দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০ জুন: প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর ২১৯ জন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের ৫৮ ঘণ্টার আলোচনার পর পাস হলো ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ২ লাখ ৯৫ হাজার ১’শ কোটি টাকার নতুন বাজেট।এর মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বাংলাদেশকে যে সমৃদ্ধির সোপানে নিয়ে যেতে চাইছেন তা একধাপ এগিয়ে গেলো।সেই সঙ্গে দেশের সর্ববৃহৎ এই বাজেটটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথ রচনা হবে বলেও অভিমত অর্থমন্ত্রীর।অর্থমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, এবার বাজেটের ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশই বাস্তিবায়িত হবে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন বাজেট উচ্চাভিলাসী। তবে এটি বাস্তবায়ন যোগ্য।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার সংসদকে জানান এ পর্যন্ত ৫৬টি মঞ্জুরি দাবি পাওয়া গেছে। এছাড়া ১০ জন সংসদ সদস্যের ৫২৫টি ছাটাই প্রস্তাব পাওয়া গেছে।এ ১০ জন মধ্যে ৭ জন বিরোধীদল জাতীয় পাটির ও ৩ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। এরমধ্যে ৭টি মন্ত্রণালয়ের উপর আলোচনার জন্য সম্মতি জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা। বাকি মন্ত্রণালয়গুলো সরাসরি ভোটে দেওয়া হয়।স্পিকার প্রস্তাবিত বাজেট কণ্ঠ ভোটে দেন। পরে সরকারি দল ও বিরোধি দলের পূর্ণ সমর্থনে পাস হয় ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট। এর মাধ্যমে বিদায় নিলো ২০১৪-১৫ অর্থবছর। আর শুরু হলো নতুন অর্থবছর। ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছরের এ বাজেট কার্যকর শুরু হবে।
বাজেটের আকার: ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১’শ কোটি টাকা। যা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ছিলো ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে বাজেটের আকার বেড়েছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা।বিদায়ী ২০১৪-১৫ অর্থবছরের মতো নতুন অর্থবছরের বাজেটেও সামাজিক অবকাঠামো ও ভৌত অবকাঠামো খাতেকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সামাজিক অবকাঠামোতে নতুন অর্থবছরে জন্য ৬৯ কোটি ১৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।বিদায়ী অর্থবছরে এ খাতের বরাদ্দ দেওয়া হয়ে ছিলো ৬৩ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। ভৌত অবকাঠামোতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৯০ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে এ বরাদ্দ ছিলো ৭৫ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা। সাধারণ সেবা খাতের বরাদ্দ ৮২ হাজর ৫৬০ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিলো ৫৯ হাজার ৪৯ কোটি টাকা।
মানব সম্পদ উন্নয়নে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬০ হাজার ৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১৭ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১৪ হাজার ৫০২ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ১২ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা ও অন্যান্য ১৫ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা।বিদায়ী অর্থবছরে মানব সম্পদ উন্নয়নে বরাদ্দ ছিলো ৫৪ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১৫ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা,প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ১১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা ও অন্যান্য ১৩ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা।
এডিপি: নতুন অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৯৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা বিদায়ী অর্থবছরে ছিলো ৮০ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে এডিপি বেড়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা।মানব সম্পদ উন্নয়নে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২১ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা। যা বিদায়ী অর্থবছরে ছিলো ১৯ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৪ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিলো ২০ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা।জ্বালানি অবকাঠামো খাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৮ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিলো ১১ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা। যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে নতুন অর্থবছরের জন্য ২১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।বিদায়ী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিলো ১৮ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। অন্যান্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে এ বরাদ্দ ছিলো ৯ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা।
ঘাটতি: অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের বাইরে নতুন অর্থবছরের বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে বাজেটে ঘাটতি ধরা হয় ৬৭ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরের বাজেটে আকারের সঙ্গে বেড়েছে ঘাটতির পরিমাণ। উন্নত প্রযুক্তি, দক্ষ জনশক্তি, উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রক্রিয়াকে আরো একধাপ এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে আজ জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট পাস করা হয়েছে। সম্পদ আহরণ: বাজেটে মোট অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা।
বিদায়ী অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে সম্পদ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা বেশি ধরা হয়েছে।ঘাটতি পূরণ: বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে নতুন অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে বাজেটে ঘাটতি পূরণে বৈদেশকি ঋণের এ লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৬ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা।নতুন অর্থবছরে বৈদেশিক অনুদানের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের জন্য এ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬ হাজার ২০৬ কোটি টাকা।
ঘাটতি অর্থ ব্যাংকিং খাত থেকে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে যা ছিলো ৩১ হাজার ২২১ কোটি টাকা। ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে নতুন অর্থবছরের ঘাটতি পূরণে ১৮ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের প্রস্তাব করা হয়েছ। বিদায়ী অর্থবছরে ব্যাংক বহির্ভূত খাতে থেকে অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা।ব্যাংক বহির্ভূত খাতের মধ্যে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে নতুন অর্থবছরের ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ হাজার ৫৬ কোটি টাকা।ঘাটতি অর্থ অন্যান্য খাত থেকে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ হাজার কোটি টাকা।
