6f452e8e03f3a84cbb8c6a49412b8958

3দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১ জুলাই: দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৯৪ বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নিয়ে স্ব-মহিমায় এগিয়ে চলছে শতকের পথে, আর এই জ্ঞানপ্রদীপের ৯৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে রঙিন সাজে সজ্জিত হয়েছে ক্যাম্পাস। বুধবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপযাপন হচ্ছে।সকাল সোয়া ১০টায় প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মল চত্বরে জাতীয় পতাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন এবং উদ্বোধনী সংগীতের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। দিনব্যাপী কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ।

এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন হল থেকে শোভাযাত্রাসহ প্রশাসকি ভবন সংলগ্ন মল চত্বরে জমায়েত হন।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে¡ ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, কর্মকর্তা, কর্মচারী, অভ্যাগত অতিথি, ছাত্র-ছাত্রী, বিএনসিসি,রোভারস্ ও রেঞ্জারস ইউনিটের সদস্যরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গিয়ে শেষ হয়।প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গওহর রিজভী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তুএকবিংশ শতাব্দীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের পাশাপাশি গ্লোবাল সোসাইটিতেও নিজেদের অবস্থান করে নিতে হবে।তিনি বলেন,এই গ্লোবাল ােসাইটিতে জায়গা করে নিতে হলে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গ্লোবাল সিটিজেন প্রতিযোগিতার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। এমনভাবে তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যাতে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে তারা প্রতিযোগিতা করতে পারে, সে মনোবল থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় অতীত ইতিহাস রয়েছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, কবিতা, গান-বাজনা, রাজনীতিতে সবক্ষেত্রেই অসাধারণ অবদান ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। মুক্তিযুদ্ধও তাদের অবদান অসাধারণ ছিল।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষাই আলো, সেই আলোতেই-শুধু দেশ নয় বিশ্বে সব অন্ধকার আলোকিত হবে। আমরা এই শিক্ষার মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই উন্নয়ন টেকসই হোক। আর উন্নয়ন টেকসই হওয়ার জন্য প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষা।

দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হলসমূহ দিনব্যাপী কর্মসূচি আয়োজন করেছে।এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘উচ্চশিক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৯৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনব্যাপি কর্মসূচী রয়েছে।

ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে মনোরম সাজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন ও হল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের করিডোর বেলুন, ফেস্টুন আর আল্পনার ছোঁয়ায় বর্ণিল রূপ ধারণ করেছে।

নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, গবেষণা ও আবিষ্কার বিষয়ক প্রদর্শনী, বিতর্ক, চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি।সকাল ১১টায় টিএসসি মিলনায়তনের আয়োজন করা আলোচনা সভা।

সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ‘দুর্লভ পান্ডুলিপি প্রদর্শনী’ চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে।সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বায়োমেডিকেল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের উদ্ভাবিত চিকিৎসা প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি বা গবেষণার প্রদর্শনী শুরু হয়েছে কার্জন হল ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব বারান্দায়।সকাল ১১টা থেকে চারুকলা অনুষদে শুরু হয়েছে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চারুকলা অনুষদ গ্যালারীতে চলে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিল্পকর্মের প্রদর্শনী।বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় নাটমন্ডল মিলনায়তনে স্বদেশী নকশা নাটকে আয়োজন করে থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিস বিভাগ।