দৈনিকবার্তা-লালমনিরহাট, ১ জুলাই: ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা ও সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটে বন্যা দেখা দিয়েছে। তিস্তার পানিতে জেলার প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। বুধবার সকাল থেকে নদী গুলোর পানি বাড়তে শুরু করে। হাতিবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারেজ দোয়ানী পয়েন্টে বিপদ সীমার ২১ সেঃ মি ঃ উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।
পাউবো সুত্র জানায়, তিস্তা পাড়ের লোক জনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। ভারত গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। প্রচন্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারনা যাচ্ছে না। পানি গতি নিয়ন্ত্রন করতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটই খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে তিস্তার পানিতে বহুল আলোচিত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা- দহগ্রাম, হাতিবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার চর এলাকার ২৫ গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার একর আমন ধানের ক্ষেতসহ অনেক ফসলী ক্ষেত তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে।
হাতিবান্ধা উপজেলার ধুবনী গ্রামে ভেসি বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এ বাধঁ ভেঙ্গে গেলে তিস্তার পানি হাতিবান্ধা শহরে ঢুকে পডবে। ইতোমধ্যে চর এলাকা গুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে গেছে। চর এলাকা গুলো থেকে খবর আসছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এখন পানি বন্দি পরিবার গুলোর মাঝে কোন খাবার বিতরণ করতে দেখা যায়নি। সুত্র জানায়, তিস্তা পানি আরও বৃদ্ধি পেলে তিস্তা ব্যারেজ রক্ষার্থে পাউবো ‘ফ্লাড বাইপাস’ কেটে দিতে পারে। এ বাধঁ কেটে দিলে গোটা লালমনিরহাট জেলার লক্ষাধিক পরিবার পানি বৃন্দি হয়ে পড়বে। এতে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হবে।
হাতিবান্ধা উপজেলার চর ধুবনীর মমতাজ আলী, কিসমত লোহালীর আবু বক্কর, পাটিকাপাড়ার রফিকুলসহ অনেক পানি বৃন্দি পরিবার অভিযোগ করেন, আমরা ২ দিন ধরে পানি বৃন্দি অবস্থায় আছি। এখন পর্যন্ত আমাদের মাঝে কোন ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। কেউ আমাদের খোঁজ পর্যন্ত করেনি। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, ভারতের গজল ডোবা ব্যারেজের গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পানি বৃন্দি পরিবার গুলোর খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে জানান।