দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১ জুলাই: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে নাশকতার চার মামলায় জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।বুধবার বিচারপতি মো. রেজা-উল হক ও মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ জামিন মঞ্জুর দেন।রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবী থানায় এ চার মামলা দায়ের করা হয়েছিল।মহাজোট সরকারের আমলে রিজভীর বিরুদ্ধে মোট ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়।
এর মধ্যে ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি।আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান।চারটি মামলার মধ্যে তিনটি মিরপুর থানার, অন্যটি পল্লবীর। বিশেষ ক্ষমতা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এসব মামলা করা হয়েছিল।এর মধ্যে পল্লবী থানার মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও হয়েছে।
বিচারিক আদালতে জামিন না পেয়ে এসব মামলায় জামিন চাইতে হাই কোর্টে আসেন বিএনপি নেতা রিজভী।তবে তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা থাকায় এখনই তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন।তিনি বলেন, চলতি বছর রিজভীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১৭টি মামলার মধ্যে পাঁচটিতে তিনি আগেই জামিন পেয়েছেন।আজ আরও চারটি মামলায় জামিন পেলেন। তার বিরুদ্ধে আরও আটটি মামলা রয়েছে।আদালতে রিজভীর পক্ষে জয়নুল আবেদীন ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান শুনানি করেন।বিএনপির লাগাতার অবরোধের মধ্যে গত ৩১ জানুয়ারি ভোররাতে রিজভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তার আগে তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে বিবৃতি পাঠিয়ে হরতাল-অবরোধের বার্তা দিয়ে আসছিলেন।এদিকে, পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গাড়ি ভাংচুর ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও বিরোধী দলীয় সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুকসহ ১৪৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে আগামী ৫ আগস্ট পুননির্ধারণ করেছেন ঢাকার দ্রুত বিচার আদালত।
বুধবার মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। সাক্ষী না আসায় তা পিছিয়ে আগামী ৫ আগস্ট পুননির্ধারণ করেন আদালতের বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট তারেক মাইনুল ইসলাম ভূঁইয়া।জয়নুল আবদীন ফারুক, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধানসহ ৪৫ জন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রুহুল কবির রিজভী কারাগারে অসুস্থ থাকায় তাকে হাজির করা হয়নি। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান ও মো. শাহজাহান, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা প্রমুখ।
গত বছরের ২৫ আগস্ট দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা ওই মামলায় ১৪৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত। এ মামলায় ১৪৮ জন আসামি ছিলেন। ওমর ফারুক নামক একজন আসামি মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।২০১৩ সালের ১১ মার্চ বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ও সহিংসতার মাধ্যমে জনমনে ত্রাস ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিরোধী দলীয় তৎকালীন চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুকসহ বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
ওইদিন বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ১৫৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই বছরের ২৪ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই মাহবুবুল হাসান বিএনপি ও তখনকার ১৮ দলীয় জোটের ১৪৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ।