01-07-15-Bhola_Fisher Man-1

দৈনিকবার্তা-ভোলা, ১ জুলাই: ভরা মৌসুমে মনপুরার মেঘনায় চলছে ইলিশের আকাল। মৌসুমের শুরুতেই মাছধরা নৌকা বাইচ করে আশানুরূপ মাছের দেখা মিলছেনা জেলেদের জালে। আড়ৎদারদের কাছ থেকে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা দাদন নিয়ে বেকায়দায় আছেন নৌকার মাঝীরা। এমতাবস্থায় খেয়ে না খেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন জেলেরা। এরই মধ্যে পেটের দায়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে জেলেরা দলেদলে ছুটছে চট্টগ্রাম ও স্বন্দীপে। ইতিমধ্যেই ১১০ জেলে ট্রলারযোগে মনপুরা ত্যাগ করেছে। আরো ৪ শতাধিক জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে রওয়ানা দেবেন বলে জানা গেছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জনতাবাজার ঘাট থেকে একটি ট্রলার বোঝাই করে ১১০ জেলে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। এতে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার নুরুদ্দিন সারেং এর অধীনে ২২ জন, জহির সারেং এর অধীনে ২০ জন, শরীফ সারেং এর অধীনে ২২ জন, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার সেলিম সারেং এর অধীনে ২৫ জন ও ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের কলাতলি চরের ছালাউদ্দিন সারেং এর অধীনে ২১ জন জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার জন্য মনপুরা ত্যাগ করেছে।

এছাড়াও অন্তত ৪ শতাধিক জেলে সাগরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে মনপুরা ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে। সূত্র আরো জানায়, এখনো অন্তত ১৫ সারেং এর নের্তৃত্বে চট্টগ্রাম ও স্বন্দীপের উদ্দেশ্যে জেলেদের নিয়ে পাড়ি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরা হলেন মনপুরা উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার শাহাবুদ্দিন সারেং, দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার সিরাজ সারেং, শাজাহান সারেং, নজির সারেং, কালাম সারেং, হারুন সারেং ও মজিদ সারেং।এব্যাপারে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার নুরুদ্দিন সারেং মুঠোফোনে জানান, মনপুরার মেঘনায় মাছ ধরলে কামাই কম হয়। আর সাগরে সবসময় মাছ বেশী পাওয়া যায়। তাছাড়া ভরা মৌসুমে ইলিশের দেখা না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছি। তাই নিরূপায় হয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছি সাগরে মাছ ধরতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনপুরার মেঘনায় কখনো মাছ থাকে আবার কখনো থাকেনা। আর সাগরে পুরো মৌসুমেই মাছ পাওয়া যায়। তাছাড়া এখানে এক মৌসুম (৪ মাস) মাছ ধরলে একজন মাঝী পায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। অন্যদিকে সাগরে বড় ফিসিং বোটে মাছ ধরলে একজন সারেং এক মৌসুমে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারে। আর মনপুরায় মাছ ধরলে একজন জেলেকে খেয়ে না খেয়ে বা উপোস করে মাছ ধরতে হয়। এখানে সাধারণ জেলেরা মৌসুম শেষে ২০/২৫ হাজার টাকা পায় আর সাগরে মাছ ধরলে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা পায়। তাইতো জেলেরা বেশী উপার্জনের জন্য চট্টগ্রাম ও স্বন্দীপের পথে ছুটছে।