ একর, মসলিন কটন মিলস লিঃ-এর ৮১ দশমিক ১৪ একর, মুন্নু টেঙ্টাইল মিলসের ১৩ দশমিক ০৮ একর এবং অলিম্পিয়ার টেঙ্টাইল মিলসের ২৩ দশমিক ৪২ একর রয়েছে৷
তিনি বলেন, এছাড়া আরও বিক্রিত জমির পরিমাণ ন্যাশনাল কটন মিলসের ৮ দশমিক ৩৫ একর, মেঘনা টেঙ্টাইল মিলসের ৬ দশমিক ৮৩ একর, ইঞ্জিনিয়ারিং টেঙ্টাইল মিলসের ৬ দশমিক ৩৩ একর, সাতরং টেঙ্টাইল মিলসের ৪ দশিক শূন্য একর, পাইলন ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ-এর ৩ দশমিক ৭৪ একর, ক্যালোলিন সিল্ক মিলসের ২ দশমিক ৬১ একর, তালিকা উলেন মিলসের ৩ দশমিক ৯০ একর, আহমেদ বাওয়ানী টেঙ্টাইল মিলসের ২৭ দশমিক ৯০ একর, আহমেদ বাওয়ানী টেঙ্টাইল মিলের ১ দশমিক ৫০৪ একর, চট্টগ্রামস্থ আমিন জুট মিলের মুরাদপুর মৌজায় মুরাদপুর আবাসিক এলাকায় দ্বিতীয় তলা ভবনসহ শূন্য দশমিক ৫১ একর, চট্টগ্রামস্থ এমএম জুট মিলের এমএম ভবনসহ শূন্য দশমিক ২১ একর এবং চট্টগ্রামস্থ গালফ্রা হাবিব লিঃ’র শূন্য দশমিক ৪৫ একর রয়েছে৷ তিনি একই প্রশ্নের জবাবে আরো জানান, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বস্ত্র রফতানি করেছে৷ একই সময়ে ২ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বস্ত্র আমদানি করেছে৷ রফতানি আমদানির অনুপাত ছিল ৯ দশমিক ১৷
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী মুহাঃ ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক বলেন, সরকার দেশের অভ্যনত্মরে পাট পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে৷তিনি সংসদে সরকারি দলের মো. আবুল কালামের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন৷মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দেশের অভ্যনত্মরে পাট পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি ও সিনথেটিকস পণ্যের ব্যবহার পরিহার করে পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে ‘পণ্যের মোড়কীকরণে পাট পণ্যের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ প্রণয়ন করেছে৷
মুহাঃ ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক বলেন, আইনটি বাসত্মবায়নের লক্ষ্যে এ সংক্রানত্ম পোস্টার, লিফলেট, স্টিকার মুদ্রণপূর্বক চাতালকল, চালের আড়ত, পরিবহন ও জনবহল স্থানে পরিদর্শন এবং জেলা প্রশাসকবৃন্দের মাধ্যমে সারাদেশে স্কুল-কলেজ ও অন্যান্য সংস্থা প্রতিষ্ঠানের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে৷ এছাড়া পত্রিকা ও টেলিভিশনে নিয়মিত বিজ্ঞাপন প্রচার এবং মোবাইলে এসএমএস’র মাধ্যমে পাট পণ্যের ব্যবহারে বিষয়টি জনগণকে অবহিত করা হয়েছে৷পাট মন্ত্রী বলেন, পাটের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে সকল মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিভিন্ন দপ্তর/ সংস্থায় পত্র দিয়া উল্লেখিত বিষয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে৷ এছাড়া আনত্মঃমন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/ দপ্তর/ সংস্থার প্রতিনিধি ও স্টেকহোল্ডারগণের নিকট পাটের বহুমুখী পণ্যের পরিচিতি তুলে ধরে এর ব্যাপক প্রচার ও ব্যবহার বৃদ্ধির কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়৷তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্পসমূহে জুট জিও-টেঙ্টাইল’র অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আগামী ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে নির্মাণ উপকরণ হিসেবে রেইট সিডিউলে অনত্মর্ভুক্তকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷মন্ত্রী বলেন, দেশীয় ও আনত্মর্জাতিকভাবে পাট পণ্যের ব্যবহার সমপ্রসারণের লক্ষ্যে সরকার ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি)’র মাধ্যমে নতুন নতুন বহুমুখী পাট পণ্য উদ্ভাবন, দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন মেলায় প্রদর্শন ও বিপণনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে৷ এক্ষেত্রে জেডিপিসি সম্ভাব্য উদ্যোক্তাগণকে প্রশিক্ষণ প্রদান, উপকরণ সরবরাহ এবং তাদের উত্পাদিত পণ্য বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শন ও বাজারজাতকরণে সহায়তা প্রদান করে থাকে৷পাট মন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে পাটের গুরুত্ব বিবেচনায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজসমূহে জুট-জিও-টেঙ্টাইল, পাট ও পাটপণ্যে বহুমুখী ব্যবহার এবং পাট সংশিস্নষ্ট আইন কানুনের উপর একটি পাঠ্যক্রম সনি্নবেশ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে অনুরোধ করা হলে পাঠ্যক্রমে অনত্মর্ভুক্তকরণের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে৷তিনি বলেন, পাট পণ্যের অভ্যনত্মরীণ ব্যবহার ও চাহিদা বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পাটের তৈরি ব্যাগে বই বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিবেচনা করছে৷মন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহকে অনুরোধ জানানো হয়েছে৷