দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৫ জুলাই: বিচার বিভাগ সম্পর্কে কেউ যদি অযাচিত, মানহানিকর বক্তব্য দেয় সেক্ষেত্রে বিচার বিভাগ তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না।বিচার বিভাগের হাত এতো খাটো না, যে এ ধরনের অহেতুক বক্তব্য সব সময় হজম করবে।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের জামিন শুনানিতে আদালতে এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।ফখরুলের জামিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি কী মন্তব্য করেছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রধান বিচারপতি খুব অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধান বিচারপতি যেটা বলেছেন বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে সবার প্রতি সমান বিচার, সমান আচরণ করে যাচ্ছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলছেন, তারপরেও কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিচার বিভাগ নিয়ে যে সমস্ত বিরূপ মন্তব্য করেন এগুলো খুবই দুঃখজনক। কোনো আদেশ যখন তাদের বিরুদ্ধে যায় তখন তারা এ সমস্ত মন্তব্য শুরু করেন। প্রধান বিচারপতি আদালতের পক্ষ থেকে খুব উষ্মা প্রকাশ করেছেন এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি বলেন, তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে যখনই কোনো আদালত সম্বন্ধে, বিচারক সম্বন্ধে কোনো রকম অভিযোগ এসেছে উনি সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরো বলেন, শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলতে চেয়েছেন নিম্ন আদালতের বিচারকরা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারছেন না। প্রধান বিচারপতি এটাকে সম্পূণরূপে ভিত্তিহীন বলেছেন। বলেছেন এটা ঠিক না। বরং মাসদার হোসেন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্টের অধীনে। এ সমস্ত অহেতুক মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে সব মহলকে অনুরোধ করেছেন। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখা সবার দায়িত্ব। বিচার বিভাগকে সমস্ত বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা উচিৎ।
প্রসঙ্গত, শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেছিলেন, বিচারকরা এখন আরো বেশি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেন। বিচারকদের আপসারণের ক্ষমতা সংসদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মানে বিচার ব্যবস্থাকে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশে ন্যায় বিচার নেই, আইনের শাসন নেই। কারণ আমরা দেখেছি সরকারি দল হলে এক রকম বিচার হয়, আর বিরোধী বা সাধারণ মানুষের বেলায় আরেক রকম বিচার হয়। এ বিচার ব্যবস্থা চলতে পারে না। অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন আইনের চোখে সবাই সমান।
রোববার আদালত থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বিচার বিভাগ সম্বন্ধে প্রথমে আমাদের মাননীয় প্রধান বিচারপতি বললেন যে, বিচার বিভাগ স্বাধীন না, বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রিত বিচার বিভাগের ব্যাপারে এ ধরনের মন্তব্য করার সময় আপনাদের সতর্ক মতামত দেয়া উচিৎ। আমি বললাম, নিম্ন আদালত কাগজে কলমে সংবিধানে স্বাধীন থাকলেও নিম্ন আদালত স্বাধীন না। সেখানে রাজনৈতিক প্রচার রয়েছে। তখন প্রধান বিচারপতি বললেন, আমি অভিযোগ কেন্দ্র খুলেছি। আমি ওয়েবসাইট রেখেছি।
আমি বলেছিলাম, ১১শ বিচারক সারা বাংলাদেশে বসে। তারা কে কী করে, তার পারফমেন্স এখানে বসে জনবলের অভাবে ডিজিটাল পদ্ধতির অভাবে প্রধান বিচারপতির পক্ষে জানা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে নিম্ন আদালতে রাজনৈতিক প্রচারে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না।তার জবাবে উনি বলেছেন, আমি ওয়েবসাইট করেছি, অভিযোগ কেন্দ্র করেছি যখনই কোনো অভিযোগ পাই সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
