দৈনিকবার্তা-লক্ষ্মীপুর, ৪ জুলাই: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের গোরারবাগ গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের পুত্র ও ৩ টি মামলার ওয়ারেন্ট আসামী অহিদ আলম (২৮) এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, চুরি সহ একাধিক অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের সামনে দিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরা ফেরার করার পর তাকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছেনা বলে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ।
এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয় লোকজন। আদালত ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি, চুরি সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে অহিদ আলমের বিরুদ্ধে সদর থানা ও আদালতে একাধিক ৪-৫ টি মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে সম্প্রতি আদালত জিআর ৮২৭/১১, জিআর ৬৮৭/১৩, সিআর ১১৭৭/১৫, এই ৩টি মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে। ইতিমধ্যে ওয়ারেন্ট আদেশ কপি গুলো সদর থানায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে গ্রেফতারের কোন উদ্যোগ নেয়নি। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, গত ৪/৭/২০১৪ ইং তারিখে দিঘলী ইউনিয়নের রমাপুর গ্রামের মমিন উল্যার পুত্র আলাউদ্দিন বাড়িতে ঘর নির্মাণ করতে গেলে সন্ত্রাসী অহিদ আলম তার দলবল ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আলাউদ্দিনের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।
চাঁদা না দেওয়ায় অস্ত্র দিয়ে গুলি করার হুমকি দেয় অহিদ আলম। এসময় চাঁদা না দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা তার বাগানের ৫০ হাজার টাকার গাছ পালা সহ অন্যান্য মালামালের ক্ষতি সাধন করে এবং আলাউদ্দিনের উপর এলোতাপাতাড়ি ভাবে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন আলাউদ্দিন কে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় আলাউদ্দিন বাদী হয়ে অহিদ আলমসহ ৬ জনকে আসামী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন যার নং সিআর-১১৭৭/১৪ ইং।
অপর দিকে গত ১৯/০৮/২০১৩ ইং তারিখে একই এলাকার মো: রিয়াজ উদ্দিন নামে এক আইনজীবী সহকারী কে ১ লাখ টাকার চাঁদার দাবীতে অহিল আলম দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে অপহরণ করে। পরে তাকে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করলে ওই এলাকার মহাসিন নামে এক ব্যাক্তি ২০ হাজার টাকা বিনিময়ে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রিয়াজ উদ্দিন কে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে অহিদ আলম কে ১ নং আসামীসহ ৭ জনকে এজাহারভুক্ত করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন যার স্মারক নং ৯০২, তাং ২২/০৮/১৩, জিআর ৬৮৭/১৩,। এ ছাড়া একই ইউনিয়নের কাঠালী গ্রামের আমিন উল্যার পুত্র মজিবুর রহমানের কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে । দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় অহিদ আলম সহ ১০/১২ জন সন্ত্রাসী গত ২৫/১২/২০১১ ইং তারিখে রাতে বাড়িতে প্রবেশ করে মজিবুর রহমানের কাছে চাঁদা দাবী করে চাঁদা না দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা তাকে দা, ছেনী, লাঠি সহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করে। এসময় সন্ত্রাসীরা তার বসতঘর থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা, স্বর্ণ অলংকার সহ প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
পরে এ ঘটনার পরের দিন মুজিবুর রহমানের পিতা আমিন উল্যা বাদী হয়ে অহিদ আলম সহ ১০ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে যার নং ৮২৭/১১। এ ছাড়াও চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন, মটরসাইকেল ছিনতাই সহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে ওহিদ আলমের বিরুদ্ধে। তার অত্যাচারে ওই এলাকার আম্বিয়া বেগম, প্রবাসী মামুন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ গত সোমবার ২৯ জুন একই এলাকার প্রবাসী মো: বাবুর কাছ থেকে ১ লাখ চাঁদা দাবী করে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দাসেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মো: জহিরুল ইসলাম জানান, অহিদ আলমের বিরুদ্ধে ৩ টি ওয়ারেন্ট আছে বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি ফাঁড়িতে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট কপি আসে তা হলে অবশ্যই তা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।