গত ৪ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ২ লাখ ৯৫ হাজার ১শ’ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।নির্দিষ্টকরণ বিল-২০১৫ সংসদে গৃহীত হওয়ার মধ্য দিয়ে এই বাজেট পাস করা হয়।বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রীগণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৬টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এই মঞ্জুরি দাবি প্রস্তাবগুলো সংসদে কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয়।
প্রধান বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সদস্যগণ মঞ্জুরি দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে মোট ৫২৫টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর মধ্যে ৭টি দাবিতে আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সদস্যরা আলোচনা করেন। পরে কণ্ঠভোটে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো নাকচ হয়ে যায়।এর পর সংসদ সদস্যগণ টেবিল চাপড়িয়ে নির্দিষ্টকরণ বিল-২০১৫ পাসের মাধ্যমে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন করেন।গত ৮ জুন থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও অন্যান্য মন্ত্রীসহ সরকারি ও বিরোধীদলের ২১৯ জন সদস্য ১৮ কার্যদিবসে মোট ৫৮ ঘণ্টা মূল বাজেট ও সম্পুরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে সরকারি দলের ১৫৩, ওয়ার্কার্স পার্টির ৫ জন, জাসদের ৫ জন, তরিকত ফেডারেশনের ১ জন, জাতীয় পার্টির ৩০ জন, জেপির ১ জন, বিএনএফের ১ জন ও স্বতন্ত্র ১০ জন রয়েছে।
এর মধ্যে ২০১৪-১৫’ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর ২ কার্যদিবসে ১৩ জন সদস্য ৪ ঘন্টা ১৫ মিনিট এবং মূল বাজেটের ওপর ১৬ কার্যদিবসে ২০৬ জন সরকার ও বিরোধীদলের সদস্য মোট ৫৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আলোচনা করেন।২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠনের পর এটি দ্বিতীয় বাজেট।বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ১২ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া, এনবিআর বহির্ভূত সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির ০ দশমিক ৩ শতাংশ। কর বহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৫ শতাংশ, বৈদেশিক অনুদান ৫ হাজর ৮শ’ কোটি টাকা।
বাজেটে অনুন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ১৯১ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৯৭ হাজার কোটি টাকা এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ৩ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা অথাৎ এখাতে মোট বরাদ্দ ১ লাখ ৯৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা জিডিপির ১১ দশমিক ৬ শতাংশ।বাজেটে সার্বিক বাজেট ঘাটতি ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে ৩০ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে ৫৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা সং¯’ানের ব্যব¯’া রাখা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যব¯’া থেকে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি এবং সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। অবশ্য অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১৬-২০) জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করে ২০১৯-২০ অর্থবছর নাগাদ ৮ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বাজেটে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংসদে অর্থবিল ২০১৫ পাস করা হয়েছে। ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়। মহিলা ও ৬৫ বছর উর্ধ্ব প্রবীণদের ক্ষেত্রে তা ৩ লাখ টাকা এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া গেজেটভূক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার ক্ষেত্রে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু কর হ্রাস করা হয় ।বাজেটে সামাজিক অবকাঠামোগত খাতে মোট বরাদ্দের ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যার মধ্যে মানব সম্পদ খাত- শিক্ষা, স্বা¯’্যসহ সংশ্লিষ্ট খাতে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ, ভৌত অবকাঠামো খতে ৩০ দশমিক ৬ শতাংশ- যার মধ্যে রয়েছে সার্বিক কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ, বৃহত্তর যোগাযোগ খাতে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে।এছাড়া সাধারণ সেবা খাতে ২৮ শতাংশ, সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি), বিভিন্ন শিল্পে আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি, রাষ্ট্রায়ত্ত, বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য ব্যয় বাবদ ২ দশমিক ২ শতাংশ , সুদ পরিশোধ বাবদ ১১ দশমিক ৯ শতাংশ, নিট ঋণদান ও অন্যান্য ব্যয় খাতে অবশিষ্ট ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে।
বাজেটে ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান- প্রযুক্তি, কৃষি, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে সর্বো”চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এরপরই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অবস্থান।
এদিকে, উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন খাতে সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের লক্ষ্যে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৩০৮ কোটি ১৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয় করার কর্তৃত্ব দিয়ে আজ সংসদে নির্দিষ্টকরণ বিল-২০১৫ সর্বসম্মতিক্রমে পাস করা হয়েছে।২০১৬ সালের ৩০ জুন সমাপ্য অর্থবছরের জন্য সরকারের অনুমিত ব্যয় নির্বাহের লক্ষ্যে সংযুক্ত তহবিলথেকে অর্থ প্রদান ও নির্দিষ্টকরণের কর্তৃত্বদানের জন্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদে এই নির্দিষ্টকরণ বিল-২০১৫ পাসের প্রস্তাব করেন।মন্ত্রীগণ সংশ্লি¬ষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৬টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এই মঞ্জুরি দাবি প্রস্তাবগুলো সংসদে কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয়। বিরোধীদলের পক্ষ থেকে এসব দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে মোট ৫২৫টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনা হয়।এর মধ্যে ৭টি দাবির ওপর বিরোধীদল আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর সংশ্লিষ্ট সদস্যগণ বক্তব্য দেন। এই ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে সংসদ সদস্যদের কন্ঠ ভোটে নির্দিষ্টকরণ বিল ২০১৫ পাস হয়।