খন্দকার মাহবুব বলেন, আমরা প্রথমে বলেছি, আপনি প্রধান বিচারপতি হওয়ার পরে অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। আপনার বিভিন্ন বক্তব্য দেখে আমরা আশাবাদী। মনে রাখতে হবে, বিচার বিভাগের অতীত ইতিহাস ভালো না। গণতন্ত্র রক্ষায় বিচার বিভাগের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়নি। সে কারণে অতীতে অনেক ঘটনা ঘটেছে। তার ফলে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুন্ন হয়েছে। কিন্তু আমরা আশাবাদী আপনি আসার পরে পরিবর্তন শুরু হয়েছে। পরিবর্তনের হাওয়া চলতে থাকবে। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে। এরপর উনি আমাকে বললেন, আপনি যদি এ কথা বলেন- আপনার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেবো
ফখরুলের জামিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি কি মন্তব্য করেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রধান বিচারপতি খুব অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে সবার প্রতি সমান বিচার, সমান আচরণ করে যাচ্ছেন। তারপরেও কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিচার বিভাগ নিয়ে যে সমস্ত বিরূপ মন্তব্য করেন সেগুলো খুবই দুঃখজনক এবং কোনো আদেশ যখন তাদের বিরুদ্ধে যায় তখন তারা এ সমস্ত মন্তব্য করা শুরু করেন। এটি নিয়ে পধান বিচারপতি আদালতের পক্ষ থেকে খুব উষ্মা ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।প্রধান বিচারপতি বলেছেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যখনি কোনো আদালত সম্পর্কে, বিচারক সম্পর্কে কোনো রকম অভিযোগ এসেছে, তিনি সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলতে চেয়েছেন, নিম্ন আদালতের বিচারকরা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারছেন না। প্রধান বিচারপতি এটাকে সম্পূণরূপে ভিত্তিহীন বলেছেন। বলেছেন, এটা ঠিক না। বরঞ্চ মাসদার হোসেন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্টের অধীনে। এ সমস্ত অহেতুক মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে সব মহলকে অনুরোধ করেছেন প্রধান বিচারপতি। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখা সবার দায়িত্ব। রাজনৈতিক নানা রকম নেতৃত্ব যে দলে থাকুন না কেন, বিচার বিভাগকে সমস্ত বিতর্কের উর্ধ্বে রাখা উচিত।
বিচার বিভাগের হাত অনেক লম্বা প্রধান বিচারপতির এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি যেটা বলতে চেয়েছেন, যে বিচার বিভাগ সম্পর্কে যদি এই অযাচিত মানহানিকর নানা রকম বক্তব্য দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে বিচার বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না। এবং বিচার বিভাগের হাত এতো খাটো না যে, এ ধরনের অহেতুক বক্তব্য সব সময় হজম করবেন।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, বিচারকরা এখন আরো বেশি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেন। বিচারকদের আপসারণের ক্ষমতা সংসদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মানে বিচার ব্যবস্থাকে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।তিনি বলেন, দেশে ন্যায়বিচার নেই, আইনের শাসন নেই। কারণ, আমরা দেখেছি, সরকারি দল হলে এক রকম বিচার হয়, আর বিরোধী দল বা সাধারণ মানুষের বেলায় আরেক রকম বিচার হয়। এ বিচার ব্যবস্থা চলতে পারে না।
অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন আইনের চোখে সবাই সমান।খন্দকার মাহবুব বলেন, আমরা প্রথমে বলেছি, আপনি প্রধান বিচারপতি হওয়ার পরে অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। আপনার বিভিন্ন বক্তব্য দেখে আমরা আশাবাদী। মনে রাখতে হবে, বিচার বিভাগের অতীত ইতিহাস ভালো না। গণতন্ত্র রক্ষায় বিচার বিভাগের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার ব্যবহার করা হয়নি। সে কারণে অতীতে অনেক ঘটনা ঘটেছে। তার ফলে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুন্ন হয়েছে। কিন্তু আমরা আশাবাদী, আপনি আসার পরে পরিবর্তন শুরু হয়েছে। পরিবর্তনের হাওয়া চলতে থাকবে। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবেন।এরপর তিনি আমাকে বললেন, আপনি যদি এ কথা বলেন আপনার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেবো। আমি বলছি, আবারো বলছি, অধস্তন আদালত কাগজে-কলমে স্বাধীন।